জ্বরঠোসা বা ফিভার ব্লিস্টারের সঙ্গে আমরা কম–বেশি পরিচিত। এটি কোল্ড সোর নামেও পরিচিত। মৌসুম বা আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অনেকেরই জ্বর হয়। বেশিরভাগক্ষেত্রে এসব জ্বর ভাইরাসজনিত। এমন জ্বর সেরে যাওয়ার পর অনেকের ঠোঁটের পাশে ফুসকুড়ির মত উঠতে দেখা যায়। আবার কারও কারও প্রায় সারা বছরই ঠোঁটে বা নাকের পাশে জ্বরঠোসা হয়। জ্বরের পরে এটি দেখা যায় বলে ইংরেজিতে এর নাম ফিভার ব্লিস্টার।
জ্বরঠোসা দেখতে যেমন খারাপ লাগে, তেমনি ব্যথায় কষ্টও পেতে হয়। বলা হয়, জ্বরঠোসা ছোঁয়াচে রোগ। এটি সারতে সময় লাগে। আবার অনেকের মতে, ভিটামিনের অভাবে এমনটা হয়।
বিজ্ঞাপন

জ্বরঠোসা কী?
জ্বরের পর ঠোঁটের কোণে বা এর আশপাশে গুচ্ছবদ্ধ ফুসকুড়ি ওঠে। এ সময় অনেকের জ্বর থাকে বা জ্বর সদ্য শেষ হয়। ফুসকুড়িগুলো ব্যথা করে, মুখ খুলতে বা খেতে গিয়ে কষ্ট হতে পারে। এ সময় বমিভাব কিংবা বমি, মাথাব্যথা থাকতে পারে।
কেন হয়?
বিজ্ঞাপন
জ্বরঠোসার মূল কারণ হলো হারপিস সিমপ্লেক্স টাইপ-১ ভাইরাসের সংক্রমণ। এই সংক্রমণের কারণেই জ্বরও আসে। তবে অন্য কোনো সংক্রমণজনিত জ্বরেও জ্বরঠোসা উঠতে পারে, যদি সেই সংক্রমণের কারণে শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে যায়।

করণীয় কী?
জ্বরঠোসা হলে অ্যান্টি ভাইরাল উপাদানসমৃদ্ধ টি ট্রি অয়েল ব্যবহার করুন। তুলার সাহায্যে এই তেল আক্রান্ত স্থানে লাগান। দিনে বেশ কয়েকবার ব্যবহারে ভাইরাসের সংক্রমণ মুক্ত হওয়া সম্ভব। এ ছাড়া সুতি কাপড় অ্যাপেল সিডার ভিনেগারে ভিজিয়ে জ্বরঠোসায় লাগালে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়। রসুনের কোয়া বেটে সরাসরি ক্ষত স্থানে দিনে অন্তত দুই থেকে তিনবার ব্যবহারেও দ্রুত উপকার পাবেন।
ক্ষতস্থানে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল–সমৃদ্ধ মধু লাগিয়ে রাখুন ৫ থেকে ১০ মিনিট। দিনে অন্তত দুবার ব্যবহার করুন। কোনোভাবেই জ্বরঠোসা আক্রান্ত স্থানে নখ লাগাবেন না। অনেক সময় ব্লিস্টার হাত দিয়ে খোঁচাখুঁচির কারণে ইনফেকশন হয়ে ত্বকে আরও বেশি ছড়িয়ে পড়তে পারে। কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত এই সংক্রমণ থাকলে ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

প্রতিকার
জ্বরঠোসা যেহেতু ছোঁয়াচে, তাই সংক্রমিত ব্যক্তির ব্যবহৃত জলের গ্লাস, চামচ কিংবা প্রসাধনী ব্যবহারে বিরত থাকুন। এমনকি নিজের জ্বরঠোসা স্পর্শ করলেও ভালো করে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে।
মানসিক চাপ মুক্ত থাকা ভালো। সানস্ক্রিন ক্রিম, লিপ-বাম ব্যবহার করা ঠোঁটের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। যেকোনো সংক্রমণ ঠেকাতে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন জীবন যাপন জরুরি। পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ান।
সূত্র: আজতাক বাংলা অবলম্বনে
এনএম

