মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

দায়সারা নিষেধাজ্ঞায় এবারও ঠেকানো গেল না আতশবাজি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১ জানুয়ারি ২০২৪, ০২:৩৫ এএম

শেয়ার করুন:

দায়সারা নিষেধাজ্ঞায় এবারও ঠেকানো গেল না আতশবাজি
ছবি: সংগৃহীত

ঘড়ির কাঁটায় তখনো ১২টা বাজেনি। বাকি ছিল আরও কয়েক মিনিট। কিন্তু তার আগেই শুরু হয়ে যায় মুহুর্মুহু শব্দ। প্রকট শব্দে যেন কান ফেটে যাচ্ছিল। কেঁপে উঠছিল আসমান-জমিন। একটার পর একটা ফুটছে বিরতিহীন। রোববার (৩১ ডিসেম্বর) ঢাকায় নতুন বছর ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি শুরুর কয়েক মিনিট আগে ও পরের চিত্র ছিল এমনই। কিন্তু এবার নববর্ষের প্রক্কালে আতশবাজি, পটকা ফুটানো ও ফানুস ওড়ানো নিষিদ্ধ করেছিল ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা কেউই মানেনি। ফলে এই নিষেধাজ্ঞাকে দায়সারা বলছেন অনেকে। 

দেখা গেছে, নির্ধারিত সময়ের আগেই পটকা ও আতশবাজি শুরু হয়। মুহুর্মুহু শব্দে কেঁপে ওঠে ঢাকার আকাশ। প্রায় সোয়া ১টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এই আতশবাজি চলেছে। অনেকে ছাদে উঠতে না পেরে সড়কে নেমে আসেন। সেখানেই চলে এই আতশাবাজির নামে শব্দদূষণ। ঢাকার কমবেশি প্রতিটি ভবনের ছাদে লাল, নীল ও আগুন রঙের আলোর ঝলকানিতে পুরো আকাশ আলোকিত হয়ে পড়ে। একবার পটকা ‍ফুটছিল তো তার সাথেই আতশবাজির ফুলঝুড়ি। নতুন নববর্ষের প্রক্কারে ঢাকার আকাশে এমন চিত্র অনেকে ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছেন। তবে এর বাইরে ভিন্ন চিত্রও রয়েছে। 


বিজ্ঞাপন


কেউ কেউ আতশবাজি আর পটকার শব্দে আক্রান্ত হয়ে চড়ই পাখির মাটিতে পড়ে থাকা ও তার মৃত্যুর সংবাদটিও ফেসবুকে তুলে ধরতে ভোলেননি।  ঢাকার মোহাম্মদপুর, পুরান ঢাকা, যাত্রাবাড়ী, মিরপুর, শাহবাগ, কলাবাগান, পল্টন, মতিঝিল ও উত্তরায় এলাকার বিভিন্ন সড়কে উঠতি যুবকরা আতশবাজি ও পটকা ফুটিয়েছেন। তবে অন্য বারের চেয়ে এবার ফানুস ওড়ানোটা কিছুটা কমেছে। 

আরও পড়ুন


বিজ্ঞাপন


মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা তন্ময় বলছিলেন, মানুষ সচেতন হচ্ছে। এবার আনুপাতিক হারে ফানুস ওড়ানোটা কমেছে। কিন্তু পটকা ও আতশবাজিটা কমেনি। এটা বন্ধ করা গেলে নতুন বছর বরণ মুহূর্তটা স্বস্তির হবে। 

এর আগে রোববার বিকেলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, যারা আতশবাজি করবে, পটকা ফুটাবে এবং ফানুস ওড়াবে এমন কোনো তথ্য দিলে এবং অভিযোগ করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পুলিশ। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে এমন কথা বলা হলেও নববর্ষের রাতে রাজধানীতে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করলেও তারা কোনো বাধা দেননি। ফলে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে উঠতি ছেলেরা অবাধে পটকা ফুটিয়েছে। এই শব্দে যেমন বৃদ্ধ ও শিশু এবং অসুস্থ ব্যক্তিরা কষ্ট পেয়েছে তেমনি পশু পাখিরাও ছিল অস্বস্তিতে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনেক সড়কের গাছে গাছে থাকা পাখিরা ভয়ে উড়াউড়ি শুরু করেছে। অনেক জায়গায় চড়ই পাখি মরে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেছেন অনেকে। নববর্ষের রাতে প্রাণীদের কেমন অবস্থা হয়েছিল তার একটি ভিডিও ক্লিপ পিপলস ফর এনিমেল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রাকিবুল ইসলাম এমিল তার ফেসবুকে শেয়ার করে লিখেছেন, ‘আমাদের রেস্কিউ সেন্টারের কুকুরগুলো ভীষণ ভয় পাচ্ছে। রাস্তারগুলোর জন্য খারাপ লাগছে, কিন্তু কি-ই বা করার আছে আমাদের। আমাদের দেশের মানুষ খেতে পায় না, তাই পশুপাখি নিয়ে কাজ করা যাবে না। কিন্তু লাখ লাখ টাকার আতশবাজি আগুন ধরিয়েই পুড়িয়ে ফেলা যাবে।

এমআইকে/এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর