চতুর্থ শিল্পবিল্পব উপযোগী জনশক্তি গড়তে তুলতে সরকার বদ্ধপরিকর বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (২৬ নভেম্বর) সকাল সোয়া ১০টার পর গণভবনে ২০২৩ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
বিজ্ঞাপন
শেখ হাসিনা বলেন, নানা বাধার পরও আওয়ামী লীগের আমলে শিক্ষার হার বেড়েছে। যা আওয়ামী লীগ সরকারের বড় অর্জন।
সরকারপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগের সময়ে রাষ্ট্রপরিচালনা সহজ ছিল না। ২০১৩ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে বিএনপি-জামায়াত অগ্নিসন্ত্রাস করে। সে সময় তারা ৫১৪টি স্কুল পুড়িয়েছে। ঘাত প্রতিঘাত কাটিয়ে ওঠতেই ১৮ সালে আবারও অস্বস্তি শুরু করে বিএনপি-জামায়াত। কিন্তু সফল হতে পারেনি। এরপর শুরু করে ১৯ সালের কোভিড মহামারি। তারপরও যেন শিক্ষার গতি অব্যাহত থাকে সেজন্য অনলাইনে শিক্ষাদান করা হয়।
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় যারা ভালো করেছে তাদের অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি যারা ফেল করেছে তাদের গালমন্দ না করে সহানুভূতি দেখানোর অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী।
বিজ্ঞাপন
যারা পাস করেছে তাদের অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যারা হয়তো ভালো রেজাল্ট করতে পারেনি, তাদেরও হতাশ হওয়ার কিছু নেই। অভিভাবকদের বলব, যারা উত্তীর্ণ হতে পারেনি তাদের সহানুভূতি দেখাতে হবে। সে যে পারে নাই, সেটার কারণ বের করে তাকে আরও মনোযোগী হতে উৎসাহী করতে হবে। তাকে ধমক বা গালমন্দ করা ঠিক হবে না। এগুলো কোমলমতি ছেলেমেয়েগুলো নিতে পারে না। পরে তারা দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে। সমস্যা চিহ্নিত করে সেটি সমাধানে সহযোগিতা করলে ভবিষ্যতে তারা ভালো করতে পারবে।
অনুষ্ঠানে অবরোধ-হরতালের মধ্যেও সময়মতো ফল প্রকাশ করায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা। তিনি বলেন, জ্বালাও-পোড়াওয়ের মধ্যে যে আপনারা যথাসময়ে কাজটি করতে পেরেছেন এটি বড় ব্যাপার। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। সবার প্রচেষ্টায় আমরা এটি করতে পেরেছি।
এর আগে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও বোর্ডের চেয়ারম্যানরা নিজ নিজ বোর্ডের ফলাফল প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন।
আরও পড়ুন
প্রধানমন্ত্রীর ফল প্রকাশ কার্যক্রম উদ্বোধনের পর বেলা ১১টা থেকে শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইটে ফল জানতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেও ফল জানা যাবে।
দুপুর ২টায় ঢাকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সংবাদ সম্মেলন করে ফলের বিস্তারিত তুলে ধরবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
চলতি বছর আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয় ১৭ আগস্ট। শেষ হয় ২৫ সেপ্টেম্বর।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা ১০ দিন পিছিয়ে ২৭ আগস্ট শুরু হয়। সবগুলো বোর্ডে একই দিনে পরীক্ষা শুরু না হলেও ১১টি শিক্ষা বোর্ডে একযোগে ফল প্রকাশ করা হচ্ছে।
এ বছর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ১১টি শিক্ষা বোর্ডের দুই হাজার ৬৫৮টি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩৪২ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র সংখ্যা ৬ লাখ ৮৮ হাজার ৮৮৭ এবং ছাত্রী ৬ লাখ ৭০ হাজার ৪৫৫ জন।
৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে এবার মোট পরীক্ষার্থী ১১ লাখ ৮ হাজার ৫৯৪ জন। যাদের মধ্যে বিজ্ঞানের ২ লাখ ৫৫ হাজার ৫১২ জন, মানবিকের ৬ লাখ ৪০ হাজার ৮৭৬ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষার ২ লাখ ১২ হাজার ২০৬ জন।
মাদরাসা বোর্ড থেকে ৯৮ হাজার ৩১ জন ও কারিগরি বোর্ড থেকে ১ লাখ ৫২ হাজার ৭১৭ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়।
এমআর