একসময় মনে করা হতো প্রবীণদের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি। তবে সম্প্রতি এমন ধারণা থেকে বেরিয়ে আসছেন সবাই। কমবয়সীরাও আক্রান্ত হতে পারেন স্ট্রোকে। বর্তমানে ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মধ্যে বাড়ছে স্ট্রোকের ঝুঁকি।
কমবয়সীদের স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ার কারণ অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপনে অসংযম, অতিরিক্ত নেশার প্রবণতা ইত্যাদি। স্ট্রোকের বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ ভোগে ইস্কিমিক স্ট্রোকে। তবে কমবয়সীদের মধ্যে বেশি দেখা যাচ্ছে ‘ট্র্যানসিয়েন্ট ইসকিমিক অ্যাটাক’ বা ‘টিআইএ’।
বিজ্ঞাপন

স্ট্রোকের লক্ষণ কী?
বিশেষজ্ঞের মতে, স্ট্রোকের লক্ষণ জানান দেয় আগেই। সচেতনতার অভাবে বেশিরভাগ মানুষ সেসব লক্ষণ বুঝতে পারে না। চিকিৎসকের মতে, স্ট্রোকের দুটি ছোট ও গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হলো-
কথা বলতে বলতে আচমকা জিভ অবশ হয়ে যাওয়া
হাত তুলে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হওয়া
বিজ্ঞাপন

কয়েক মিনিটের মধ্যেই আবার সব আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে যায়। তাই বেশিরভাগ মানুষ আর চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করে না। কিন্তু তার পরেই হয়তো কয়েক মাসের মধ্যে আচমকা বড়সড় স্ট্রোকের শিকার হতে হয়। অনেকে এতে প্রাণ হারান। কারো শরীরের এক দিক পক্ষাঘাতগ্রস্তও হয়ে যেতে পারে।
কয়েক মিনিট এরকম কথা বলতে না পারা, হাত বা পা অসাড় হয়ে যাওয়া কিংবা চোখে অন্ধকার দেখার মতো ঘটনাকে চিকিৎসার পরিভাষায় ‘ট্র্যানসিয়েন্ট ইসকিমিক অ্যাটাক’ বা ‘টিআইএ’ বলে। সাধারণ ভাষায় একে ‘মিনি স্ট্রোক’ বলে। এই পর্যায়ে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ না নিলে কিছুদিনের মধ্যেই বড়সড় বিপদ ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

স্ট্রোক থেকে সাবধানে থাকবেন কীভাবে?
স্ট্রোকের লক্ষণ দেখলেই রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা করানো প্রয়োজন। স্ট্রোক হওয়ার পর সাড়ে চার ঘণ্টাকে বলা হয় ‘গোল্ডেন আওয়ার’। এর মধ্যে ইন্টারভেনশন পদ্ধতির সাহায্যে মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনীর রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক করে দিতে পারলে রোগীকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সহজ হয়।
সুষম ডায়েট, নিয়ম মেনে শরীরচর্চা এবং নেশার মাত্রা কমিয়ে দিলে স্ট্রোকের আশঙ্কা কমবে অনেকটাই। সেসঙ্গে পর্যাপ্ত ঘুমও জরুরি। যারা রাতের পর রাত জেগে কাজ করেন, বাইরের খাবার বেশি খান, প্রবল মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তায় ভোগেন— তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই বেশি।

আচমকাই দুর্বল বোধ করা, হাঁটাচলার সময়ে শরীরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা, কথা বলতে সমস্যা হওয়া, চিন্তাভাবনা গুলিয়ে যাওয়া, এক চোখে বা দুই চোখেই দৃষ্টি ঝাপসা হতে থাকলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। প্রথম থেকেই রোগ ধরা পড়লে বিপদের আশঙ্কা কমে।
এনএম

