সভ্যতার গড়ে উঠেছে একটু একটু করে। মানুষ গুহা ছেড়ে বনে এসেছে। বন ছেড়ে এসেছে সমতল ভূমিতে। একসময় শুরু করেছে কৃষিকাজ। এরপর পশু পালন? ধীরে ধীরে গড়ে উঠেছে আধুনিক সভ্যতা। পশু বা প্রাণী পালনের ইতিহাসটা বেশ পুরনো। এখনও মানুষ হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগলসহ বিভিন্ন প্রাণী পালন করেন। যাদের গৃহপালিত বলা হয়।
নতুন এক গবেষণায় গবেষকরা জেনেছেন, কোন পরিস্থিতিতে এবং কবে মানুষ মুরগি পালন শুরু করে। যেভাবে বনে ঘুরে বেড়ানো মোরগ গৃহপালিত হয়ে উঠলো জানুন।
বিজ্ঞাপন
এই গবেষণায় উঠে এসেছে ৩৫০০ বছর আগে মুরগি পালনের সময়কার পরিস্থিতি। মুরগি প্রতিপালনের রীতি শুরু হয় এশিয়ায়। এরপর তা ধীরে ধীরে ছড়ায় পশ্চিমে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ধান চাষ শুরুর পর বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রাণী হয়ে ওঠে মুরগি। তখন অবশ্য পাখি শ্রেণীর প্রাণীটিকে অদ্ভুত প্রাণী হিসেবে বিবেচনা করা হতো। কালের বিবর্তনে সেই মুরগিই হয়ে উঠেছে জনপ্রিয় খাবার। প্রোটিনের অন্যতম উৎস।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় শুকনো ধান চাষ শুরু হওয়ার পর বাড়তে শুরু করে মুরগিদের পূর্বপুরুষ রেড জঙ্গল ফাউলের সংখ্যা। তাদের প্রধান খাবার হয়ে ওঠে শুকনো চাল। খাবারের সন্ধানে তারা আসতে শুরু করে লোকালয়ে। মানুষের সঙ্গে তাদের সহচর্য বাড়তে থাকে।
খ্রীষ্ট পূর্ব ১৫০০ সালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রথম মুরগি প্রতিপালন শুরু হয়। সেখান থেকে ভূমধ্যসাগরীয় এলাকায় ব্যবসার উদ্দেশে মুরগি নিয়ে যাওয়া শুরু হয়। প্রথমদিকে কিন্তু এই প্রাণিটি খাওয়া হতো না। ইউরোপে লৌহ যুগে মুরগির পূজা করা হতো।
বিজ্ঞাপন
মুরগির মাংস ও ডিম খাওয়ার প্রচলন শুরু হয় রোমান সাম্রাজ্য থেকে। তখন থেকে বর্তমান পর্যন্ত দৈনন্দিন খাবারের অংশ হয়ে গিয়েছে এগুলো।
গবেষক দল ৮৯টি দেশের ৬০০টি জায়গায় পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়েছিলেন। তারা মুরগির কঙ্কালের হাড়ের পরীক্ষা করেন। থাইল্যান্ড থেকে একটি মুরগির হাড় উদ্ধার হয়েছে যা খ্রীষ্ট পূর্ব ১৬৫০ সালের।
গবেষকদের মতে, সমুদ্রপথে ব্যবসায়ীদের মাধ্যমেই ওশিয়ানিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে মুরগি ছড়িয়ে পড়ে।
এনএম