বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

লাডিউ টোপিয়ারি গার্ডেনস: গাছের গল্প, ফুলের গল্প

মীম নোশিন নাওয়াল খান 
প্রকাশিত: ০৬ জুলাই ২০২২, ০৯:৩৯ এএম

শেয়ার করুন:

লাডিউ টোপিয়ারি গার্ডেনস: গাছের গল্প, ফুলের গল্প

‘টোপিয়ারি’ বিশ্বজুড়ে খুব জনপ্রিয় একটা শিল্প। বাগানের গাছকে ছেঁটে বিভিন্ন আকৃতি দেয়ার শিল্প হচ্ছে টোপিয়ারি। বাংলাদেশে বিভিন্ন জায়গায় নানা আকৃতিতে ছেঁটে রাখা যেসব গাছ দেখা যায়, সেগুলোও কিন্তু টোপিয়ারি। গেটিসবার্গ থেকে দেড় ঘণ্টা দূরে ম্যারিল্যান্ডের মংকটন এলাকায় আছে খুব জনপ্রিয় একটা টোপিয়ারি গার্ডেন, যার নাম লাডিউ টোপিয়ারি গার্ডেনস। ১৯৩০-এর দশকে হার্ভে লাডিউ নামে একজন শিকারী এই বাগানের নকশা করেন এবং বাগানটি তৈরি করেন। 

আর্কিটেকচারাল ডাইজেস্ট ২২ একর জায়গা জুড়ে থাকা এই বাগানকে বিশ্বের সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ১০টি টোপিয়ারি বাগানের তালিকায় রেখেছে। গার্ডেন ক্লাব অব আমেরিকা ‘উত্তর আমেরিকার শীর্ষ পাঁচটি বাগান’-এর তালিকায় রেখেছে এই বাগানকে, সঙ্গে দিয়েছে উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে সবচেয়ে চমৎকার টোপিয়ারি বাগানের মর্যাদা। এত এত প্রশংসা যে জায়গার, সেখানে না গেলে কি চলে? তাই গত রবিবার রওনা হলাম লাডিউ টোপিয়ারি গার্ডেনসের উদ্দেশ্যে।


বিজ্ঞাপন


gardenএই বাগানে ঢুকতে টিকিট কাটতে হয়। পূর্ণবয়স্কদের জন্য টিকিট মূল্য জনপ্রতি ১৫ ডলার, তবে শিক্ষার্থী বলে আমাদের টিকিট জনপ্রতি ১০ ডলার। টিকিট কাউন্টার থেকে আমাদেরকে একটা স্টিকার দেয়া হলো, যা দেখে বোঝা যাবে আমরা টিকিট কেটেছি। সাথে দেয়া হলো একটা ম্যাপ। 

ঢুকতেই প্রথমে চোখে পড়ল কয়েকটা শিকারী কুকুর আর ঘোড়ায় চড়া একজন শিকারী আকৃতির টোপিয়ারি। সেখান থেকে এগুলে একে একে রয়েছে ১৫টির অধিক ছোট ছোট বাগান। প্রতিটা বাগান একটা নিরদিষ্ট বিষয়ের উপর- হয় নির্দিষ্ট কোনো ধরনের গাছ বা কোনো নির্দিষ্ট রং, যেমন বেরি বাগান, গোলাপ বাগান, শাপলা বাগান, গোলাপি রঙের ফুলের বাগান, হলুদ ফুলের বাগান, ইত্যাদি। আমরা যে সময়টায় গিয়েছি, সে সময়টায় গোলাপ গাছগুলোতে কেবল কুঁড়ি আসতে শুরু করেছে, ফুল ফোটেনি এখনও। তবে শাপলা বাগানে নানা রঙের শাপলা চোখে পড়ল। প্রতিটা বাগানেই নানা ধরনের ভাস্কর্য আছে, সাথে প্রায় সব বাগানেই আছে ফোয়ারা। 

gardenএত বড় বাগানের পুরোটা ঘুরে শেষ করা সম্ভব হলো না সময়স্বল্পতায়। আমরা গিয়েছিলাম দুপুর দুটোর দিকে। বাগানটা বন্ধ হয় বিকেল চারটায়। দুই ঘণ্টায় যতটা ঘোরা সম্ভব ঘুরে নিলাম। এমন মনোরম, সবুজ পরিবেশ মনের প্রশান্তি আনে। তাই প্রচণ্ড গরমেও বেশ শান্তি শান্তি লাগছিল। বাগান ছাড়াও লাডিউ গার্ডেনসে ১৮০০-শতাব্দীর একটি বাড়ি আছে, যার নাম ম্যানর হাউজ। এই বাড়িটিও একটি পর্যটন আকর্ষণ, বিশেষত এখানের ডিম্বাকৃতির লাইব্রেরি। তবে সময়স্বল্পতায় বাড়িটি ঘুরে দেখা হলো না আমাদের। বাগান থেকে বেরিয়ে আসার আগে আমরা ঢুকলাম এখানের গিফট শপে, যেখানে বিভিন্ন ধরনের স্যুভেনির কেনার সুযোগ রয়েছে পর্যটকদের। আমি একটি ফ্রিজ ম্যাগনেট কিনে নিলাম। অতঃপর প্রাণজুড়ানো শীতল সবুজ বাগান থেকে বেরিয়ে ফিরে এলাম গ্রীষ্মের গরম দুপুরের বাস্তবতায়। 

এজেড

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর