উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে গেলেই শুনতে হয়, লবণ না খাওয়ার বিধিনিষেধ। কিন্তু লবণ কম খেয়েও লাভ হচ্ছে না। কেবল রক্তচাপ নয়, কিডনির জন্যও অতিরিক্ত সোডিয়াম বিপজ্জনক। সেজন্য অনেকে হয়ত বিজ্ঞাপন দেখে ‘লো সোডিয়াম’ লবণ খাওয়া শুরু করেছেন। কেউবা খাচ্ছেন সৈন্ধব লবণও।
বিগত কয়েক বছরে স্বাস্থ্য সচেতন অনেক ব্যক্তির হেঁশেলে পাকাপাকিভাবে জায়গা করে নিয়েছে হিমালয়ান পিংক সল্ট। অধিকাংশের মতে, রান্নায় এই লবণ ব্যবহার করলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু পুষ্টিবিদরা কী বলছেন? সাধারণ লবণের বদলে এই গোলাপি লবণ কি আসলেই কাজের? না কি পুরোটাই ভ্রান্ত ধারণা।
বিজ্ঞাপন

পিংক সল্টের উপকারিতা
সাধারণ লবণের তুলনায় পিংক বা রক সল্টে খনিজের পরিমাণ বেশি। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম এবং ক্যালশিয়ামের মতো খনিজ থাকার কারণেই এই লবণের রং লালচে-গোলাপি হয়। পিংক সল্ট প্রসেসড নয়। তাই সাধারণ লবণের চাইতে স্বাস্থ্যকরও বটে। এটি শরীরে ইলেক্ট্রলাইটের সমতা বজায় রাখতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে।
পিংক সল্ট কি রক্তচাপ কমায়?
তবে বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী, গঠনগত দিক থেকে হিমালয়ান পিংক সল্ট এবং সাধারণ লবণ আসলে একই। কেমিক্যাল বেস সোডিয়াম ক্লোরাইড। আর ঠিক এই কারণেই রক্তচাপের ওপর পিঙ্ক সল্টের আলাদা কোনো প্রভাব খাটে না। পুষ্টিবিদরা বলছেন, এক টেবিল চামচ টেবিল সল্ট আর এক টেবিল চামচ পিংক সল্টে সোডিয়ামের পরিমাণ কম-বেশি একই।

যদি কেউ ভাবেন সাধারণ লবণের বদলে নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে খানিক বেশি পিংক সল্ট খেলে তেমন কোনো সমস্যা হবে না, তাহলে আপনার ধারণা ভুল। সাধারণ লবণ খেলে যদি রক্তের চাপ বাড়ে তা হলে পিঙ্ক সল্ট খেলেও বাড়বে। উল্টো পিঙ্ক সল্টের মধ্যে থাকা বাড়তি খনিজের কারণে ওয়াটার রিটেনশনের আশঙ্কা থাকবে। শরীরে ফ্লুইডের হেরফের হলে রক্তচাপের ওপর তার প্রভাব পড়ে। রক্তের পরিমাণ, প্রবাহ বেড়ে গেলে রক্তজালিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রক্তের চাপও বাড়তে থাকে।
হার্ট কিংবা কিডনি ভালো রাখতে চাইলে খাবারে সোডিয়ামের পরিমাণ কমাতে হবে। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম কার্যকরী। তবে সোডিয়াম ক্লোরাইডের বদলে যদি রান্নায় পটাশিয়াম ক্লোরাইড-যুক্ত লবণ ব্যবহার করেন তাতে কিছুটা উপকার মিলতে পারে।
এনএম

