কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ঢাকা থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেশন অভিমুখে ছেড়ে গেছে দ্রুতযান এক্সপ্রেস।
৪৫ মিনিট বিলম্বে বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) রাত ৮টা ৪৫ মিনিটের দিকে কমলাপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে যায় ট্রেনটি। স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার সময় দ্রুতযান এক্সপ্রেস ছিল কানায় কানায় পূর্ণ।
বিজ্ঞাপন
এর আগে ট্রেনে উঠতেও বেশ বেগ পেতে হয়েছে যাত্রীদের। সেই সঙ্গে ট্রেন চলে যাওয়ার পরেও অভিযোগ আসে টিকিট কেটেও ট্রেনে উঠতে পারেনি অসংখ্য যাত্রী। কারও কারও সঙ্গে যাত্রী ট্রেনে উঠতে পারলেও ছাড়া পড়েছেন অপরজন। এ নিয়ে স্টেশনজুড়েই চরম বিশৃঙ্খলা দেখা যায়।
ঢাকায় রড মিস্ত্রির কাজ করেন ওয়াহেদ মিয়া। দ্রুতযান এক্সপ্রেসে করে ঢাকা থেকে পার্বতীপুর যাওয়ার কথা ছিল তার। সে জন্য নিজেরসহ আরও নয়জনের একসঙ্গে টিকিট কেটেছিলেন তিনি। সবমিলিয়ে দ্রুতযান এক্সপ্রেসে ১০টি টিকিট কাটা ছিল তার। একসঙ্গে যাওয়ার কথা থাকলেও আটজন জন উঠতে পেরেছেন ট্রেনে। তবে ছাড়া পড়েছেন ওয়াহেদ মিয়াসহ আরেকজন।
ওয়াহেদ মিয়া ঢাকা মেইলকে বলেন, ১০ জন একইসঙ্গে যাওয়ার কথা থাকলেও ভিড়ের কারণে আমি উঠতে পারিনি। যেই আটজন ট্রেনে উঠেছে তাদের টিকিটও আমার কাছে। এখন দিশেহারা হয়ে ভাবছি কি করবো।
বিজ্ঞাপন
এদিকে, গার্মেন্টস কর্মী রোকেয়াও টিকিট কেটে ট্রেনে উঠতে পারেনি। ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, এত হুড়োহুড়িতে পুরুষেরা উঠতে পারছে না, আমি কীভাবে পারবো? তাই দ্রুতযান এক্সপ্রেসে টিকিট থাকার পরেও তাকে পরবর্তী ট্রেন কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসে যেতে হয়।
অন্যদিকে, টিকিট থাকার পরও যারা ট্রেনে উঠতে পারেনি তাদের বিষয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, দ্রুতযান এক্সপ্রেসের পরও ওই লাইনে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস, লালমনিরহাট এক্সপ্রেস, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস রয়েছে। যাদের টিকেট আছে কিন্তু উঠতে পারেনি, তারা পরবর্তীতে এই ট্রেনগুলো যেগুলো উত্তরাঞ্চলের দিকে যাবে, সেগুলোতে যেতে পারবে। এ সময় অধিক ভিড়ের কারণে যারা ট্রেনে উঠতে পারেনি, তারা কিছুটা ছাড় পাবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
![Train](https://cdx.dhakamail.com/media/images/2022April/train-3-20220428230031.jpg)
এ দিন কমলাপুরে প্রবেশের আগেই অর্ধেকের বেশি সিটে মানুষ ভরা থাকতে দেখা যায়। তাই অনেকেই ধারণা করছেন- ঢাকা বিমানবন্দর ও জয়দেবপুর স্টেশন থেকে সে সব যাত্রী অগ্রিম উঠে পড়েছিলেন ট্রেনে।
এদিকে, কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছালে হুড়োহুড়িতে অনেক যাত্রী উঠতে পারেনি। পরে দরজা দিয়ে উঠতে না পারায় অনেককেই জানালা দিয়ে ট্রেনে উঠতে দেখা যায়। আর যেসব বগির দরজা বন্ধ ছিল সেগুলোর সিঁড়িতেও ঝুলে যাত্রা করতেও দেখা গেছে অনেককেই। এ দিন জীবনের পরোয়া না করে অনেকেই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ট্রেনে উঠতেও দেখা যায়।
অন্যদিকে ভিড়ের মধ্যে ট্রেনের ছাদে অনেকেই উঠতে চেষ্টা করলে তাদের ছাদ থেকে নামিয়ে দেন রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) সদস্যরা। এছাড়া ইঞ্জিনে করেও অনেকেই যেতে চাইলেও প্রবল বাধার মুখে পরে তাদেরও নামিয়ে দেওয়া হয়।
ট্রেনের টিকিট থাকার পরও যারা উঠতে পারেনি তাদের বিষয়ে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডেন্ট আব্দুস শহীদ বলেন, ‘সেল্ফ সার্ভিস।’ আমাদের কাজ প্লাটফর্ম সুরক্ষা দেওয়া। কে উঠলো আর কে উঠতে পারলো না, এগুলো আমাদের দেখার বিষয় না।
ছাদ ও ইঞ্জিনে যেতে চাইলে বাধা দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রেলমন্ত্রীর স্ট্রিক্ট নির্দেশ আছে। এবার ঈদে কাউকে ট্রেনের ছাদে বা ইঞ্জিনে চলাচল করতে দেওয়া হবে না।
রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর এই কর্মকর্তা বলেন, অনেক মানুষ ট্রেনের ভেতর উঠতে না পেরে ছাদে উঠে। তবে, আরএনবি ও স্বেচ্ছাসেবকদের দারা সবাইকে নিচে নামিয়ে দেওয়া হয়।
এএম/আইএইচ