ডিসেম্বর মানেই উৎসব, ছুটি আর নতুন বছরের অপেক্ষা। কিন্তু এই আনন্দের আড়ালেই অনেক মানুষের জীবনে বাড়ে এক ধরনের অদৃশ্য মানসিক চাপ। বিশেষজ্ঞরা একে ‘ইয়ার-এন্ড ব্লুজ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। বছরের শেষ মাসে কেন হতাশা, ক্লান্তি ও অস্থিরতায় ভোগার প্রবণতা বেড়ে যায়? করণীয়ই বা কী?
ইয়ার-এন্ড ব্লুজ কী?
ইয়ার-এন্ড ব্লুজ বলতে বোঝানো হয়—বছর শেষ হওয়ার সময় নিজের অর্জন, ব্যর্থতা, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে এক ধরনের মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা। মনোরোগ বিশেষজ্ঞের মতে, ডিসেম্বর এলেই মানুষ নিজের জীবনকে অজান্তেই হিসাবের খাতায় ফেলে দেয়। সেখান থেকেই শুরু হয় চাপ।

ডিসেম্বরে মানসিক চাপ বেশি হয় কেন?
বিশেষজ্ঞদের মতে, কয়েকটি কারণে এই মাসে মানসিক অস্বস্তি বাড়ে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো—
বিজ্ঞাপন
- বছরের লক্ষ্য পূরণ না হওয়ার হতাশা
- অফিসে কাজের চাপ ও ইয়ার-এন্ড ডেডলাইন
- পারিবারিক ও সামাজিক প্রত্যাশা
- নতুন বছর নিয়ে অনিশ্চয়তা
- শীতকালে সূর্যালোক কম পাওয়া, যা মুডে প্রভাব ফেলে
চাকরিজীবী ও তরুণদের মধ্যে এই চাপ বেশি লক্ষ্য করা যায়।

কী ধরনের লক্ষণ দেখা যায়?
ডিসেম্বরে যেসব মানসিক লক্ষণ বাড়তে পারে—
- অকারণ মন খারাপ
- ঘুমের সমস্যা
- কাজে মনোযোগ কমে যাওয়া
- অতিরিক্ত ক্লান্তি
- নিজেকে অন্যদের সঙ্গে তুলনা করার প্রবণতা
অনেক ক্ষেত্রে মানুষ এটিকে সাধারণ মন খারাপ ভেবে এড়িয়ে যায়, যা পরে দীর্ঘস্থায়ী সমস্যায় রূপ নিতে পারে।

চাপের কারণ সোশ্যাল মিডিয়াও
এসময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভ্রমণ, সাফল্য ও উৎসবের ছবি দেখে অনেকেই নিজেকে পিছিয়ে পড়া মনে করেন।
মানসিক চাপ কমানোর উপায়
- বছরের অর্জন–ব্যর্থতা বাস্তবভাবে মূল্যায়ন করা
- সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার সীমিত রাখা
- পর্যাপ্ত ঘুম ও হালকা ব্যায়াম
- নিজের সঙ্গে নিজের তুলনা করা, অন্যের সঙ্গে নয়
- প্রয়োজনে কাউন্সেলিং নেওয়া
- নতুন বছরের আগে নিজের প্রতি যত্ন জরুরি

ডিসেম্বর মানেই নিজেকে দোষারোপ করার সময় নয়, বরং নিজের সীমাবদ্ধতাকে বোঝার সময়—এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। মানসিকভাবে সুস্থ থাকলেই নতুন বছরকে ইতিবাচকভাবে শুরু করা সম্ভব। তাই মনের ওপর চাপ কমান।
এনএম

