ব্যস্ত জীবন, রোজকার খাদ্যাভ্যাস আর অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা সবার জীবনেই খারাপ প্রভাব ফেলছে। বর্তমানে নানা শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। এর মধ্যে অন্যতম হলো ইউরিক অ্যাসিডের বৃদ্ধি। একসময় কেবল বয়স্ক ব্যক্তিদের এই সমস্যা দেখা যেত। কিন্তু বর্তমানে ২৫-৪০ বছর বয়সীদের মধ্যে জয়েন্টে ব্যথা, ফোলাভাব, গাঁটের ব্যথার মতো সমস্যা দেখা দেয়। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে গরমকালে কি ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়ে?
গরমে কি ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি পায়:
চিকিৎসকদের মতে, গ্রীষ্মে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে। এর প্রধান কারণ হলো শরীরে জলের অভাব। গ্রীষ্মে অতিরিক্ত ঘাম হলে এবং পর্যাপ্ত পানি পান না করলে শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের ঘনত্ব বেড়ে যায়। এছাড়াও, গ্রীষ্মকালে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন এবং মিষ্টি পানীয় খেলেও এই ব্যালেন্স নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

গ্রীষ্মকালে মানুষ ঠান্ডা শরবত, প্যাকেটজাত জুস এবং ঠান্ডা পানীয় বেশি খায়। এসব খাবারে ফ্রুক্টোজের পরিমাণ বেশি থাকে। আর এই ফ্রুক্টোজ ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়ায়।
এছাড়াও গ্রীষ্মকালে আমিষ খাবার, ভাজা খাবার এবং উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া হয়। এসব খাবারও ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি করতে পারে।
বিজ্ঞাপন

গ্রীষ্মকালে, তীব্র সূর্যালোক এবং তাপের ভয়ে, মানুষ ঘরের ভেতরে থাকতে এবং শারীরিক কার্যকলাপ কমাতে পছন্দ করে। ফলে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। যা ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধির আরও একটি কারণ হয়ে উঠতে পারে।
ইউরিক অ্যাসিড বেশি হলে কী হয়:
- জয়েন্টে ব্যথা এবং ফোলাভাব
- হাঁটতে অসুবিধা
- ক্লান্তি এবং দুর্বলতা
- রাতে ব্যথা বেড়ে যাওয়া
- প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া বা বাধা
- ত্বকে লালভাব বা জ্বালা
গরমকালে ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণের উপায়
১. পর্যাপ্ত পানি পান করুন:
সারাদিনে কমপক্ষে আড়াই থেকে ৩ লিটার পানি পান করুন। এটি ইউরিক অ্যাসিড দ্রবীভূত করতে এবং প্রস্রাবের মাধ্যমে নির্গত করতে সাহায্য করে।
২. খাদ্যাভ্যাসের প্রতি মনোযোগ দিন:
আমিষ খাবার, বিয়ার, রেড মিট (গরু ও খাসির মাংস) এবং ভাজা খাবার এড়িয়ে চলুন। সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, গোটা শস্য এবং কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার খান। ফ্রুক্টোজ এবং চিনি সমৃদ্ধ পানীয় এড়িয়ে চলুন।

৩. ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন:
ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি করে স্থূলতা। তাই গ্রীষ্মকালেও হালকা ব্যায়াম, যোগব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি করতে থাকুন।
৪. নিয়মিত চেকআপ করান:
যদি আপনার ইতোমধ্যেই ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা থাকে অথবা পরিবারের কারো এই সমস্যা থাকে, তাহলে প্রতি ৩ থেকে ৬ মাস অন্তর রক্ত পরীক্ষা করে এর মাত্রা পরীক্ষা করে দেখুন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
এনএম


