শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গতমাসে ড. ইউনূসকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এখন জামিনে আছেন তিনি। জার্মানির সাপ্তাহিক ডি সাইট পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাকে জেল দেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ড. ইউনূস অভিযোগ করেন, গ্রামীণ ব্যাংক তাদের আটটি প্রতিষ্ঠান জবরদখল করেছে। এরপর গত শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান এ কে এম সাইফুল মজিদ দাবি করেন, সাতটি প্রতিষ্ঠান আইন মেনেই নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে। ড. ইউনূস মানি লন্ডারিং করেছেন —এমন প্রমাণ হাতে রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। তবে রোববার এক বিবৃতিতে এই অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও মানহানিকর বলে দাবি করে ইউনূস সেন্টার।
সাম্প্রতিক এসব ঘটনার পেছনে কে আছে, এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশে সবাই জানে, এসব কীভাবে ঘটে। কারও নাম নিতে নেই; এটা অনেক খারাপ পরিণতি নিয়ে আসে।’
২০১১ সালে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গ তোলা হলে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাকে সরানোর পর তারা আশা করেছিলেন, আমাকে আর দেখা যাবে না, কেউ আমাকে মনে রাখবে না।’
‘এরপরও ড. ইউনূস সম্ভবত বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিচিত নাগরিক এবং তাকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বক্তৃতা দিতে ডাকা হয়’ সাইট অনলাইন এমন তথ্য উল্লেখ করলে তিনি বলেন, ‘তারা জানতেন না, এটা কীভাবে কী করতে হবে। সে কারণে তারা এখন হাস্যকর আইনি মামলা নিয়ে এসেছেন।’
বিজ্ঞাপন
আগামীতে কী হতে পারে বলে আপনি মনে করেন —এই প্রশ্নের উত্তরে ড. ইউনূস বলেন, ‘অনেক ধরনের সামাজিক ও আইনি শাস্তি। তারা আমাকে জেলে পাঠাতে পারেন। এছাড়া আমার আরও আশঙ্কা, এতদিন ধরে যা তৈরি হয়েছে সব ধ্বংস করা হবে।’
সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে রাশিয়ায় নাভালনির মৃত্যুর প্রসঙ্গ তোলা হলে ড. ইউনূস বলেন, ‘হ্যাঁ, এটা মর্মান্তিক। মানুষ এখন তাদের চোখে এই প্রশ্ন নিয়ে আমার দিকে তাকায়। তাদের আশঙ্কা, আমার সঙ্গে একই বিষয় ঘটতে পারে।’
ড. ইউনূসকে তার অনেক বন্ধু তাদের দেশে থাকতে বলেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাকে নাগরিকত্ব, বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করার সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমি বাংলাদেশ ছাড়তে চাই না। আমি তাদের সবসময় বলি, আমি সারা জীবন বাংলাদেশে কাজ করেছি। তাছাড়া আমি যদি যাই, আমি যাদের সঙ্গে কাজ করি, তাদের কী হবে?’
এমএইচটি

