মৃগী এক ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা। এই রোগ হলে রোগীর খিঁচুনি দেখা দেয়। কোনো সুস্থ ব্যক্তির মধ্যে যদি হঠাৎ অস্বাভাবিক কাঁপুনি বা খিঁচুনি দেখা দেওয়া, চোখ-মুখ উল্টে হাত-পা ছোড়া, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, মুখ দিয়ে লালা বের হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয় তাহলে তাকে মৃগী রোগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
গ্রামাঞ্চলে মৃগী হলে অনেকসময় একে জিনে ধরা, ভূতের আসর হওয়া ইত্যাদি হিসেবে ধারণা করা হয়। এর জন্য ঝাড়ফুঁক, তাবিজ–কবজ করা হয়। এটি একদমই ঠিক নয়। মৃগী রোগ আসলে স্নায়ুতন্ত্রের একটি জটিলতা।
বিজ্ঞাপন

মৃগী রোগীর খিঁচুনি কেন হয়?
মৃগী রোগীর খিঁচুনি হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে। যেমন- অতীতে মাথায় আঘাত লাগা, সংক্রমণ বা মস্তিষ্কে টিউমার। কখনো কখনো মস্তিষ্কে কোনো দৃশ্যমান সমস্যা না থাকলেও মৃগী রোগ হতে পারে। মস্তিষ্কের টিউমার, সংক্রমণ, স্ট্রোক, মস্তিষ্কের ক্ষত বা আঘাত, অটোইমিউন রোগের মতো রোগের কারণেও মৃগীর খিঁচুনি হতে পারে। একজন ব্যক্তির এক বা দুইবারের বেশি খিঁচুনি না হওয়া পর্যন্ত মৃগী রোগ নিশ্চিত করা যায় না।
মৃগী রোগের লক্ষণ
বিজ্ঞাপন
মস্তিষ্কের অস্বাভাবিক কার্যকলাপের কারণে মৃগীরোগ হয়। এর কিছু সাধারণ লক্ষণ হলো-

ঘন ঘন খিঁচুনি হওয়া
সাময়িকভাবে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
চিন্তাশক্তি হ্রাস
গলার আওয়াজ হারিয়ে ফেলা
পেশিতে ক্র্যাম্প হওয়া
সংবেদন পরিবর্তন
কথোপকথন ও বোঝায় অসুবিধা

ভয়, উদ্বেগ বা আতঙ্ক অনুভব করা
অসাড় বোধ করা
কথা বলতে বা বুঝতে অসুবিধা
সাময়িকভাবে বিভ্রান্ত হওয়া
হৃদস্পন্দন ও শ্বাসের হার বৃদ্ধি
মৃগী রোগ সম্পর্কে কিছু ভুল তথ্য
মৃগী রোগ সম্পর্কিত কিছু বিষয় বিশ্বাস করা উচিত নয়। অনেকে ভাবেন এটি একটি সংক্রামক রোগ যার কারণে কেউ রোগীকে সাহায্য করতে ভয় পায়। আসলে এটি একটি অ-সংক্রামক রোগ। অর্থাৎ এটি এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে ছড়াতে পারে না। এমনকি মৃগী রোগীর জুতোর গন্ধ পাওয়া কিংবা মুখে চামচ দেওয়ার মতো বিষয়গুলোও ভুল।

কারো খিঁচুনি হলে করণীয়
খিঁচুনিতে আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যান।
রোগীর পরিধানের কাপড় ঢিলেঢালা করে দিতে হবে।
কাছাকাছি আগুন, গরম পানি বা ধারালো কিছু থাকলে সরিয়ে ফেলতে হবে।
মৃগী রোগীকে আরামদায়ক অবস্থায় কাত করে শুইয়ে দিতে হবে যেন মুখের লালা বাইরে পড়ে যায়।
এসব উপায়ে কাজ না হলে রোগীকে দ্রুত রোগীকে চিকিৎসকের কাজে নিয়ে যান।
এনএম

