রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

শেষ মুহূর্তে যাত্রীর ঢল, লঞ্চ মালিকদের মুখে হাসি

বোরহান উদ্দিন
প্রকাশিত: ২৭ জুন ২০২৩, ১০:৫৫ পিএম

শেয়ার করুন:

শেষ মুহূর্তে যাত্রীর ঢল, লঞ্চ মালিকদের মুখে হাসি
ছবি: ঢাকা মেইল।

ঈদুল আজহার সময় যে পরিমাণ যাত্রীর প্রত্যাশা ছিল লঞ্চ মালিকদের গতকাল পর্যন্ত সে আশা খুব একটা পূরণ হয়নি। কারণ, দিনভর তেমন যাত্রীর চাপ ছিল না। তবে মঙ্গলবার (২৭ জুন) কিছুটা হলেও স্বস্তি এসেছে লঞ্চ মালিকদের মনে। পদ্মা সেতু চালুর আগের মতোই যাত্রীর দেখা মিলেছে সদরঘাটে। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে শতাধিক লঞ্চে করে লাখ লাখ মানুষ নাড়ির টানে বাড়ির পথে রওয়ানা হয়েছেন।

যদিও একবছর আগে পদ্মা সেতু চালুর পর দুই ঈদ ছাড়া পুরো সময়জুড়ে যাত্রীখরায় ভুলছিল লঞ্চ মালিকরা। ঢাকা থেকে গন্তব্যে আসা-যাওয়া করার পর খরচ ওঠানোই দায় হয়ে গিয়েছিল এই খাতের ব্যবসায়ীদের। তবুও নৌখাত সংশ্লিষ্টরা ঈদের সময় বেশি যাত্রী পাবেন- এমন আশায় বসে থাকেন। যদিও পদ্মা সেতু চালুর পর সময় যত গড়াচ্ছে, ততই যাত্রীর চাপ কমতে শুরু করেছে নৌপথে।Lanchঢাকা-বরিশাল রুটে চলা এডভেঞ্চার-৯ লঞ্চের স্টাফ জাহিদুর রহমান ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘রমজানের ঈদে যে পরিমাণ যাত্রী ছিল এবার ঈদে তারচেয়েও কম যাত্রী আসছে। ঈদের সময় ১৫ দিন আগে কেবিন শেষ হয়ে যায়, এখন ঘাটে এসেও কেবিন পাওয়া যাইতেছে। এতেই বোঝা যায় যাত্রীর অবস্থা কেমন।’


বিজ্ঞাপন


দেশে একদিন বাদেই পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। এ বছর সরকারি চাকরিজীবীদের একদিন ছুটি বাড়ানোর কারণে আজ মঙ্গলবার (২৭ জুন) থেকে ঈদের ছুটি শুরু হয়েছে। অবশ্য সাপ্তাহিক বন্ধের কারণে এবার ঈদে পাঁচদিন ছুটি কাটানোর সুযোগ পাবেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। যে কারণে গতকাল সোমবার (২৬ জুন) থেকেই লঞ্চ, ট্রেন ও সড়কপথে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে।Lanchফলে অনেকে গতকালই অফিস শেষে বাড়ির পথে পা বাড়িয়েছেন। কেউ কেউ আবার আজ পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটছেন গন্তব্যে। বিশেষ করে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বড় অংশ আজ বাড়ি যাওয়ায় সব পথেই উপচে পরা ভিড় দেখা গেছে। সরেজমিন ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। সবমিলিয়ে মঙ্গলবার দিনে একাধিকবার বৃষ্টি হলেও ঢাকা থেকে গ্রামে যাওয়া মানুষেরা দুর্ভোগ মাথায় নিয়েই স্টেশনে এসেছেন। একইভাবে সদরঘাটেও দিনভর মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। লঞ্চের ডেকের সব জায়গার পাশাপাশি কেবিনের ফাঁকে, সিঁড়ির পাশে সবখানেই ছিল যাত্রীদের সরব উপস্থিতি।

বিশেষ করে বরিশালের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া একাধিক লঞ্চে যাত্রীদের ব্যাপক চাপ দেখা গেছে। কেবিনও পুরোটা বুকিং হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।Lanchঢাকা-বরিশাল রুটের এমভি মানামি লঞ্চের সুপারভাইজার শুভ ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘মঙ্গলবারের যাত্রী চাপ আশানুরূপ। কিন্তু এক দুইদিনের যাত্রীতে তো সারাবছরের লস পোষানো যায় না।’

তবে আজ লঞ্চের সব কেবিনেই যাত্রী আছে বলেও জানান এমভি মানামি লঞ্চের এই সুপারভাইজার।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, যাত্রী চাপের কারণে মঙ্গলবার একশোর বেশি লঞ্চ সদরঘাট থেকে ছেড়ে গেছে। এরমধ্যে বিকেল থেকে রাত অবধি ছেড়ে যাওয়া সব লঞ্চেই ভালো যাত্রী দেখা গেছে।Lanchএ বিষয়ে সংস্থাটির সদরঘাট বন্দরের কর্মকর্তা আলমগীর কবির ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘ঈদযাত্রা যাতে নির্বিঘ্নে হয়, সেজন্য সদরঘাটে সব ধরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো ধরণের সমস্যা হয়নি। আশা করি ঈদযাত্রা নিরাপদ ও স্বস্তিতেই শেষ হবে।’


বিজ্ঞাপন


যদিও ঈদের আগ মুহূর্তে যাত্রী পাওয়ায় কিছুটা স্বস্তির কথা জানালেও ঈদ পরবর্তী সময় নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন এডভেঞ্চার লঞ্চের মালিক মো. নিজাম উদ্দিন।

ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, ঈদের দুই-তিনদিন আগে থেকে সাধারণত যাত্রীর চাপ থাকে। এ বছর তেমনটা হয়নি। মাত্র একদিন আগে তুলনামূলক যাত্রী বেশি এসেছে। কিন্তু এটা তো ক্ষণস্থায়ী। কারণ, ঈদ শেষ হলে আবারও সবাই যাত্রী সংকটে ভুগবো। কতদিন এভাবে লোকসান দিয়ে টিকে থাকতে পারবে এই খাতের লোকজন- সেটাই চিন্তার বিষয়।’

বিইউ/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর