নোবেলজয়ী ড. ইউনূস শ্রম আইন লঙ্ঘন করায় দণ্ডিত হয়েছেন। এখানে সরকারের কিছু করার নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে গণভবনে এক বিদেশি সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এই মন্তব্য করেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের সঙ্গে এদিন মতবিনিময় করেন সরকারপ্রধান।
বিজ্ঞাপন
বিদেশি একজন সাংবাদিক বলেন, নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনি পাঁচবার ক্ষমতায় এলেন। এর মাধ্যমে আপনি ইন্দিরা গান্ধী, শ্রীমাভো বন্দরনায়েকে, চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা, বেনজীর ভুট্টো, গোল্ডমেয়ার ও মার্গারেট থ্যাচারকে ছাড়িয়ে গেছেন। আপনার এই বিজয় উদযাপনের অংশ হিসেবে আপনি কি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ক্ষমা করার কথা বিবেচনা করবেন?
জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, দেশ পরিচালনা করার সময় আপনি নারী নাকি পুরুষ এটা নিয়ে ভাবা উচিত নয়। আমি আমার দেশের মানুষের জন্য কাজ করেছি। নারী হিসেবে আমি জনগণকে মাতৃস্নেহের সঙ্গে দেখি। আপনি যে নারী নেত্রীদের নাম নিয়েছেন, তারা মহান ছিলেন। আমি তাদের মতো নই। আমি একজন খুব সাধারণ মানুষ। তবে আমি সবসময় মানুষের প্রতি আমার কর্তব্যের কথা অনুভব করি। আমাকে তাদের সেবা করতে হবে।
ড. ইউনূস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শ্রম আদালত তার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। তিনি তার নিজের কোম্পানির যাদের বঞ্চিত করেছেন, তারাই মামলা করেছেন। তিনি শ্রম আইন লঙ্ঘন করেছেন। এ ব্যাপারে আমার কিছুই করার নেই। তাই তাকে ক্ষমা করার প্রশ্ন আমার কাছে আসা উচিত নয়। তার নিজের কোম্পানির কর্মচারীদের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। আমি শুধু এটুকুই বলতে পারি।
বিজ্ঞাপন
প্রসঙ্গত, গত ১ জানুয়ারি শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় শান্তিতে নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের তিন শীর্ষ কর্মকর্তাকে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেন আদালত।
‘এ বিজয় আমার নয়, জনগণের’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা চতুর্থবারের মতো বিপুল ভোটে বিজয়ী হওয়ায় দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটাকে জনগণের বিজয় আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ‘মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করাই আমার লক্ষ্য। এবারের নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থী মনোনয়ন করার পাশাপাশি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছি। মানুষের স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছেন। এ বিজয় জনগণের বিজয়।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আটবার নির্বাচন করেছি। এবার জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছে। বাংলাদেশের ৮০% মানুষ দরিদ্র ছিল। বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য ছিল দেশের মানুষ উন্নত জীবনের অধিকারী হবে। বাবা যে আদর্শ নিয়ে কাজ করেছেন, আমাকে সেই কাজ সম্পন্ন করতে হবে।’
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘একটি দল নির্বাচন বর্জন করেছে। মিলিটারি ডিক্টেটর থেকে যে দল সৃষ্টি তারা নির্বাচন ভয় পায়, কারণ তাদের জনসমর্থন থাকে না।’
বিদেশি বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের বাংলাদেশে আসার জন্য তিনি নিজের, পরিবার ও দেশের মানুষের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান। বলেন, ‘আপনারা নিজ নিজ দেশে ফিরে যাবেন, আমাদের দেশের কথা বলবেন। আমাদের দেশটা অনেক সুন্দর।’
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি সবসময় চেষ্টা করেছেন নির্বাচন সুষ্ঠু করার। সেভাবেই নির্বাচনের সকল প্রক্রিয়া সংস্কার করেছেন। নির্বাচন কমিশন আইন করা, ইসিকে সাবলম্বী করাসহ যাবতীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন ক্ষমতায় আসার পর।
জেবি