শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ঢাকা

ত্রিশ মিনিটেই শেষ ঈদের অগ্রিম টিকিট!

আমিরুল ইসলাম
প্রকাশিত: ২৩ এপ্রিল ২০২২, ০৫:১৫ পিএম

শেয়ার করুন:

ত্রিশ মিনিটেই শেষ ঈদের অগ্রিম টিকিট!
ঈদের অগ্রিম টিকিট না পেয়ে অনেককেই এমন হতাশায় দেখা যায় | ছবি: ঢাকা মেইল

বিক্রি শুরু হওয়ার মাত্র আধা ঘণ্টার মধ্যেই প্রথম দিনের ঈদের অগ্রিম সব টিকিট বিক্রি শেষ হয়েছে! যেখানে মাত্র পাঁচ শতাংশ টিকিট বিক্রি হতে সময় লাগে পুরো এক ঘণ্টা।

এত দ্রুত সব টিকিট শেষ হওয়ার কারণও সবার অজানা। বারবার চেষ্টার পরও কোনো কর্তৃপক্ষই এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। সেই সঙ্গে আপ্রাণ চেষ্টার পরও স্টেশন সংশ্লিষ্ট কারও কাছে এ বিষয়ে কোনোরকম তথ্য মেলেনি। এই প্রশ্নের উত্তরে সায় দেয়নি কেউই!


বিজ্ঞাপন


এদিকে, টিকেটের জন্য গতকাল শুক্রবার (২২ এপ্রিল) রাতে এসে কমলাপুর রেলস্টেশনে অবস্থান নেন মাহবুবুল হক। ঢাকা মেইলকে তিনি জানান, সেহেরি শেষে নামাজ পরে এখানে এসে বসেছি। আগামী ২৭ তারিখ কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসে কুড়িগ্রাম যাবো। ফজরের নামাজ শেষ করে এসে দেখি লম্বা লাইন। গুনে শেষ করার মতো না। লাইনের শেষে অবস্থান নিলাম টিকিটের আশায়। সামনে পেছনে দু-পাশেই কয়েক হাজার মানুষ।

Train

পরে উপায় না দেখে অন্যদের মতো আমিও লাইনে দাঁড়িয়ে অবস্থান নিলাম। ছয়/সাত ঘণ্টা অপেক্ষার পর হঠাৎ হইচইয়ে বুঝলাম টিকিট দেওয়া শুরু হয়েছে। আশেপাশে কয়েক হাজার মানুষ। আরও লাইনের অনেক পেছনে থাকায় স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলাম না। তার প্রায় পাঁচ মিনিট পর বুঝতে পারলাম টিকেট বিক্রি শুরু হয়েছে। কিন্তু মাত্র ১৫-২০ মিনিট পরেই শুনি ২৭ তারিখের টিকিট শেষ! অথচ আমার সামনে ও পিছনে প্রায় পাঁচ-ছয়শত মানুষ দাঁড়িয়ে টিকিটর আশায়।

মাহবুবুল হক আরও জানান, টিকিট বিক্রি শেষে অনেকক্ষণ ভাবলাম। আশপাশের পরিস্থিতিতে মনে হয় তারপরের দিন ২৮ তারিখের টিকিট পাওয়া যাবে, কারণ আমরা লাইনের অনেকটাই এগিয়ে এসেছি। টিকেট কিনতে হলে এখন বাধ্য হয়েই ২১ ঘণ্টা এখানেই লাইনে থাকতে হবে। এছাড়া টিকেট পাওয়ার আর কোনো সম্ভাবনা নেই।


বিজ্ঞাপন


দুইটা টিকেটের জন্য প্রায় ৩০ ঘণ্টা (টিকেট বিক্রি শুরুর ৯ ঘণ্টা) অপেক্ষা করবেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ট্রেনের যাত্রা ঝুঁকিমুক্ত। আর দামেও কম। বাসে ঈদ উপলক্ষে ভাড়া দ্বিগুণ হয়েছে, তাই অন্য আর কোনো উপায় না পেয়ে ট্রেনই আমার একমাত্র ভরসা। এ জন্য কষ্ট হলেও এখানেই অবস্থান করবে।

Train

মাহবুবুল হকের কিছু সামনেই লাইনে দাঁড়ানো ছিলেন পঞ্চগড়ের একটি স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক শফিউল ইসলাম। ঢাকা মেইলকে তিনি জানান, গতকাল রাত ১২টায় এসে দাঁড়িয়েছি। আমি ২৭ তারিখ পরিবার নিয়ে পঞ্চগড় এক্সপ্রেসে করে পঞ্চগড় যাবো। আমার তিনটা টিকিট প্রয়োজন। কিন্তু, আমি মাত্র একটা টিকিট পেয়েছি। তাই বাধ্য হয়ে আমাকে আগামীকালও যাওয়ার টিকিট কিনতে থাকতে হচ্ছে।

মাহবুবুল হকের আশপাশের মানুষজনও অনেকেই পরের দিনের টিকিটের আশাতেই অপেক্ষা করবেন। এ জন্য লাইনের দাঁড়ানো অবস্থায় নিজ উদ্যোগে তিন থেকে চারজনকে সঙ্গে নিয়ে টোকেন ব্যবস্থা চালু করেছেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শাদেকুল ইসলাম শাওন। লাইনে যেন হুড়োহুড়ি আর সিরিয়াল ঠিক থাকে সে জন্য এই ব্যবস্থা করেছেন তিনি।

এদিকে, বিকেল হতে না হতেই আগামীকাল রোববারের (২৪ এপ্রিল) টিকিটের জন্য মানুষের লাইনে দাঁড়ানো শুরু হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে অনেকেই চাঁদর আর ছোট বালিশ নিয়ে এসেছেন স্টেশনে। দাঁড়িয়ে কিংবা শুয়ে রাত পার করে তাদের অপেক্ষা থাকবে আগামীকাল সকাল ৮টার। অপেক্ষা কাঙ্ক্ষিত টিকিটের!

এএম/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর