তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তা স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে শুরু করে। দেখা দেয় নানা স্বাস্থ্য সমস্যা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু সমস্যা হলো: ডিহাইড্রেশন, তাপপ্রবাহ, তাপদাহ, ডায়রিয়া, খাদ্যে বিষক্রিয়া, পায়ের তলায় জ্বালাপোড়া ইত্যাদি।
গরমে পায়ের তলায় জ্বালা সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু এমন যদি হয় যে আপনার পায়ের তলায় সবসময় জ্বালাপোড়া করে এবং তা রাতের বেলায় বৃদ্ধি পায় তাহলে এটি উপেক্ষা করা মোটেও উচিত নয়। এটি আরও অনেক রোগের লক্ষণ হতে পারে। এই সমস্যাকে বার্নিং ফিট সিনড্রোম বলা হয়।
বিজ্ঞাপন

বার্নিং সিনড্রোম কী, এর লক্ষণ কী? এই সমস্যার কারণ কী, চিকিৎসাই বা কী? চলুন জানা যাক-
বার্নিং ফুট সিনড্রোম কী?
পায়ের তলায় জ্বালাপোড়া, ভারী ভাব, অসাড়তা বা খোঁচা দেওয়ার অনুভূতিকে বার্নিং ফিট সিনড্রোম (বিএফএস) বলা হয়। এই সমস্যায় ভোগা ব্যক্তির পায়ে সবসময় জ্বালাপোড়া এবং ব্যথা থাকে। কখনও কখনও এই ব্যথা গোড়ালি এবং নীচের পাতেও ছড়িয়ে পড়ে। বয়স্ক ব্যক্তিরা এই সমস্যায় বেশি ভোগেন।
বিজ্ঞাপন

বার্নিং ফিট সিনড্রোমের লক্ষণ:
- পায়ের তলায় জ্বালাপোড়া এবং হুল ফোটানোর অনুভূতি হওয়া
- পা ভারী লাগা বা অবশ লাগা
- রাতে জ্বালাপোড়া এবং ব্যথা বৃদ্ধি পাওয়া
- পায়ের তলা লাল হয়ে যাওয়া এবং গরম অনুভূত হওয়া

বার্নিং ফিট সিনড্রোমের কারণ:
ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি: স্নায়ুর ক্ষতির কারণে হয় এমনটা হয়। যা টাইপ ১ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস উভয়েরই একটি জটিলতা। এই সমস্যায় ভুগছেন এমন একজন ব্যক্তির পায়ের তলায় জ্বালাপোড়ার মতো লক্ষণগুলো অনুভব করতে পারেন। পাশাপাশি দেখা দিতে পারে হাত ও পায়ে ব্যথা, ঝিনঝিন ও অসাড়তার অনুভূতি হতে পারে।
পুষ্টির অভাব: কখনও কখনও শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি হলে পায়ের পাতা জ্বালাপোড়া করে। ভিটামিন বি১২, বি৬ এবং ফোলেট (ভিটামিন বি৯) এর অভাবের কারণেও পায়ের তলায় জ্বালাপোড়া সৃষ্টি হতে পারে। যদি কোনো ব্যক্তির শরীর সঠিকভাবে পুষ্টি শোষণ করতে না পারে, তাহলে স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং পায়ের তলায় উষ্ণতা বৃদ্ধির ঝুঁকি বেড়ে যায়।

সংক্রমণ: অ্যাথলিটস ফুটের মতো ছত্রাকজনিত সংক্রমণের কারণেও পায়ের তলায় জ্বালা সৃষ্টি হতে পারে। এটি টিনিয়া পেডিস নামেও পরিচিত।
মেনোপজ: কখনও কখনও নারীদের মেনোপজের কারণে হরমোনের পরিবর্তনও হতে পারে। যার ফলে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং পা উষ্ণ থাকে।

গর্ভাবস্থা: গর্ভাবস্থায় পায়ের তলা জ্বলা একটি স্বাভাবিক সমস্যা। এসময় প্রোজেস্টেরন ও রিলাক্সিন হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে এবং পায়ের রক্তনালীগুলিকেও প্রভাবিত করতে পারে। এতে পায়ের তলায় তাপের অনুভূতি হয়।
পায়ের তলার তাপ দূর করার উপায়:
ভিটামিন বি এর ঘাটতি পূরণ করতে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে পরিপূরক গ্রহণ করুন।

ঠান্ডা পানিতে ১৫ মিনিট পা ভিজিয়ে রাখুন। এই নিয়ম মানলে পায়ের জ্বালাপোড়া কমতে পারে।
জ্বালাপোড়া না কমলে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। হতে পারে এটি অন্য কোনো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার ইঙ্গিত।
এনএম

