সুখের হরমোনের কথা আমরা কম-বেশি সবাই জানি। ডোপামিন, এন্ডোরফিন, সেরোটোনিন ইত্যাদিকে সুখের হরমোন বা হ্যাপি হরমোন বলা হয়। কিন্তু কখনো স্ট্রেস হরমোনের কথা শুনেছেন?
আমরা যখন খুব খুশি থাকি কিংবা মানসিক চাপে থাকি তখন শরীরের এসব আবেগ বা প্রতিক্রিয়ার পেছনে একটি হরমোন কাজ করে। সেই কর্টিসলকে আমরা স্ট্রেস হরমোন বলি।
বিজ্ঞাপন
এটি অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি দ্বারা উৎপাদিত একটি স্টেরয়েড হরমোন। একজন ব্যক্তি যখন চাপ অনুভব করেন তখন এটি মুক্তি পায়। কর্টিসলের অভাব ক্লান্তি, পেশী দুর্বলতা, নিম্ন রক্তচাপ, ক্ষুধা হ্রাস এবং ওজন হ্রাসের মতো লক্ষণগুলোর কারণ হতে পারে।
এই হরমোনটি রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ, প্রদাহ হ্রাস এবং প্রতিরোধ ব্যবস্থা পরিচালনার মতো অনেক শারীরিক কাজের সঙ্গে জড়িত। স্ট্রেস হরমোন বাড়লে কীভাবে তা নিয়ন্ত্রণ করবেন জানুন-

বিজ্ঞাপন
শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা
নিয়মিত শারীরিক ক্রিয়াকলাপ পুরো স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে কাজ করে। কর্টিসলের মাত্রা কমানোর কার্যকর উপায়গুলোর মধ্যে একটি হলো নিজেকে সক্রিয় রাখা। শারীরিক ব্যায়াম এন্ডোরফিন উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে, যা মেজাজ ভালো রাখে এবং চাপ কমায়। প্রতিদিন বা সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ দিন অন্তত ৩০ মিনিট পরিমিত ব্যায়াম করুন। এতে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কমবে স্ট্রেস হরমোন।
পর্যাপ্ত ঘুম
দীর্ঘস্থায়ী ঘুমের সমস্যা যেমন অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া বা অনিদ্রা উচ্চ কর্টিসলের কারণ হতে পারে। তাই রোজ ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ভালো ঘুমের চেষ্টা করুন। ঘুমের পরিবেশ যেন আরামদায়ক হয় সেদিকে নজর দিন। ঘুমানোর আগে স্ক্রিন টাইম কমিয়ে আনুন। দুপুরের পর ক্যাফেইন খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

স্বাস্থ্যকর খাবার খান
স্ট্রেসের লক্ষণগুলো কমাতে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাবার খাওয়া জরুরি। খাদ্যতালিকায় রাখুন গোটা শস্য, ফল, শাকসবজি, চর্বিহীন প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি সমৃদ্ধ খাদ্য। এগুলো সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। পাশাপাশি সুস্বাস্থ্য ও ঘুমের জন্য পর্যাপ্ত হাইড্রেশনেরও প্রয়োজন। তাই পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
এছাড়াও, খাদ্যতালিকায় কর্টিসল নিয়ন্ত্রণ করে এমন খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন। যেমন- ডার্ক চকলেট, বেরি এবং ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার যেমন মাছ এবং শণের বীজ। গবেষণায় দেখা গেছে, সুস্থ অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের মধ্যে একটি শক্তিশালী যোগসূত্র রয়েছে। তাই অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি এমন খাবার খাওয়া চাপ কমাতে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করে।
এনএম

