শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

কেবল মানুষ নয়, কুকুর-বিড়ালও প্রাণের বন্ধু হয়

মুমতাহীনা মাহবুব
প্রকাশিত: ০৭ আগস্ট ২০২২, ০৪:১৫ পিএম

শেয়ার করুন:

কেবল মানুষ নয়, কুকুর-বিড়ালও প্রাণের বন্ধু হয়

বন্ধু— ছোট্ট একটি শব্দ। কিন্তু এর গভীরতা অনেক। সবার জীবনে ভালো বন্ধু জোটে না। বন্ধুত্ব নিয়ে কারো কারো খারাপ অভিজ্ঞতাও জমে। 

ভালো স্মৃতি: শুরুতেই বলি, আমি বান্ধবী শব্দটা ব্যবহার করতে শিখি নাই, বন্ধুই আমার কাছে একমাত্র শব্দ। তো এই বন্ধু ব্যাপারটা আমার জীবনে অল্প কিন্তু ভালো স্মৃতি অনেক বেশি। খুব স্বল্পকালীন ক্লাসমেট থেকে চিরকালের বন্ধু হয়ে যাওয়া দুইজন মানুষ আমার আছে। 


বিজ্ঞাপন


একবার ছোটখাটো এক সার্জারি হলো। হাসপাতালের কেবিনেও সঙ্গে ছিল এক বন্ধু। মা আমাকে ধরতেই ভয় পাচ্ছিল। আর সেই বন্ধু বিচ্ছিরিভাবে মাথায় বিলি কেটে কেটে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করে আরও মাথা ব্যথা করিয়ে দিয়েছিল। 

tiruস্কুল-কলেজের বাইরে থেকে হওয়া বন্ধুও আছে। যাদের সঙ্গে বেশ ঘোরাঘুরি করছি, ট্যুরে গেছি, ভালো ভালো স্মৃতি জমিয়েছি। সময় যতো গড়ায় সবার না হলেও কারো কারো প্রায়োরিটি লিস্ট একদম বদলে যায়। তাই দল আর ঠিক আগের মতন থাকে না এক সময়। সে ব্যাপারটা নিয়ে আমার দুঃখ হয়।

মানুষের এই পাল্টে যাওয়ার রোগ না থাকলে জীবন আরও সুন্দর হতো আসলে! 

খারাপ স্মৃতি: জেলা পরিবর্তনের কারণে এমনিই ছোটবেলা থেকে টিকে থাকার মতো বন্ধু আমার হয়নি। তারপর যখন একটা পর্যায়ে ভাবলাম বন্ধুবান্ধব হচ্ছে, হবে আর থাকবে, করলাম ভুল। খুব ঘনিষ্ঠ জানতাম কৈশোরকালের যে বন্ধুকে, বড় হয়ে দেখলাম তার আমার জন্য সময় হয় কেবলই তার নিজের দরকারে। বন্ধুত্বের এমন রূপ সহ্য হয়নি। তাই তেমন বন্ধুকেও দরকার মিটিয়ে ধরে রাখতে পারিনি আর। সেটা নিয়ে আফসোস নাই কোনো। 


বিজ্ঞাপন


বন্ধুত্ব আজকাল: যে বয়সে আছি নতুন বন্ধু পাওয়া দুর্লভ ঘটনা! তাও মনে হয় কাজের সুবাদে কয়জন নতুন মানুষ পেয়েছি বিগত কয়েক বছরে। একসঙ্গে ঘোরাফেরা না হলেও তারা বন্ধুর মতোই, ম্যাসেজে আড্ডাবাজি হয় প্রায়ই। নিজের অনলাইন শপের গ্রাহক থেকে হয়ে যাওয়া বন্ধু আছে আমার। ফিচার রাইটার হিসেবে কাজ করতে গিয়ে পাওয়া কলিগও বন্ধু হয়েছে। আর আছে জীবনে একপাল কুকুর-বিড়াল। তাদের সাথে মিশতে পারি সহজে তাই তাদের নিজের বন্ধুই লাগে। তাদের সাথে দিনের অনেকটা সময়ই কথাবার্তা বলি আমি। তাদের ভাবভঙ্গিতে কথা শোনার ব্যাপারটা দেখতে পাই প্রায় সময়ই। 

tiruঅর্থাৎ কেবল আমি ওদের সময় দিচ্ছি তা না, ওরাও আমাকে সময় দেয়। বাসার বিড়ালের দল তো আছেই আদর নিতে, বাইরের কুকুর-বিড়ালকেও স্পট ট্রিটমেন্ট দেয়ার সুবাদে ওদের সাথে যোগাযোগ আমার বেশ নিবিড়। 

খুব মজার একটা ব্যাপার বলি, কোনো বেচারা কুকুরকে যদি ইনজেকশন দিতে হয় প্রয়োজনে, তারপর কয়েকদিন সে আমাকে দেখলেই পালায় থাকে ভয়ে! দেখা যায় এক বেলা পালায় তো অন্য বেলা আদরের জন্য, খাবারের জন্য মন কাঁদে আর চলে আসে এবং আবারও ইনজেকশন খায়! রাস্তা তো ওদের জন্য খুব নিরাপদ না। 

আমরা অনেক চেষ্টা করি মানুষকে সচেতন করার যাতে এনিমেল এবিউজিং আচরণ বন্ধ করে। গাড়ির চালকদের সতর্ক করি। তাও ওরা অহরহই আঘাত পায় আর এইসব ওষুধ-ইনজেকশনের পর্বও চলতেই থাকে। জীবনের বড় একটা অংশ দখল করে আছে বলে এসব কুকুর-বিড়ালও আমার প্রাণের বন্ধু। আর এই গোত্রকে সাধারণ মানুষ বন্ধু হিসেবে গোণায় ধরলে বলবো বন্ধুদের সংখ্যা দিয়ে আমি বড়লোক মানুষ!

এনএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর