রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ক্যাম্পাস জীবনের বাসগুলো ঘিরে যত আনন্দ  

মার্জিয়া আফরোজ মিলি
প্রকাশিত: ১২ জুন ২০২৩, ০২:৩৩ পিএম

শেয়ার করুন:

ক্যাম্পাস জীবনের বাসগুলো ঘিরে যত আনন্দ  

তিতুমীর কলেজের লাল বিআরটিসি বাস দেখে মহাখালীর আশেপাশে স্কুল-কলেজপড়ুয়া অনেক শিক্ষার্থীই মনে মনে চাইতে পারেন একদিন আমিও এই বাসের যাত্রী হব। আবার অফিস যাওয়ার পথে তিতুমীরের সাবেক কোনো শিক্ষার্থী ঢাকার যানজটে বসে ক্যাম্পাস জীবনের বিআরটিসি বাসের দিকে তাকিয়েই স্মৃতিকাতর হতে পারেন। হয়ত ভাবেন, আহা! কী সুন্দর মধুময় দিন ছিল।

ক্যাম্পাসে যাওয়া-আসার এই যানবাহন নিয়ে আবেগ, রোমাঞ্চ শুধু মহাখালীতে নয়, ঢাকার অন্যান্য ক্যাম্পাস এবং বাইরের জেলা বা শহরগুলোতেও আছে। একেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের লাল, নীল, আকাশি, ধূসর কিংবা সবুজরঙা বাসগুলো অনেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন ফেরি করে বেড়ায়। যারা এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়েন, তাদের অনেকের একটা বড় সময় কাটে এই বাসে চড়ে। তাই বাসযাত্রার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে বহু স্মৃতি। ওই বাসের কোনো যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে দেখুন, তার ঝোলায় গল্পের শেষ নেই।


বিজ্ঞাপন


bus

সামান্য একটি একতলা যানও যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান রোল মডেল হতে পারে, তার বড় উদাহরণ এই লাল বিআরটিসি। যদিও বাসগুলোর বর্ণিল নামের গা ঘেঁষে বেশ বড় করেই লেখা থাকে তিতুমীর কলেজ, তবু কেন যেন লেখাটার দরকার পড়ে না। দূর থেকে রং দেখেই চেনা যায়।

এছাড়াও ক্যাম্পাসের বাসে যাতায়াত করাটা নারী শিক্ষার্থীদের জন্য একটু বেশি সুবিধাজনক। নিজের ক্যাম্পাসের বাসে যাতায়াত করলে একটা আলাদা গর্ব যেমন কাজ করে, তেমনি একজন নারী ক্যাম্পাস বাসে নিজেকে অনেক বেশি নিরাপদ বোধ করে। সেজন্য কখনো কখনো একটু বেশি অপেক্ষা করতে হলেও, কিংবা সময়ের পরিবর্তন হলেও ক্যাম্পাসের বাসেই যাতায়াত করে অনেক নারী শিক্ষার্থী।

bus


বিজ্ঞাপন


ক্যাম্পাসের বাসগুলোর প্রতি শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা টের পাওয়া যায় ক্লাস শেষে মাঠে ও বাসে অপেক্ষারত শিক্ষার্থীদের দেখলে। বাসের সামনে দাঁড়িয়ে দল বেঁধে ছবি তোলার চিত্র দেখা যায় নিয়মিত। বিশেষত, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য তো এটি রীতিমতো ‘অবশ্যকর্তব্য’। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে নিজেদের এই আনন্দ সবার সঙ্গে ভাগ করে নেন শিক্ষার্থীরা।

বাসের নামগুলোও চমকপ্রদ। সম্পর্ক, সোনার তরী, অগ্নিবীনা, চলন্তিকা, অনিন্দ্য, সৌহার্দ্য, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, বিআরটিসি, কলেজ বাস। নামগুলো শুনলে যে কেউ ভাবতে পারেন কোন কবি বা সাহিত্যিক বুঝি নামকরণ করেছেন।

bus

যাত্রীরা প্রায় সমবয়সী হওয়ায় বাসের জন্য অপেক্ষার সময়টি যেমন আড্ডায় মুখর হয়, তেমনিভাবে কখনো কখনো চলন্ত বাসেই জমে ওঠে গানের আসর।

ক্যাম্পাসের বাসে দল বেঁধে যাতায়াত করতে করতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি আলাদা বন্ধনও তৈরি হয়। বাসকেন্দ্রিক গড়ে ওঠে আলাদা যোগসূত্র। অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একটা সখ্যতা সৃষ্টি হয়। যারা অনাবাসিক শিক্ষার্থী, তাদের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ। দেখা যায়, দুজন দুই বিভাগের শিক্ষার্থী, সেশন আলাদা, অথচ বাসযাত্রার সুবাদে তারা হয়ে ওঠে একে অপরের আপন। এই বন্ধুত্ব ও বন্ধনই ক্যাম্পাস জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ।

লেখক: শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যম কর্মী

এনএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর