বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

‘ফ্যাশনে’ সময়কে টেক্কা দেওয়া সালমান শাহ

নিশীতা মিতু
প্রকাশিত: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:৪৬ এএম

শেয়ার করুন:

‘ফ্যাশনে’ সময়কে টেক্কা দেওয়া সালমান শাহ

পর্দার সামনে তার দেখা মিললেই নড়েচড়ে বসেন সবাই। তার চোখ কথা বলে, ঠোঁট কথা বলে। হাসি যেন সুর তোলে হৃদয় বীণায়। বলছিলাম বাংলা চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র সালমান শাহ এর কথা। ২৫ বছরেরও কম জীবন পরিধি নিয়ে যিনি কেড়ে নিয়েছিলেন অগণিত মানুষের মন। যার স্টাইল, ফ্যাশন আজও উন্মাদনা সৃষ্টি করে তরুণদের মধ্যে। 

সময়কে ধরে রাখা যায় না। কিন্তু মানুষের কর্ম, আচরণ কিংবা চলাচলের ধরন যে যুগের পর যুগ বেঁচে থাকতে পারে। তার প্রমাণ সালমান শাহ। মাত্র ৪ বছরের ক্যারিয়ারে ২৭টি সিনেমা করেছেন। আর তাতেই যে ফ্যাশনের বৈচিত্র্য এই অভিনেতা দেখিয়েছেন তার আবেশ এখনও রয়ে গেছে। 


বিজ্ঞাপন


salmanভক্তদের ‘ফ্যাশন আইকন’ ছিলেন সালমান শাহ। তার কথা বলা, হাঁটা, চলা, দাঁত দিয়ে নখ কাটা, গোল ফ্রেমের চশমা, হাঁটুতে রুমাল বাঁধা— সবকিছুই লুফে নিয়েছিল তরুণরা। এখনও তরুণদের ফ্যাশনে যেন আবছা আবছা দেখা মেলে সালমান শাহ এর। 

১৯৯৩ সাল। নিজের প্রথম সিনেমা ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামতে’ বাজিমাত করেন সালমান শাহ। এই সিনেমায় অভিনেতা মাথায় ভিন্ন স্টাইলের ক্যাপ পরেছিলেন। সাবলীল অভিনয়ে মুগ্ধ হবেন নাকি ভিন্নধারার ফ্যাশনে বুঁদ হবেন তা নিয়ে দোটানায় পড়ে যান দর্শকরা। হয়ে যান ভক্তও। 

salmanসালমানের ফ্যাশনের তালিকায় আরও ছিল মাথায় রং-বেরঙের টুপি, স্ট্রিচ জিন্স প্যান্টের হাঁটুতে রুমাল বাঁধা। হেয়ার স্টাইল হিসেবে কখনো ঝুঁটি করতেন, কখনোবা ছোট চিপের ব্যাকব্রাশ। কানে দুল, চোখে গোল ফ্রেমের চশমা, টি-শার্টের সামনের দিকে ইন করে পেছনের দিকে একটু খুলে রাখা ছিল তার নিজস্ব ঢং। 

অনুষঙ্গ হিসেবে বড় বকলেসওয়ালা বেল্ট পরা, ডান হাতে ঘড়ি পরা, কপাল ঢেকে রাখা ব্যান্ডেনা, গলায় আরবীয় রুমাল প্যাঁচানো, পুলিশি পোশাক ও টুপিতে রোদচশমা আর গোঁফ তার ফ্যাশনের অংশ ছিল। 


বিজ্ঞাপন


salmanঅন্যদের চেয়ে সময়ের দিক থেকে বোধহয় এগিয়ে ছিলেন সালমান শাহ। নয়ত নব্বইয়ের দশকের সময়কে টেক্কা দিয়ে কী করে তখন এত আধুনিক ফ্যাশন সেন্স ছিল তার? অন্যদের অনুকরণ করে স্টাইল করতেন না এই অভিনেতা। বরং তার নতুন স্টাইলের অপেক্ষায় অধীর আগ্রহে দিন গুনতো পুরো তরুণ সমাজ। 

সিনেমা মুক্তি পেলেই সালমান শাহ এর নতুন স্টাইল ফলো করার হিড়িক পড়ে যেত শহর থেকে গ্রামে, পাড়া থেকে মহল্লায়। তার মতো স্টাইলে চুল রাখত ভক্তরা, পরত গোল ফ্রেমের চশমা, বিভিন্ন রঙের চুপি। কপাল ঢেকে রাখা ব্যান্ডেনা আর স্ট্রিচ জিন্স প্যান্টের হাঁটুতে রুমাল বাঁধার ফ্যাশন নব্বই দশকে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল সালমান শাহ এর জন্যই।

salmanযেকোনো স্টাইলেই নিজেকে দারুণভাবে তুলে ধরতেন সালমান শাহ। তাইতো স্টাইল আইকন হিসেবে তিনি উপযুক্ত উদাহরণ। সুপারস্টার শাকিব খানও তাকে আইকন মানেন। এখানেই শেষ নয়। বলিউডের অভিনেতাদেরও নানা সময়ে সালমান শাহ এর স্টাইল অনুকরণ করতে দেখা গেছে।  

২০১৪ সালের কথা। বলিউডের আশিকি টু চলচ্চিত্রের নির্মাতা শুটিং সেটে নায়ক আদিত্য রায় কাপুরকে চরিত্র বুঝিয়ে দিতে গিয়ে বলছিলেন, ‘তোমাকে আমি বাংলাদেশের প্রয়াত নায়ক সালমান শাহর লুকে চাই। সালমানের স্টাইলগুলো ফলো করো।’ সামান্য দুটি বাক্যেই বোঝা যায় ফ্যাশনের ক্ষেত্রে সালমান শাহ এর দাপট কতখানি। 

salmanবর্তমানেও এই অভিনেতার অসংখ্য স্টাইল ফলো করছেন তরুণরা। সময় পেরিয়ে যাবে। নতুন নতুন ফ্যাশন মানুষ লুফে নিবে। তবু বহু যুগ পরেও বলে উঠবে, আমাদের একজন সালমান শাহ ছিলেন। যিনি ফ্যাশনে তার সময়কে টেক্কা দিয়েছিলেন। 

এনএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর