ঠান্ডায় নাকাল ছিন্নমূল মানুষের পাশে এসএসটিএফ

কিছুদিন ধরে সারাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া শৈত্যপ্রবাহে নাকাল হয়ে পড়েছে মানুষ। এরমধ্যে ছিন্নমূল মানুষের কষ্টটা অন্যদের চেয়ে বেশি। বিশেষ করে রাতে খোলা আকাশের নিচে তীব্র ঠান্ডায় চরমে ভোগান্তি পোহাতে হয় তাদের। এমন অসহায় মানুষদের হাতে শীতের কম্বল তুলে দিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরামের (এসএসটিএফ) সদস্যরা।

রাজধানীর মৎস্যভবন থেকে কাকরাইল মসজিদ পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশের ফুটপাত, পল্টন এলাকার বিভিন্ন অলিগলি সড়কের পাশে, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের আশপাশের এলাকার শীতের কষ্টে থাকা এমন অসহায়দের হাতে কয়েকদিন ধরে কম্বল তুলে দিয়েছে এসএসটিএফ'র সদস্যরা।

কম্বল পেয়ে স্বস্তির কথা জানিয়ে পথশিশু সাজ্জাদ বলেন, 'দিনের বেলা এহানে-ওহানে ঘুইরা বেড়াই। রাইত হলেই চিন্তা হয়। কোনায় থাকব, কোনায় ঘুমাব, তার কোনো ঠিক নেই। শীতে আরও বেশি ঝামেলা অয়। যেখানে মন চায় সেই জায়গায় ঘুমাইতে পারি না। এই বছর ঠাণ্ডা বেশি লাগে। তাই ঝামেলা আরও বেশি। এহন পর্যন্ত কেউ আমারে একটা কম্বল দেয় নাই। এই প্রথম স্যারেরা একটা কম্বল দিল। এহন ভালো ঘুম অইব।'

সাজ্জাতের পাশেই ষাটোর্ধ্ব এক মহিলাকে দেখা যায় প্লাস্টিকের বস্তা বিছিয়ে গায়ে কাপড় পেঁচিয়ে  বসে আছেন। প্রচণ্ড শীত, তার মধ্যে আবার হালকা বাতাস। শীতে থর থর করে কাঁপছিলেন তিনি। এসএসটিএফ’র সদস্যরা তাকেও একটি কম্বল উপহার দেন। কম্বলটি পাওয়া মাত্র দ্রুত গায়ে জড়িয়ে নেন তিনি।

রহিমা বেগম নামে এ বৃদ্ধা বলেন, আমগো নিয়ে কারো কোনো মাথাব্যথা নাই। আগে ধনীরা শীত অইলে কম্বল-টোম্বল নিয়ে আমগো কাছে আইতো। এখন কেউ আহে না। বড়লোকরা মনে করে এখন যারা রাস্তাঘাটে থাকে, তাগো বহু মাইনসে শীতের কাপড়-চোপড় দেয়, এইটা মনে করে এখন আর কেউ আমগো কম্বল দেয় না। সরকার ভাবে দ্যাশে কোনো গরিব মানুষ নাই। তারা বড়লোকগো কথা ভাবে, আমগো কথা কি ভাবে?