বর্তমানে বায়ুদূষণ ভয়াবহ স্বাস্থ্য সংকটের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সারাবছর বায়ুদূষণ যা থাকে, শীতে তা আরও মারাত্মক আকার ধারণ করে। কেননা, এসময় ধোঁয়াশা তৈরির কারণে প্রকৃতিতে বহু বিষাক্ত উপাদানের উপস্থিতি বেড়ে যায়। সম্প্রতি দিল্লির ‘নেতাজি সুভাষ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি’ (NSUT)-র নয়া গবেষণায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। এতে দেখা যাচ্ছে, একই পরিবেশে থাকলেও নারীদের তুলনায় পুরুষদের শরীরে বিষাক্ত বায়ু প্রবেশের আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে।
গবেষণা অনুযায়ী, পুরুষদের ফুসফুসে প্রতি সেকেন্ডে দূষিত কণা জমা হওয়ার হার (RDD) নারীদের চেয়ে অনেক বেশি। বিশেষ করে PM2.5 কণা, যা ফুসফুসের গভীরে ঢুকে রক্তে মিশে যেতে পারে। এতে পুরুষরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গবেষণায় পাওয়া তথ্য মতে, বসে থাকা অবস্থায় পুরুষদের ফুসফুসে দূষিত কণা জমা হওয়ার হার নারীদের চেয়ে ১.৪ গুণ বেশি। হাঁটা বা কায়িক পরিশ্রমের সময় এই হার প্রায় ১.২ গুণ।
বিজ্ঞাপন

বায়ু দূষণে পুরুষদের বেশি ক্ষতি হয় কেন?
এর পিছনে প্রধানত দুটি কারণ রয়েছে—বায়োলজিক্যাল বা শারীরিক গঠন এবং জীবনযাত্রার ধরন।
ফুসফুসের আয়তন:
সাধারণত পুরুষদের ফুসফুসের ধারণক্ষমতা বা ‘লাং ক্যাপাসিটি’ বেশি হওয়ায় তারা বেশি শ্বাসবায়ু গ্রহণ করেন।

বাইরে থাকার সময়:
কাজের প্রয়োজনে পুরুষদের দিনের দীর্ঘ সময় ঘরের বাইরে কাটাতে হয়। তাই তারা সরাসরি বিষাক্ত ধোঁয়া ও ধূলিকণার সংস্পর্শে আসতে বাধ্য হয়।
অক্সিডেটিভ স্ট্রেস:
কিছু আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা গেছে, দূষণের ফলে পুরুষদের শরীরে যে ‘অক্সিডেটিভ স্ট্রেস’ এবং ‘নিউরোট্রান্সমিটার ইনফ্লামেশন’ বা স্নায়বিক প্রদাহ হয় তা নারীদের তুলনায় বেশি। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষেত্রে মস্তিষ্কে ক্যানসারের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।

চিকিৎসকদের পরামর্শ
দূষণজনিত কারণে ক্রমাগত কাশি, বুকে টান বা শ্বাসকষ্টকে সাধারণ সমস্যা ভেবে এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয়। এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত একজন পালমোনোলজিস্ট বা বক্ষরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। বিশেষ করে যারা শহর এলাকায় থাকেন বা বাইরে ভারী কাজ করেন, তাদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন প্রয়োজন।
এনএম

