শরীরে কী রোগ বাসা বেঁধেছে তা সবসময় বোঝা যায় না। বিশেষ করে কিডনির অসুখের উপসর্গগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়ে না। অনেকক্ষেত্রে এমনও দেখা যায় যে একটি কিডনি বিকল হলেও অন্যটি দিয়ে কাজ চলতে থাকে। তাই ক্ষতির পরিমাণ বাইরে থেকে আঁচ করা যায় না।
কিডনির সমস্যা বলতে অনেকে পাথর জমা বোঝে। কিন্তু কিডনিতে পাথর জমা ছাড়াও অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেকে ভাবেন, কিডনির সমস্যা মানে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, বার বার মূত্রনালিতে সংক্রমণ হওয়া, তলপেটে ব্যথা হওয়া। কিন্তু এমনটা নাও হতে পারে। কিডনি রোগের আরও কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। সেগুলো কী কী?
বিজ্ঞাপন

১. চোখের নিচে ফোলা ভাব:
চোখের নিচে ফোলাভাব মানেই ক্লান্তির ছাপ নয়। যদি দেখেন পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়ার পরও চোখের নিচের অংশের চামড়া অস্বাভাবিকভাবে ফুলে আছে তাহলে সাবধান হোন। পায়ের পাতা ফুলে গেলেও তা এড়িয়ে যাবেন না।
কিডনির রোগ থাকলে শরীরে অতিরিক্ত পানি জমে। এই কারণে চোখের নিচ, পা ফুলে যেতে পারে।
বিজ্ঞাপন

২. অতিরিক্ত ঝিমুনিভাব:
শরীরে অতিরিক্ত ক্লান্তি ভাব, অস্বাভাবিক ঝিমুনি ভালো লক্ষণ নয়। চিকিৎসকদের মতে, কিডনির সমস্যা হলে হরমোনে গোলমাল দেখা দেয়। চিকিৎসকদের মতে, এরিথ্রোপয়েটিন নামে এক ধরনের হরমোনের ক্ষরণ হয় কিডনি থেকে। এই হরমোনটি শরীরে লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা নেয়।
কিডনির রোগ হলে এই হরমোনের ক্ষরণ কমে যায়। ফলে লোহিত কণিকার সংখ্যাও কমতে থাকে। এতে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত কোষে কোষে পৌঁছতে দেরি হয়। যার জেরে শরীরে ক্লান্তিভাব বাড়ে, চামড়া ফ্যাকাসে হতে শুরু করে।

৩. পেশির খিঁচুনি:
হাত-পা, পেট, পিঠ, ঊরুর পেশিতে যদি ক্রমাগত খিঁচুনি হয় তাহলে বুঝতে হবে কিডনি ঠিকমতো কাজ করছে না। কিডনির কাজ হলো শরীরে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়ামের মতো খনিজ উপাদানগুলোর ভারসাম্য বজায় রাখা। সেটি ঠিকমতো কাজ না করলে পটাশিয়াম ও সোডিয়ামের মাত্রা বাড়তে থাকে। ফলে খনিজ উপাদানগুলির ভারসাম্য বিগড়ে গিয়ে পেশির খিঁচুনি শুরু হয়।
যখন তখন পায়ের পেশিতে টান ধরা, কোমর বা পিঠে যন্ত্রণা হওয়া, বসে থাকলে পায়ের কাফ মাসলে ব্যথা হওয়া, ঊরুতে অস্বাভাবিক ব্যথা হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিলে সতর্ক হোন। এগুলো কিডনি সমস্যার ইঙ্গিত দেয়।
এনএম

