বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

পদ্মার ইলিশ: মাওয়া ঘাটে প্রতি রাতেই ‘উৎসব'

ওয়াজেদ হীরা
প্রকাশিত: ১৩ মার্চ ২০২২, ১০:১১ পিএম

শেয়ার করুন:

বড় তাওয়ার উপর গরম তেলে ভাজা হচ্ছে ইলিশ। ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশে। এখানে রাত যত বাড়ে মানুষের আনাগোনাও বাড়তে থাকে, সঙ্গে বাড়ে বিক্রিও। বলছি, ঢাকার অদূরে পদ্মার পাড়ে মাওয়া ঘাটের কথা। রাজধানী থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে এই ঘাটে প্রতি রাতেই হয় ইলিশের উৎসব। পরিবার স্বজন নিয়ে অসংখ্য মানুষ যোগ দেন এই উৎসবে, আসেন পদ্মার ইলিশের স্বাদ নিতে। কেউ মাছ কেনা দেখছেন, কেউ দরদাম করছেন, কেউ আবার মাছের স্বাদ নিয়ে বাড়ির পথ ধরছেন।

বর্তমানে ঢাকা থেকে মাত্র ২৭ মিনিতেই যাওয়া যাচ্ছে মাওয়া ঘাট। সেখানে স্থায়ী ও অস্থায়ী প্রায় অর্ধশত ইলিশের দোকান রয়েছে। ঘাটে নেমেই যে যার মতো ঘুরে দেখছেন এবং ইলিশ অর্ডার করছেন। ভোজনরসিকদের জন্য ভাজা ইলিশের বাইরেও রয়েছে হরেক রকমের আইটেম। বেগুন ভাজা, হরেক রকমের ভর্তার সঙ্গে ইলিশের লেজ দিয়ে তৈরি 'লেজ ভর্তা' বিশেষ জনপ্রিয়। ইলিশের পাশাপাশি এখানে অন্য মাছও পাওয়া যায়।


বিজ্ঞাপন


দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের পাশাপাশি প্রতি রাতেই ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে আসেন এই মাওয়া ঘাটে। ব্যক্তিগত বা ভাড়ার গাড়ি কিংবা মোটরবাইক নিয়ে একা অথবা দলবেঁধে আসেন অনেকেই। গাড়ি পার্কিংয়ের জন্যও এখানে রয়েছে সুন্দর ব্যবস্থা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মাওয়া ফেরিঘাটের জমজমাট দৃশ্য। দরদাম করে মাছ কিনছেন ক্রেতারা। সেই মাছ চাহিদা মোতাবেক ভাজা বা রান্না করে পরিবেশন করছেন গরম ভাতের সঙ্গে। ইলিশের দামও তুলনামূলক কম। তবে রান্নার সময় সরিষার তেলে ইলিশ ভাজতে হলে তেলের দাম হিসেবে আলাদা টাকা দিতে হয়।

hilsha-1

স্থানীয়রা জানান, ঘাট পাড়ের মানুষের প্রতিদিনের ব্যবসা এটি। দিনের চেয়ে রাতে ব্যস্ততা বেশি থাকে তাদের। মাওয়া ঘাটে স্থায়ী-অস্থায়ী দোকান মিলে প্রায় অর্ধশত দোকান রয়েছে। এর মধ্যে অস্থায়ী দোকান ২০টির মতো। অস্থায়ী দোকানগুলোতে গড়ে ১০ হাজার টাকা বিক্রি হয়। আর স্থায়ী দোকানে আরও কয়েক গুণ বেশি বিক্রি হয়। ফলে সব মিলিয়ে প্রতি রাতে বিক্রি প্রায় ১০ লাখ টাকা বা আরও বেশি। প্রতি বৃহস্পতি ও শুক্রবার বিক্রি বেশি হয় বলে জানিয়েছেন এখানকার বিক্রেতারা।


বিজ্ঞাপন


আব্দুর রশিদ নামের এক বিক্রেতা ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘আমরা অস্থায়ী দোকান করি, প্রতি রাতে ১০ হাজার টাকা বিক্রি হয়। স্থায়ী দোকানের খরচ বেশি, বিক্রিও বেশি।’

আস্ত ইলিশ যারা কিনবেন না তাদের জন্যও রয়েছে ব্যবস্থা। ইলিশ কেটে প্রতি পিস হিসেবেও বিক্রি হয় এখানে। এ যেন সাধ্যের মধ্যেই সবটুকু পাওয়া। রাতের খাওয়া শেষে চা বা মিষ্টি পান খাওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। সময় পেলে যে কেউ এক রাতের ইলিশ উৎসবে দেখতে পারেন রাতের মাওয়া ঘাটের এক ভিন্নরূপ।

ডব্লিউএইচ/জেবি

 

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর