পৃথিবীতে এমন অনেক ঘটনা ঘটে যা সবাইকে অবাক করে দেয়। এর পেছনে বিজ্ঞান থাকলেও এমন ঘটনাকে অলৌকিক বা অলীক মনে হয়। পৃথিবীতে এমন একটি গ্রাম রয়েছে যেখানকার সব মানুষ অন্ধ।
হ্যাঁ, অবাক করা তথ্য হলেও এটি সত্য। জানলে আরও অবাক হবেন যে শুধু মানুষরাই নয়, ওই গ্রামের গৃহপালিত পশুরাও অন্ধ। এই ঘটনা সামনে আসার পর চমকে উঠেছিল পুরো বিশ্ব। অভিশাপ নাকি বিজ্ঞান? এর পেছনে কী রয়েছে তা নিয়েও রয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা।
বিজ্ঞাপন
বিশেষ এই গ্রামটিকে অভিশপ্ত বলা হয়। এই গ্রামটির অবস্থান মধ্য আমেরিকার দেশ মেক্সিকোতে। গ্রামের নাম টিলটেপেক। এই গ্রামে সাকুল্যে ৭০টি কুঁড়েঘরে বসবাস করেন জাপোটেক নামের এক উপজাতি গোষ্ঠীর শ’তিনেক মানুষ। অবিশ্বাস্য লাগলেও, এই গ্রামের মানুষ থেকে শুরু করে গৃহপালিত পশু কেউ চোখে দেখতে পায় না।
প্রশ্ন হলো, টিলটেপেক গ্রামের জাপোটেক জনজাতির মানুষেরা কি জন্মগতভাবেই অন্ধ? না। এখানকার নবজাতকরা সুস্থ-সবল শরীরেই ভূমিষ্ট হয়। কিন্তু, কীভাবে যেন সপ্তাহ খানেকের মধ্যে হারিয়ে ফেলে দৃষ্টিশক্তি! এই ঘটনা সেখানে খুব একটা নতুন নয়।
বিজ্ঞাপন
এই গ্রামের কথা প্রথমে জানতে পেরে নড়ে চড়ে বসেছিল মেক্সিকোর সরকার। গ্রামবাসীরা এই ঘটনাকে দেব-দেবী বা কালো শক্তির অভিশাপ মন করেন। গ্রামবাসীর অপর এক অংশের দাবি, লাবজুয়েলা নামের এক ধরনের স্থানীয় গাছ এই অন্ধত্বের জন্য দায়ী। ‘শয়তান গাছ’ নামে পরিচিত এই গাছের কারণেই কালো দুঃস্বপ্নে বন্দি টিলটেপেক।
ইতোমধ্যে এই গাছ নিয়ে গবেষণা করেছেন বিজ্ঞানীরা। তবে তাদের বক্তব্য ভিন্ন। বিজ্ঞানীদের মতে, লাবজুয়েলাই যে অন্ধত্বের কারণ, এমন প্রমাণ মেলেনি।
ফলে গ্রামের সব বাসিন্দাদের অন্ধ হওয়ার কারণ কী তা জানতে বিজ্ঞানীদের কৌতূহল আরও বেড়ে যায়। টিলটেপেক গ্রামের সবার এভাবে হঠাৎ অন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধানে গবেষণাও শুরু করেছেন সে দেশের বিজ্ঞানীরা।
গবেষণায় বিজ্ঞানীদের প্রাথমিক অনুমান, ঘন জঙ্গলে ঘেরা এই গ্রামে ‘ব্ল্যাক ফ্লাই’ নামের এক বিষাক্ত প্রজাতির মাছির আনাগোনা রয়েছে। আর সেই মাছির কামড়ে শৈশবেই দৃষ্টিশক্তি হারায় এই গ্রামের সবাই।
এনএম
