শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৫, ঢাকা

সাড়ে নয় মাসের ব্যবধানে ১২ বার কাঁপল দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৩৩ এএম

শেয়ার করুন:

সাড়ে নয় মাসের ব্যবধানে ১২ বার কাঁপল দেশ

চলতি বছর এখন পর্যন্ত ১২টি হালকা ও মাঝারি ধরনের ভূমিকম্পে কেঁপেছে দেশ। এসব ভূমিকম্প হয়েছে সাড়ে নয় মাসের ব্যবধানে। ছোট ও মাঝারি মাত্রার এসব ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল দেশের ভেতর ও সীমান্ত এলাকাসহ আশপাশের দেশগুলোতে। ভূমিকম্পে জানমালের তেমন ক্ষতি না হলেও বড় ধরনের ভূমিকম্পের শঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। বারবার ভূমিকম্প হওয়ার অর্থ ফল্ট লাইনগুলো সক্রিয় থাকায় এমন শঙ্কা করছেন তারা।

চলতি বছরের প্রথম ভূকম্পন অনুভূত হয় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি। সেদিন ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মেঘালয়ের পাশাপাশি কেঁপে ওঠে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট জেলা। ৩ দশমিক ৯ মাত্রার এ ভূমিকম্পে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন

ফের ভূমিকম্পে কাঁপল দেশ

এর নয় দিন পর ২৫ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে মাঝারি মাত্রার জোড়া ভূমিকম্প আঘাত হানে। দেশটির আয়াবতি ও রাখাইন রাজ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশের কক্সবাজারেও ভূকম্পন অনুভূত হয়। ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার আগারগাঁও থেকে ৩৭৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১।

গত ৩০ এপ্রিল ৪ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে কাঁপে চট্টগ্রাম।

Dhaka-3গত ৫ মে ৪ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয় ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায়। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার সিটি সেন্টার থেকে ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে দোহারে।


বিজ্ঞাপন


যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস এর হিসেব অনুযায়ী, এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪.৩। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার কাছে বিক্রমপুরের দোহার থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে। এটিরও গভীরতা ছিল মাত্র ১০ কিলোমিটার।

আরও পড়ুন

ঢাকায় সাত মাত্রার ভূমিকম্পে তিন লাখ প্রাণহানির শঙ্কা!

এক মাস পর গত ৫ জুন ৩ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে বঙ্গোপসাগরে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল মিয়ানমারের কাছে বঙ্গোপসাগরের তলদেশে।

১৬ জুন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভূকম্পন অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেটের গোলাপগঞ্জ, মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৫।

গত ১৪ আগস্ট সিলেটে ফের ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। একইসঙ্গে ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায়ও এটি অনুভূত হয়। উৎপত্তিস্থল ছিল আসামের মেঘালয়, গভীরতা ছিল ৩৫ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ২২৮ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে।

আরও পড়ুন

ভূমিকম্প হলে যে দোয়া পড়বেন

২৯ আগস্ট সিলেট মহানগরীর আশপাশে ফের মৃদু কম্পন অনুভূত হয়। এর মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৫। উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের মেঘালয় রাজ্যের জৈন্তাপুরে।

গত ৯ সেপ্টেম্বর সিলেট ও এর আশপাশের এলাকায় ৪.৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের আসামে।

Dhaka-2গত ১৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে টাঙ্গাইলে ৪.২ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৫৯ কিলোমিটার দূরে টাঙ্গাইল সদরে। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫ কিলোমিটার গভীরে ছিল এর অবস্থান।

২ অক্টোবর সন্ধ্যা ছয়টা ৪৫ মিনিটে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর ছিল মাত্রা ৫.২। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের মেঘালয়ের রেসুবেলপাড়া নামক স্থান থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে।

সর্বশেষ আজ শনিবার (২ নভেম্বর) ৫ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে দেশ।

আরও পড়ুন

ঢাকার আশপাশে বারবার ভূমিকম্প, কোথায় ঝুঁকি কতটা, ইতিহাস কী বলছে?

গত ৫ মে ভূমিকম্পের দিন ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, বার্মিজ প্লেট ও ইন্ডিয়ান প্লেটের পরস্পরমুখী গতির কারণেই এ ধরণের ভূমিকম্প হচ্ছে।

তারা জানান, এই দুটি প্লেটের সংযোগস্থলে প্রচুর পরিমাণে শক্তি জমে রয়েছে যেগুলো বের হয়ে আসার পথ খুঁজছে। আর সে কারণেই ঘন ঘন এমন ভূমিকম্প অনুভূত হচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে ভূমিকম্পজনিত দুর্যোগ থেকে জীবন ও সম্পদ রক্ষায় সরকারি–বেসরকারি পর্যায়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর জোর দেন বিশেষজ্ঞারা। যেমন ভূমিকম্প–সহনশীল ভবনসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ, জনসচেতনতা বৃদ্ধি, ভূমিকম্প মোকাবিলায় পূর্বপ্রস্তুতি এবং ভূমিকম্প-পরবর্তী উদ্ধার, ত্রাণ ও পুনর্গঠন কর্মসূচি হাতে নেওয়া।

এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর