বাংলাদেশে নদীকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে ঘোষণা করে আইন পাশ হলেও নদী দূষণ ও দখলের সংস্কৃতি থেকে মানুষকে নিবৃত করা যাচ্ছে না। সারাদেশে বহু নদ-নদী বর্তমানে বিলুপ্ত ও বাকি নদীগুলোও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। নদী রক্ষায় নিয়োজিত খোদ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যথেষ্ট দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বক্তারা। তারা বলেন, নদী একটি জীবন্ত সত্তা, আসুন এর অধিকার নিশ্চিত করি।
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘নদী একটি জীবন্ত সত্তা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
অন্যান্য সংগঠনের সাথে যৌথভাবে এই সেমিনারটির আয়োজন করে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ। যাতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দ রেজওয়ানা হাসান; নোঙর ট্রাস্ট বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সুমন শামস; রিভার এন্ড ডেলটা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ; নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা।
অনুষ্ঠানের অতিথিদের মধ্যে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, নতুন প্রজন্মকে নদী সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। তারা যাতে নদীকে ভালোবাসে। আমাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে নদীকে রক্ষা করতে হবে। নদী রক্ষা না করলে যতই উন্নয়ন করি, তা টেকসই হবে না।

প্রতিবছর বাংলাদেশে নদী রক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সেপ্টেম্বরের চতুর্থ রোববার বিশ্ব নদী দিবসে বিভিন্ন সংগঠন নানা ধরণের কর্মসূচি পালন করে থাকে। যার অংশ হিসেবে, স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনগুলোকে সাথে নিয়ে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ আজ সকালে সারাদেশে ঢাকাসহ মোট ১২টি স্থানে একযোগে বিশ্ব নদী দিবস পালনে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে। কক্সবাজারে সদর, পেকুয়া, তালতলী, মহেশখালি, মোংলা, কুতুবদিয়া, কলাপাড়া, পাথরঘাটা, বরগুনা সদর, পাইকগাছা ও বরিশাল সদরে মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও র্যালিসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের উদ্যোগে সারাদেশের বিভিন্ন জায়গায় এ কর্মসূচিতে উপস্থিত নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, নদী ও পরিবেশ সংগঠক এবং সাধারণ জনগণ নদী রক্ষায় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান।

এছাড়াও, কর্মসূচির অংশ হিসেবে, শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় ঢাকার সেগুনবাগিচার কেন্দ্রীয় কচিকাচার মেলায় নাগরিক সংলাপ ও শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, নদী দখল দূষণের ব্যাপারে অবগতকরণ ও নদী সংরক্ষণে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সেপ্টেম্বর মাসের চতুর্থ রোববার বিশ্বব্যাপী পালিত হয় বিশ্ব নদী দিবস। কানাডার নদী-রক্ষা আন্দোলনকর্মী মার্ক অ্যাঞ্জেলোর মাধ্যমে এই দিবসটির ধারণা আসে এবং ২০০৫ সালে জাতীসংঘের দাফতরিক স্বীকৃতির মাধ্যমে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী পালিত হয় বিশ্ব নদী দিবস।
ডিএইচডি/এমএইচএম