সাধারণত মস্তিষ্কে যে টিউমার হয় তাকেই ব্রেন টিউমার বলে। যেকোনো বয়সেই এটি হতে পারে। কিছু টিউমারের সূত্রপাত মস্তিষ্কেই। এদের প্রাইমারি ব্রেন টিউমার বলা হয়। অত্যন্ত জটিল ও সংযোজনশীল অঙ্গের টিউমার এটি। রোগটির চিকিৎসা পদ্ধতিও অনেক জটিল ও ক্ষেত্রবিশেষ অনেক ব্যয়বহুলও।
ব্রেন টিউমার কোথায় হয়?
বিজ্ঞাপন
টিউমার হচ্ছে শরীরের যেকোনো জায়গায় বা অঙ্গে কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। এই টিউমার মস্তিষ্কের ভেতরে হলে তাকে ব্রেন টিউমার বলা হয়। সাধারণত ব্রেন টিউমার দুই রকমের হতে পারে। বিনাইন বা শিষ্ট টিউমার এবং ম্যালিগন্যান্ট বা দুষ্টু টিউমার। কিছু ব্রেন টিউমারের উৎস হয় শরীরের অন্য কোনো স্থানের টিউমার। একে সেকেন্ডারি বা মেটাস্টাটিক ব্রেন টিউমার বলা হয়।

ব্রেনের টিউমার সম্পর্কে বেশ কিছু ভুল ধারণাও হয়। এগুলো সম্পর্কে চলুন সত্য জেনে নিই-
ব্রেন টিউমার মানেই ব্রেন ক্যানসার
বিজ্ঞাপন
অনেকেই ভাবেন, ব্রেন টিউমার মানেই মস্তিষ্কে ক্যানসার হয়েছে। এই ধারণা ভুল। টিউমার মানেই সবসময় ক্যানসার নয়। বরং কিছু কিছু টিউমার থেকে ক্যানসার হতে পারে। কিন্তু সব টিউমার থেকে ক্যানসার হয় না।
ব্রেন টিউমার কেবল বড়দেরই হয়
অনেকেরই ধারণা, ব্রেন টিউমার শুধু বড়দেরই হয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দেখা গেছে, ছোটরাও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রোগে আক্রান্তদের মধ্যে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ রোগীর বয়স ১৪ বছরের নিচে।

মোবাইল ফোন ব্রেইন টিউমারের আশঙ্কা বাড়ায়
মোবাইল ফোনের ব্যবহার ব্রেন টিউমারের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিতে পারে— এর কোনো সঠিক বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। তবে মোবাইলের দীর্ঘ বিকিরণের ফলে স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
সব রোগীর একই রকম লক্ষণ ও উপসর্গ থাকে
একটি প্রচলিত বিশ্বাস হলো, সব ব্রেন টিউমার রোগীর একই রকম লক্ষণ ও উপসর্গ থাকে। কিন্তু এই ধারণা ভুল। টিউমারের আকার ও স্থানের ওপর নির্ভর করে লক্ষণগুলো পাল্টে যায়। তবে কিছু সাধারণ লক্ষণগুলির যেমন মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, ক্লান্তি ইত্যাদি সবারই হয়।

ব্রেন টিউমারের লক্ষণ
ব্রেন টিউমারের নানা লক্ষণ দেখা যায়। এর প্রধান বা স্বাভাবিক লক্ষণ মাথাব্যথা। এই মাথাব্যথা রোগীর কর্মকাণ্ডের সাথে তীব্র হয়। অর্থাৎ রোগী বিশ্রামে থাকলে মাথাব্যথা কম থাকে। আর কোনো কাজ করলে তীব্রতা বাড়ে। অনেক সময় ভোরের দিকে মাথাব্যথা বাড়তে থাকে।
রোগীর বমি বমি ভাব বা বমি হয়। দৃষ্টিশক্তি ক্রমশ কমে আসে।
রোগীর অন্য লক্ষণও দেখা দিতে পারে। খিঁচুনি হতে পারে কিংবা শরীরের যেকোনো একদিকের হাত বা পা দুর্বল বা অবশ হয়ে যেতে পারে।

রোগীর মানসিক অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে। আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখা দিতে পারে।
ব্রেন টিউমারের ঝুঁকিতে কারা আছেন? নির্দিষ্ট করে তার উত্তর দেওয়া যায় না। যেকোনো মানুষ ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হতে পারেন। তাই একের অধিক লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
এনএম

