আমাদের মস্তিষ্কে বেশ কিছু প্রোটিন থাকে যেগুলোর বিরুদ্ধে শরীর নিজেই কিছু অ্যান্টিবডি তৈরি করে। এর ফলে মস্তিষ্কের কোষগুলো (যা নিউরন নামে পরিচিত) ধীরে ধীরে নষ্ট হতে থাকে। মস্তিষ্কের যা যা কাজ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো কগনিশন বা চিন্তা করার শক্তি, মনে রাখার ক্ষমতা। এগুলো নষ্ট হতে থাকে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতে, মূলত ৬০ বছরের পর ডিমেনশিয়া শুরু হয়। কমবয়সীদের মধ্যে এই রোগ খুবই বিরল। তবে জিনগত সমস্যার কারণে কম বয়সে এই সমস্যা হতে পারে। তবে ডিমেনশিয়া বা অ্যালঝাইমার্সের মতো রোগ মূলত বয়সের সঙ্গে সম্পর্কিত। তবে ২০২৫ তারিখে 'ট্রান্সলেশনাল সাইকিয়াট্রি' জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে দেখা গিয়েছে, গত তিন দশকে বিশ্বব্যাপী ৪০-৬৪ বছর বয়সিদের মধ্যে ডিমেনশিয়ার প্রকোপ উদ্বেগজনকভাবে দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে।
বিজ্ঞাপন

তবে প্রাথমিক পর্যায়ে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে ছোট ছোট দৈনিক অভ্যাস। ব্রাশ করার সময় কয়েকটি অভ্যাসই সাহায্য করতে পারে ডিমেনশিয়া রোধ করতে। এমন কিছু অভ্যাসের কথাই জানিয়েছেন জুলস নামক এক নেটপ্রভাবী স্নায়ুবিজ্ঞানী-
১. গৌণ হাত ব্যবহার:
কোন হাত দিয়ে ব্রাশ করছেন, সেটি এখানে গুরুত্বপূর্ণ। অভ্যাসবশত আপনি আপনার মুখ্য হাত দিয়েই ব্রাশ করে ফেলেন। ডানহাতিদের জন্য ডান হাত, বামহাতিদের জন্য বাঁ হাত। বিজ্ঞানী বলছেন, তার চেয়ে বরং নিজেকে একটু পরীক্ষার মধ্যে ফেলুন। যে হাত আপনার মুখ্য, তার উল্টো হাত দিয়ে ব্রাশ করতে হবে। তার কথায়, ‘যে প্রভাবশালী হাত নয়, সেটি ব্যবহার করলে আপনি অটোপাইলট মোড থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন।
বিজ্ঞাপন

আপনার মস্তিষ্ক আপনার প্রভাবশালী হাত দিয়ে কাজ করতে অভ্যস্ত হয়ে যায়। যার জন্য সচেতন প্রচেষ্টার প্রয়োজন তেমন পড়ে না। যেহেতু ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমানো মানে মস্তিষ্ককে চ্যালেঞ্জ করা, তাই আপনার মস্তিষ্ককে অপরিচিত কাজে নিয়োজিত করা প্রয়োজন।’
২. এক পায়ে দাঁড়ানো:
ব্রাশ করার সময়ে এক পায়ে দাঁড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন জুলস। ফলে বাড়বে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা। কোনো ব্যক্তি এক পায়ে কতক্ষণ ভর করে দাঁড়াতে পারছেন, তা তার দেহের ‘ফল টেস্ট’-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ ধরনের ভারসাম্য রক্ষার ভঙ্গিমায় মস্তিষ্কের সেরিবেলাম অংশ উজ্জীবিত হয়। এটি মস্তিষ্কের এমনই একটি অংশ, যা চলাফেরার সময়ে শরীর কী ভাবে কাজকর্ম করবে, তা নিয়ন্ত্রণ করে।

৩. উল্টো ক্রমে অক্ষরের সংখ্যা গোনা:
ব্রাশ করার সময় মনে মনে উল্টো গোনা অভ্যাস করতে বলছেন বিজ্ঞানী। এটি এমন এক ধরনের মস্তিষ্কের খেলা, যার জন্য নিরবচ্ছিন্ন মনোযোগের প্রয়োজন। কীভাবে করতে হবে, শিখিয়ে দিয়েছেন জুলস। ইংরেজি বর্ণমালার জেড থেকে এ পর্যন্ত মনে মনে বলতে হবে। তবে এর সঙ্গে সংখ্যাও জুড়ে দিতে হবে।
ধরা যাক, জেড বর্ণমালার ২৬তম অক্ষর আর এ বর্ণমালার প্রথম অক্ষর। জেড বলার সময়ে তার সঙ্গে ২৬-ও বলতে হবে। তার মানে ‘জেড ২৬’, ‘ওয়াই ২৫’— এই ভাবে ‘এ ১’ পর্যন্ত আসতে হবে।

এসব কিছুই ব্রাশ করার সময়ে করতে হবে। এই কাজটি করলে আপনার মস্তিষ্ক আরও কঠোর পরিশ্রম করবে। একই সময়ে দু’টি ক্রম বিপরীতভাবে সমন্বয়ে আসবে।
এনএম

