ঘর থেকে বের হতে ৫ মিনিট দেরি হলেও অফিসে আর সময়মতো পৌঁছানো যায় না। বসে বকা শুনতে হয়, মাস শেষে বেতন থেকে কাটা হয় লেইট ফাইন। তাই দ্রুত অফিসে পৌঁছাতে সকালের নাশতা খাওয়া হয় নামমাত্র সময়ে। অফিসে কাজের ফাঁকে দুপুরের খাবারও তাই।
কিন্তু এমন তাড়াহুড়া করে খাওয়া কি ভালো? চিকিৎসকরা বলছেন- ‘না’। ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, খুব তাড়াতাড়ি খাবার খাওয়ার অভ্যাস নানাভাবে শরীরের ক্ষতি করে।
বিজ্ঞাপন

তাড়াতাড়ি খাওয়ার অভ্যাস কীভাবে শরীরে প্রভাব ফেলে?
গবেষকরা বলছেন, তাড়াতাড়ি খেলে রক্তে ইনসুলিনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। সাধারণত খাবার যখন চিবিয়ে খাওয়া হয়, তখন তা ছোট ছোট টুকরোয় ভেঙে লালারসে মিশে গিয়ে পৌছায় পাকস্থলীতে। লালারসে থাকা অ্যামাইলেজ উৎসেচক কার্বোহাইড্রেট বিপাকে সাহায্য করে। কিন্তু তাড়াহুড়ায় যদি খাবার চিবিয়ে খাওয়া না হয় তাহলে খাবারের বড় বড় টুকরো গিয়ে পৌঁছয় পাকস্থলীতে। তখন অ্যামাইলেজ ঠিকমতো কাজ করতে পারে না।
তাছাড়া পাকস্থলীতে গিয়ে সেই খাবার পাচিতও হতে পারে না। ফলে খাবারের পুষ্টিরসের ঠিকমতো শোষণ হয় না। এতে এক দিকে যেমন পুষ্টির ঘাটতি থেকে যায়, তেমনই পাচিত না হওয়া খাবার মেদ হিসেবে জমতে শুরু করে কোষে কোষে। যা ওজন বাড়ায় এবং রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রাও বাড়ায়।
বিজ্ঞাপন

তাড়াতাড়ি খাবার খেলে হরমোনের ভারসাম্যও বিগড়ে যেতে পারে। লেপটিন হরমোন খাবারের বিপাকে বড় ভূমিকা নেয়। ধীরে ধীরে খাবার খেলে সেই হরমোনের ক্ষরণ অনেকটা সময় ধরে হয়। ফলে খাবার ঠিকমতো হজম হয়। এর উল্টোটা হলেই বদহজমের সমস্যা দেখা দেয়, গ্যাস-অম্বলে ভোগান্তিও বাড়ে।
তাড়াতাড়ি খাবার খেলে ‘মেটাবলিক সিনড্রোম’-এর সমস্যা শুরু হয়। ফলে ওজন বাড়তে থাকে। পেট-কোমরে মেদও জমতে শুরু করে। তাই গবেষকরা খাবার ধীরেসুস্থে চিবিয়ে খাওয়ারই পরামর্শ দিচ্ছেন।
এনএম

