ঘরের প্রাচীর কিংবা বেড়া, অবহেলিত কোনো ঝোপঝাড় কিংবা বাগান। সব জায়গাতেই লতানো একটি উদ্ভিদ দেখা যায়। কিছুটা কোঁকড়ানো সবুজ পাতার আড়ালে উঁকি দেয় সফেদ ফুল। দেখতে পটলের মতো ফলও হয় যা পাকলে টুকটুকে লাল হয়ে যায়। পাখিরা এই ফল খেয়ে থাকে। বলছিলাম তেলাকুচার কথা।
গ্রাম থেকে শুরু করে শহর— সবখানেই অবহেলায় বেড়ে ওঠা উদ্ভিদ তেলাকুচা। এটি কুদরি, তোড়নি শাক, কাউয়ালুলি নামে পরিচিত। অনেকে একে কুচিলা, টেন্ডুরা, কুদ্রা, তেলাহচি, কেলাকুচ নামেও চেনেন।
বিজ্ঞাপন

একটি লতানো উদ্ভিদ তেলাকুচা। এটি বাড়ির আশপাশে, রাস্তার পাশে, বন-জঙ্গলে জন্মায় এবং বংশবিস্তার করে। এই গাছের প্রচুর পরিমাণ ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে যা বেশিরভাগ মানুষেরই অজানা।
তেলাকুচার পাতা শাক হিসেবে খাওয়া যায়। কেউ কেউ এর ফল ও কচি ডগাও খেয়ে থাকেন। তেলাকুচার কাঁচা ফল ভাজি করে খাওয়া যায়।

বিজ্ঞাপন
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের মতে, তেলাকুচা অনন্য গুণাবলী সমৃদ্ধ এক প্রকারের ভেষজ উদ্ভিদ। এর পাতা, লতা, মূল ও ফল ভেষজ উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
নানা রোগের ওষুধ তেলাকুচা
তেলাকুচা ফলে আছে এনাফাইলেকটিক-রোধী এবং এন্টিহিস্টামিন জাতীয় উপাদান। এটি কুষ্ঠ, জ্বর, ডায়াবেটিস, শোথ হাঁপানি, ব্রংকাইটিস ও জন্ডিসের মতো রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

পেটের জন্য উপকারি তেলাকুচা
তেলাকুচা শাক খেলে খাবারের রুচি বাড়ে এবং পেটের গোলমাল কমে। পেটে সমস্যা এবং বদ হজমের সমস্যা কমাতে এই শাক কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
পরিপাক ক্রিয়া ভালো রাখে
তেলাকুচা পাতায় আছে থায়ামিন। এটি পরিপাক ক্রিয়ায় দারুণ সাহায্য করে থাকে। এছাড়া এই উপাদানটি কার্বহাইড্রেটকে গ্লুকোজে পরিণত করতে সাহায্য করে।

তেলাকুচার আরও কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা
তেলাকুচা পাতার রস রক্তের শর্করা কমাতে সাহায্য করে। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষ উপকারী। এর পাতার রস ত্বকের বিভিন্ন রোগ- খুশকি ও চুলকানি দূর করে কার্যকর ভূমিকা রাখে। জ্বর কমানোর কার্যকরী উপায় তেলাকুচা পাতা খাওয়া।
মূত্রনালির সংক্রমণ এবং কিডনির পাথর দূর করে রক্ত পরিশোধন করে তেলাকুচা। এটি শরীরকে বিভিন্ন ধরনের টক্সিক পদার্থ থেকে মুক্তি দেয়। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, অম্বল ও গ্যাসের সমস্যা কমায়।
সাবধানতা: তেলাকুচা ফলে যাদের অ্যালার্জি রয়েছে তাদের এটি খাওয়া উচিত নয়।
এনএম

