জন্ডিসকে আমরা রোগ বলে জানলেও এটি আসলে কোনো রোগ নয়। রোগের লক্ষণ মাত্র। রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে এই সমস্যা দেখা দেয়।
মানব দেহের রক্তের লোহিত কণিকাগুলো একটি নির্দিষ্ট সময় পরে ভেঙে গিয়ে বিলিরুবিন তৈরি করে। পরবর্তীতে যা লিভারে প্রক্রিয়াজাত হয়ে পিত্তরসের সাথে পিত্তনালীর মাধ্যমে পরিপাকতন্ত্রে প্রবেশ করে। অন্ত্র থেকে পায়খানা বা মলের মাধ্যমে বিলিরুবিন শরীর থেকে বের হয়ে যায়। এই পুরো যাত্রায় কোনো অসঙ্গতি দেখা দিলে রক্তে বিলিরুবিন বেড়ে যায় এবং জন্ডিস দেখা দেয়। আগে একে পাণ্ডুরোগও বলা হতো।
বিজ্ঞাপন
জন্ডিসের উল্লেখযোগ্য উপসর্গ হলো ত্বক, চোখ ও নখ হলদেটে হয়ে যাওয়া, প্রস্রাব হলুদ হওয়া এবং চুলকানি। এছাড়াও ক্লান্তি, পেটে ব্যথা, ওজন হ্রাস, বমি ইত্যাদি লক্ষণও রয়েছে। জন্ডিসের নানা চিকিৎসা রয়েছে। তবে ন্যাশনাল হেলথ পোর্টাল (NHP) রোগটির জন্য বিভিন্ন পাতার সাহায্য নিতে বলেছে। এই পাতাগুলো ব্যবহারে উপকার পেতে পারেন।
অড়হর পাতা
গ্রাম্য এই ডালের পাতাটি জন্ডিস চিকিৎসায় উপকারি। পাতা বেটে রস বের করে রোজ ৬০ মিলি খেলে বিলিরুবিনের মাত্রা কমে আসে। সেসঙ্গে খাদ্যতালিকায় পুষ্টিকর খাবারও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
করলা পাতা
বিজ্ঞাপন
তিতা স্বাদের করলা পাতাও এই সমস্যা সমাধানে ব্যবহার করতে পারেন। ৭-১০টি পাতা এক কাপ পানিতে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে নিন। কিংবা আধা লিটার পানিতে ১০-১৫ মিনিট ধরে পাতা ফুটিয়ে নিন। এই পানীয় দিনে তিনবার পান করুন। জন্ডিসের বেশ কার্যকরী চিকিৎসা এটি।
মূলা পাতা
কয়েকটি মূলা পাতা পরিষ্কার করে বেটে ছেঁকে নিন। এই রস রোজ আধা লিটার করে পান করলে দিন দশেকের মধ্যেই জন্ডিসের সমস্যা সারবে।
পেঁপে পাতা
ন্যাশনাল হেলথ পোর্টালে (NHP) প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী জন্ডিসের চিকিৎসায় পেঁপে পাতা বেশ কার্যকরী। এক চা চামচ পেঁপে পাতার পেস্টে সঙ্গে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে এক সপ্তাহ নিয়মিত খেতে হবে। কার্যকরী ঘরোয়া প্রতিকার এটি।
তুলসি পাতা
কেবল কাশি বা ঠান্ডা নয়, জন্ডিসের ক্ষেত্রেও উপকারি ভূমিকা রাখে তুলসি। ১০-১৫টি তুলসি পাতা বেটে পেস্ট তৈরি করে নিন। এক সঙ্গে আধা গ্লাস সদ্য প্রস্তুত মূলার রস যোগ করুন। টানা দুই থেকে তিন সপ্তাহ পানে উপকার মিলবে।
জন্ডিস সারাতে হাতের কাছে থাকা এসব পাতা ব্যবহার করতে পারেন। তবে রোগীর কোনো উন্নতি না হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
এনএম

