শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

অটোফেজি: রোজার বিস্ময়কর উপকারিতা

লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ এপ্রিল ২০২২, ১১:২৬ এএম

শেয়ার করুন:

অটোফেজি: রোজার বিস্ময়কর উপকারিতা

দেহের জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ার নাম অটোফেজি। এর মাধ্যমে দেহের অপ্রয়োজনীয় কোষগুলো ধ্বংস ও পরিচ্ছন্ন হয়। অর্থাৎ একে কোষের আবর্জনা পরিচ্ছন্নকরণ প্রক্রিয়া বলা যায়। কোষের কার্যক্ষমতা ঠিক রাখতে এর কোনো বিকল্প নেই। আর এই অটোফেজি হয়ে থাকে রোজা থাকার মাধ্যমেই। 

কী হয় অটোফেজিতে? 


বিজ্ঞাপন


অটোফেজি প্রক্রিয়াটিকে তুলনা করা যায় শহরের পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সঙ্গে। যিনি রাস্তার সব আবর্জনা একসঙ্গে জড়ো করেন। এরপর তা গাড়িতে করে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে আসেন। দেহের কোষের স্তরে অটোফেজি থাকে ‘এটোপিক ওজন ০:৫৮’ নামে। এটিও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর মতো কাজ করে। কোষের আবর্জনা, ক্ষয় হয়ে যাওয়া কোষাণু ইত্যাদিকে সংগ্রহ করে নিয়ে যায় লাইসোজম নামের একটি অংশের কাছে। লাইসোজমের সঙ্গে মিশে তৈরি হয় নতুন কোষাণু। অর্থাৎ, পুরোনো কোষকে নতুন কোষে রূপান্তরিত করে অটোফেজি। 

autophagyরোজা রাখলে কীভাবে অটোফেজি কাজ করে? 

রোজা রাখলে দীর্ঘ সময়ে বাইরে থেকে দেহে খাবার বা পানীয় প্রবেশ করে না। দেহের যেসব অবস্থায় অটোফেজি সক্রিয় হয়, তার মধ্যে এটি একটি। অটোফেজির মাধ্যমে এ সময় দেহ সচল থাকে। এই প্রক্রিয়ায় দেহ তখন প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদন করে। অর্থাৎ বাইরের রসদ বা খাবারের ওপর দেহ তখন নির্ভর করে না। নিজেই নিজের রসদ সৃষ্টি করে এবং শক্তি যোগায়। সাধারণত রোজা থাকার ১৮তম ঘণ্টা থেকে অটোফেজি সক্রিয় হয়। রোজা রাখলে ১০-১২তম ঘণ্টায় এটি সক্রিয় হয়ে থাকে। 

কেন অটোফেজি গুরুত্বপূর্ণ?


বিজ্ঞাপন


সুস্থ থাকতে অটোফেজি বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি প্রাকৃতিকভাবে শরীরকে দূষণমুক্ত করার পদ্ধতি। কোনো কারণে অটোফেজি প্রক্রিয়া ব্যাহত হলে দেহে বিষাক্ত পদার্থের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। যার ফলে ক্যানসার বা টাইপ টু ডায়াবেটিস সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া অটোফেজি প্রক্রিয়ায় দেহে নাইট্রিক অ্যাসিড তৈরি হয়। এই উপাদানটি দেহকোষকে পুনরুজ্জীবিত করে কোষের আয়ু বাড়িয়ে দেয়। যা বার্ধক্য রোধক হিসেবে কাজ করে।

autophagyঅটোফেজির জন্য নোবেলপ্রাপ্তি

বিজ্ঞানে অটোফেজি শব্দটি খুব একটা প্রচলিত ছিল না। ২০১৬ সালে জাপানি বিজ্ঞানী ইউশিনোরি ওশুমি অটোফেজি নিয়ে গবেষণা করে নোবেল পুরস্কার পাবার পর বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনা শুরু হয়।

অটোফেজির যত উপকারিতা

প্রদাহ কমানো: বিভিন্ন রোগের জন্য দায়ী থাকে প্রদাহ। আর অটোফেজি এই প্রদাহ কমিয়ে দেয়। 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো: এক গবেষণায় ডা. লোঙ্গো দেখান যে, কোনো ব্যক্তি টানা চারদিন উপবাস করলে (পানি ছাড়া কিছু না খাওয়া), তাহলে তার রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা পুরো নতুনভাবে বিন্যস্ত হয়। 

বার্ধক্য প্রতিরোধ: অটোফেজির কারণে ত্বক বার্ধক্যের প্রভাবমুক্ত হয় এবং ত্বককে প্রাণবন্ত দেখায়। এটি ত্বকে বলি রেখা পড়তে দেয় না। 

জীবাণু ধ্বংস: দেহের জন্য ক্ষতিকর প্যাথোজেন, ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদি জীবাণুকে ধ্বংস করে অটোফেজি। ফলে দেহ থাকে সুস্থ। 

এছাড়াও গবেষণায় দেখা গেছে ক্যানসার সৃষ্টিকারী কোষ ধ্বংস করে অটোফেজি। আর এই উপকারি প্রক্রিয়া তরান্বিত করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে রোজা।  

এনএম/এজেড

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর