বর্তমানে অসংখ্য মানুষ ভুগছেন কিডনিজনিত জটিলতায়। শরীরের এই অঙ্গের সমস্যা হলে যে উপসর্গগুলো দেখা দেয় তা বেশিরভাগ মানুষ এড়িয়ে চলেন। একটি চামচের সাহায্যেই পরীক্ষা করতে পারেন আপনার কিডনির কী হাল। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনই একটি হ্যাক জনপ্রিয় হয়েছে। কীভাবে এই পরীক্ষা করবেন, এই দাবি কতটা বৈজ্ঞানিক চলুন জেনে নেওয়া যাক-
চামচ দিয়ে কীভাবে পরীক্ষা করবেন?
একটি পরিষ্কার স্টিলের চামচ নিন। চামচটির পেছনের অংশ আপনার জিভের ওপর আলতো করে ঘষুন, যাতে চামচের ওপর লালার (Saliva) একটি পাতলা স্তর তৈরি হয়।
এবার এই লালাযুক্ত চামচটি একটি পরিষ্কার প্লাস্টিকের ব্যাগের মধ্যে রাখুন। ব্যাগটিকে এক মিনিট ধরে উষ্ণ কোনো স্থানে রাখুন (যেমন বাল্বের কাছাকাছি বা হালকা রোদে)।
এক মিনিট পর চামচটি বের করে গন্ধ ও রং পর্যবেক্ষণ করুন।
বিজ্ঞাপন

চামচ পরীক্ষা দিয়ে কিডনি হাল বুঝবেন কী করে?
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, চামচের লালার গন্ধ এবং রং পরিবর্তন দেখে শরীরের বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ অঙ্গের স্বাস্থ্য বোঝা যায়।
তীব্র বা মিষ্টি গন্ধ:
যদি চামচ থেকে অস্বাভাবিক তীব্র বা মিষ্টি গন্ধ আসে, তবে তা রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিতে পারে। অর্থাৎ এটি ডায়াবেটিসের পূর্বলক্ষণ হতে পারে।

অ্যামোনিয়ার মতো গন্ধ (মূত্রের মতো):
যদি চামচের লালা থেকে অ্যামোনিয়া বা মূত্রের মতো তীব্র গন্ধ আসে, তবে এটি কিডনি বা মূত্রতন্ত্রের সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। এর কারণ হলো, কিডনি সঠিকভাবে বর্জ্য পদার্থ (যেমন ইউরিয়া) শরীর থেকে বের ব্যর্থ হলে সেই পদার্থ লালার মাধ্যমে নির্গত হতে পারে।
ফল-পচা গন্ধ (Fruity Smell):
লালা থেকে এমন গন্ধ অ্যাসিটোনের উপস্থিতির কারণে হতে পারে। এটি কিটো অ্যাসিডোসিসের (ডায়াবেটিসের গুরুতর জটিলতা) লক্ষণ।

ফ্যাকাশে বা হলুদ আস্তরণ:
লালার রং যদি অস্বাভাবিক ফ্যাকাশে বা হলুদ দেখায় তাহলে তা লিভার সংক্রান্ত কোনো সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।
আরও পড়ুন-
বৈজ্ঞানিক সত্যতা ও সতর্কতা
যদিও এই পদ্ধতিটি ইন্টারনেটে ব্যাপক প্রচলিত, তবে আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান এই ‘চামচ পরীক্ষা’-কে কিডনি বা অন্য কোনো অঙ্গের রোগ নির্ণয়ের জন্য বিশ্বাসযোগ্য এবং প্রমাণ-ভিত্তিক পদ্ধতি হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না।
মুখে দুর্গন্ধ বা লালার গন্ধের পরিবর্তন অনেক সাধারণ কারণে হতে পারে। খারাপ মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য, গন্ধযুক্ত খাবার খাওয়া, ধূমপান বা ডিহাইড্রেশনের কারণেও মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে।

কিডনি বা লিভারের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের স্বাস্থ্য বোঝার জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উপায় হলো রক্ত পরীক্ষা (Blood Tests), মূত্র পরীক্ষা (Urine Tests) এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ।
এনএম

