শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ফুসফুস। এই অঙ্গটি দেহ থেকে কার্বন ডাই অক্সাইডকে বের করে দেয়। পাশাপাশি প্রকৃতি থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে। আর এই কাজটা জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত নিরন্তর চলতে থাকে। তাহলে বুঝতেই পারছেন, এই অঙ্গের গুরুত্ব ঠিক কতটা।
কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, দূষিত বায়ুতে শ্বাস নিলে এই অঙ্গের গুরুতর ক্ষতি হয়ে যায়।
বিজ্ঞাপন
চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, আমরা যেই বাতাসে শ্বাস নিচ্ছি, সেখানে এমন কিছু ক্ষতিকর রাসায়নিক মিশে রয়েছে যা ফুসফুসের ক্ষতি করে। তবে শুধু দূষিত বায়ু নয়, এর পাশাপাশি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ধূমপানও কিন্তু ফুসফুসের বিরাট ক্ষতি করে চলেছে।
তবে আশার কথা হল, হাতের কাছে উপস্থিত কয়েকটি খাবারকে ডায়েটে জায়গা করে দিলেই ফুসফুসকে তরতাজা রাখা সম্ভব। তাই আর দেরি না করে সেই সকল খাবার সম্পর্কে ঝটফট জেনে নিন।
১. বিটের গুণেই সুস্থ থাকে ফুসফুস
ফুসফুসের একাধিক সমস্যা প্রতিরোধ করতে চাইলে যে বিটরুটকে পাতে জায়গা করে দিতেই হবে। এই সবজি নিয়মিত খেলে ফুসফুসের কার্যকারিতা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়। বিটরুটে এমন কিছু প্ল্যান্ট কম্পাউন্ড রয়েছে যা ফুসফুসের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এছাড়া এতে উপস্থিত নানা উপাদান ব্লাডপ্রেশার কমায় এবং রক্তনালীকে শান্ত করতে সাহায্য করে। আর সবথেকে বড় কথা, নিয়মিত এই সবজি খেলে ফুসফুস অক্সিজেন সংগ্রহের কাজটিও খুব সহজেই সামলাতে পারে। তাই আর দেরি না করে যত দ্রুত সম্ভব বিট খাওয়া শুরু করে দিন।
বিজ্ঞাপন
২. আপেল খান
আপেল হল পুষ্টির ভাণ্ডার। এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তাই নিয়মিত আপেল খেলে শরীর সুস্থ থাকে। এমনকী ফুসফুসের হালও ফিরবে। গবেষণায় দেখা দিয়েছে, সপ্তাহে মাত্র ৫ দিন ১টি করে আপেল খেলে সিওপিডি-এর মতো মারাত্মক ফুসফুসের অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়। সেই সঙ্গে বাড়ে ফুসফুসের কার্যক্ষমতাও। এছাড়া প্রায়দিন আপেল খেলে ফুসফুসের ক্যানসার ও অ্যাজমার মতো ঘাতক অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কয়েকগুণ কমে বলে উঠে এসেছে গবেষণায়।
৩. কুমড়া খান
কুমড়ার অভ্যন্তরে লুকিয়ে রয়েছে একাধিক গুণ। এতে রয়েছে শক্তিশালী কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ফুসফুসের প্রদাহজনিত সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া এতে উপস্থিত ক্যারোটিনয়েডস ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয়। এমনকি লাংস থেকে সমস্ত ধরনের খারাপ পদার্থও বেরিয়ে যায়। তাই নিয়মিত কুমড়োর পদ পাতে রাখতে ভুলবেন না যেন।
৪. হলুদ খান নিয়মিত
রান্নায় হলুদ দেন ঠিক আছে। তবে ফুসফুসের খেয়াল রাখতে চাইলে কিন্তু কাঁচা হলুদও খেতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতিদিন সামান্য পরিমাণে কাঁচা হলুদ খেতে পারলেই ফুসফুসের স্বাস্থ্য ফিরবে। আসলে হলুদে রয়েছে কারকিউমিন নামক একটি উপাদান। এই উপাদানটিই লাংসের হাল ফেরায়। এছাড়া গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পর নিয়মিত হলুদ খেলে লাংস দ্রুত নিজেকে সারিয়ে তুলতে পারে।
৫. টমেটোতে বাজিমাত
টমেটোতে রয়েছে অনেকটা পরিমাণে লাইকোপেন। এই উপাদান কিন্তু একধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আর এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফুসফুসের স্বাস্থ্য ফেরাতে ওস্তাদ। এমনকী ফুসফুসের প্রদাহ প্রশমিত করতেও এর জুড়ি নেই। তাই সিওপিডি বা অ্যাজমা আক্রান্তদের নিয়মিত টমেটো খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। তাই আর দেরি কেন, যত দ্রুত সম্ভব এই সকল খাবার খাওয়া শুরু দিন মশাই।
এজেড