উপকারি লবঙ্গের ক্ষতিকর দিক

স্বাদে একটু ঝাঁঝালো মিষ্টি সুগন্ধের লবঙ্গ ম্যাজিকাল এক ঘরোয়া মহৌষধ। এটির ব্যবহার শুধু রান্নার কাজেই নয় বরং আমাদের ছোট-বড় বিভিন্ন অসুখেও এটি ভরসা যোগায়। লবঙ্গ বা লং দিয়ে চা খেতে অনেকেই পছন্দ করেন। আবার অনেকেই আছেন যারা মুখে লবঙ্গ নিয়ে চিবিয়ে খান খালি মুখে। রান্নার সময় বিভিন্ন পদে এই মসলার ব্যবহার তো আছেই।
শরীরের জন্য লবঙ্গ বেশ উপকারী। সর্দি, কাশি, জ্বর সারিয়ে তুলতে কার্যকারী। এছাড়াও গলা ব্যথা, দাঁতের ব্যথা বা মাড়ি ফোলার মতন শারীরিক সমস্যাগুলো দূর করতে পারে এই মসলাটি। এতে আছে নাইজেরিসিন নামক একটি উপাদান যা রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে কাজ করে। তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য নিয়মিত লবঙ্গ খাওয়ার অভ্যাস করা ভালো।
অনেক নারী সৌন্দর্য চর্চাতেও লবঙ্গ ব্যবহার করে থাকে। এটি চুল বৃদ্ধি করে এবং চুল পড়া নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। বিভিন্ন তেলের সঙ্গে লবঙ্গ মিশিয়ে মাথায় ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বক সতেজ থাকে এবং সংক্রামক কমে। ব্রণ নিয়ন্ত্রণেও লবঙ্গের কার্যকারিতা লক্ষ্য করা যায়। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ব্রণ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
লবঙ্গ প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক। মুখের সংক্রমণে লবঙ্গের তেল অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এতে করে মুখের ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। এছাড়াও এটি মূত্রনালির সংক্রমণ কমাতে পারে। ওজন নিয়ন্ত্রণ করে শরীর সুস্থ রাখে এই লবঙ্গ। যাদের ঘুমের সমস্যা আছে তাদের জন্যও এটি হতে পারে এক উপকারী বন্ধু।
তবে এটি যে বয়সে যেভাবেই খান না কেন খেতে হবে পরিমিত পরিমাণে। কারণ মাত্রাতিরিক্ত লবঙ্গ খেলে শরীরে লাভের থেকে ক্ষতি হবার সম্ভাবনা বেশি। লবঙ্গ তেল ব্যবহারের ফলে খিচুনি, লিভারের ক্ষতি এবং ভারসাম্যহীনতার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এতে থাকা ইউজেনল রক্ত জমাট বাঁধাকে ধীর করে।
লবঙ্গের তেল খেলে অতিরিক্ত রক্তপাত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। রক্তে শর্করার মাত্রা থাকলে কখনোই বেশি পরিমাণে লবঙ্গ খাওয়া উচিত নয়। এমন রোগীদের অতিরিক্ত লবঙ্গ সেবনের ফলে হাইপারগ্লাইসিমিয়ার হতে পারে।
অপর দিকে যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে লবঙ্গ ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরেকটু বেশি সচেতন থাকা প্রয়োজন। অনেকক্ষেত্রে এর ব্যবহারে র্যাশ বা চুলকানির সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে লবঙ্গ খাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
শরীরের সুস্থতার জন্য প্রতিদিন একটি বা দুটি লবঙ্গ খাওয়া যেতে পারে। এর বেশি না খাওয়া উত্তম।
এনএম