সাংবাদিকদের ওপর হামলার অভিযোগে কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের নৌকার প্রার্থী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, তার এপিএস ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) কুমিল্লা-৬ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান (বিচারক, যুগ্ম জেলা জজ), ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল সিরাজউদ্দিন ইকবাল এই সুপারিশ করেন।
বিজ্ঞাপন
এমপি বাহারের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন সচিবকে দেওয়া দুটি অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদনে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সুপারিশের কথা জানানো হয়েছে।
কুমিল্লার আলোচিত এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের একটি তার উপস্থিতিতে স্থানীয় সাংবাদিকদের ওপর হামলা। অন্য একটি অভিযোগ কর্মী সমর্থকদের অন্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেওয়া।
নির্বাচন কমিশনে পাঠানো তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লখ করা হয়, দুটি অভিযোগই তদন্ত করে প্রমাণ পেয়েছে কমিটি।
সাংবাদিকের ওপর হামলার বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, কুমিল্লা-৬ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের উপস্থিতিতে গত ২০ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারণাকালে নগরীর শ্রী বীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামের গেটে তার নির্দেশে নেতাকর্মীরা পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে একাত্তর টেলিভিশনের রিপোর্টার কাজী এনামুল হক ফারুক ও ক্যামেরাপারসন সাইদুর রহমান সোহাগের ওপর হামলা হয়। তাদের লাইভ ডিভাইস ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। বাহাউদ্দিন বাহার তাদের গালাগালও করেন।
বিজ্ঞাপন
চিঠিতে বলা হয়, এই অভিযোগের বিষয়ে ভুক্তভোগীর বক্তব্য অন্যদের সাক্ষ্য এবং গণমাধ্যমের সংবাদ, অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনায় অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। নৌকা মার্কার প্রার্থী আ.ক.ম. বাহাউদ্দিন বাহারের উপস্থিতিতে ও প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় না সংঘটিত হয়েছে কমিটির নিকট প্রতীয়মান হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ওই ঘটনার মাধ্যমে বাহাউদ্দিন বাহার, তার এপিএস ও ঘটনার সঙ্গে জড়িত নেতাকর্মীরা নির্বাচনী প্রচারণাকালে মিডিয়া প্রতিনিধিদের বাধা প্রদান করেছেন, তীর্যক মন্তব্য ও উচ্ছৃঙখল আচরণ করেছেন। যার মাধ্যমে তারা আরপিওর ১১ (ক) বিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন করেছেন। তাই তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
অন্য অভিযোগের বিষয়ে বলা হয়েছে, গত ১৮ ডিসেম্বর এক উঠান বৈঠকে দেওয়া বক্তব্যে বাহাউদ্দিন বাহার নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, 'বিএনপি-জামায়াতের কর্মীকে অন্য কোনো প্রার্থীর পক্ষে পাওয়া গেলে হাত-ঠ্যাং ভেঙে দেবেন। আমি আপনাদের সাথে আছি।' এমন বক্তব্যকে উস্কানিমূলক আখ্যা দিয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা তদন্ত কমিটির কাছে তথ্য উপাত্ত পাঠালে পরবর্তীতে অনুসন্ধান করে এমন বক্তব্যের সত্যতা পাওয়া যায়।
সংসদ সদস্য প্রার্থী এটাকে সচেতনতামূলক বক্তব্য বলে দাবি করলেও অনুসন্ধান কমিটি মনে করে, এই ধরণের নির্দেশনা নির্বাচনী আইনের পরিপন্থী এবং নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন। যে কারণে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
বিইউ/এমআর