শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

‘স্বপ্ন তরী’ ও স্বপ্নবাজ সুমাইয়া

তানজিদ শুভ্র
প্রকাশিত: ০৮ আগস্ট ২০২২, ১১:৪৪ এএম

শেয়ার করুন:

‘স্বপ্ন তরী’ ও স্বপ্নবাজ সুমাইয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সন্তান মাইমুনাহ ফারিয়া জামান সুমাইয়া। বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় অবস্থান করছেন তিনি। বয়স খুব বেশি নয়। কেবল উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরুর অপেক্ষায় আছেন। তবে ছোট সুমাইয়ার স্বপ্নগুলো বেশ বড়। এই স্বল্প বয়সেই নিজের স্বপ্নের ডানা মেলে ধরেছেন। হয়েছেন অন্যদের কাছে উদাহরণ। 

নারীর আত্মরক্ষা এবং নারীর ক্ষমতায়নের জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন সুমাইয়া। কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ অর্জন করেছেন জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড। 


বিজ্ঞাপন


sumaia২০১৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুরে ‘আমি নারী, আমি স্বপ্ন, আমি তরী, আমি সংগ্রামী, আমিই শক্তি’ স্লোগানে গড়ে তুলেন স্বপ্ন তরী ফাউন্ডেশন। 

এতকিছু থাকতে নারীদের আত্মরক্ষা নিয়ে কেন কাজ করছেন। জানতে চাইলে সুমাইয়া বলেন, ‘২০১৫ সালে স্কুল থেকে ফেরার পথে কিছু বখাটে আমাকে উত্যক্ত করার চেষ্টা করে। বড় ভাই এসে তখন সামলে নেয়। এরপর থেকেই মেয়েদের আত্মরক্ষা নিয়ে কাজ করার প্রবল আগ্রহ ছিল। তখনই স্বপ্ন তরী গড়ার পরিকল্পনা করি’। 

sumaiaসংগঠনের যাত্রায় বড় ভাই সুমাইয়াকে উৎসাহ জুগিয়েছেন। বাবা-মা শুরুর দিকে সমর্থন না করলেও পরবর্তীতে উৎসাহ দিয়েছেন। কখনো কখনো সহপাঠীরা বিদ্রূপ করলেও থমকে যাননি তিনি। অন্য নারীদের জন্য কাজ করে গেছেন নিজ শক্তিতে। 

সংগঠনের কাজ কী? সুমাইয়া প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘শুরুতে কোনো প্রশিক্ষক না থাকায় আত্মরক্ষার কৌশলের ভিডিও ইন্টারনেটে দেখে নিজেরা অনুশীলন করে পরে অন্যদের শিখিয়েছি।’


বিজ্ঞাপন


sumaiaনারীদের আত্মরক্ষার জন্য তিনি গ্রামের মেয়েদের জুডো শেখান। স্বপ্ন তরী ফাউন্ডেশন এ পর্যন্ত নয় শতাধিক তরুণীকে জুডোতে আত্মরক্ষার কৌশল শিখিয়েছেন। 

বর্তমানে সংগঠনটি গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নারীর আত্মরক্ষা এবং নারীর ক্ষমতায়নের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। স্বপ্ন তরী ফাউন্ডেশন নারীদের আত্মরক্ষার জন্য গ্রামাঞ্চলে সচেতনতামূলক উঠোন বৈঠক করে থাকে। পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সচেতনতামূলক সেমিনারের আয়োজন করে। 

সুমাইয়া বলেন, ‘প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোনো প্রশিক্ষণের সুযোগ ছিল না। তাই আমরা আমাদের স্কুলের শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব ব্যবহার করে প্রথমে ভিডিওটি দেখে তারপর প্রশিক্ষণ দিই।’

sumaiaপাঠ্যপুস্তকে নারীদের আত্মরক্ষায় জুডো প্রশিক্ষণের একটি অধ্যায় যুক্ত করার দাবি জানান তিনি।

সম্প্রতি স্বপ্ন তরী ফাউন্ডেশন একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যাতে ইভটিজিং বা যৌন হয়রানির শিকার নারীরা অবিলম্বে প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, অভিভাবক বা বন্ধুদের কাছে সাহায্য চাইতে পারেন।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে সুমাইয়া জানান স্বপ্ন তরী ফাউন্ডেশন ২০২৫ সালের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সব নারীদের জুডো প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

লেখক: শিক্ষার্থী ও ফিচার লেখক

এনএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর