বর্তমানে হৃদরোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা অসংখ্য। পুরুষের তুলনায় নারীদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। কারণ, নারীদের হৃদপিণ্ড ও রক্তনালীগুলো সাধারণত ছোটই হয়। প্ল্যাক, কোলেস্টেরল দিয়ে তৈরি চর্বিযুক্ত পদার্থ, নারীদের ধমনীতে ভিন্নভাবে গঠিত হয়। যা চুপি চুপি ছোট ছোট ব্লক তৈরি করে। এই ব্লকগুলো সহজে বোঝাও যায় না।
ভারতের বেঙ্গালুরুর সাকরা ওয়ার্ল্ড হাসপাতালের কার্ডিওলজির ডিরেক্টর, ডা. শ্রীকান্ত শেঠি সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, সন্তান জন্ম দেওয়া এবং স্তন ক্যানসারের জন্য বিভিন্ন চিকিৎসা গ্রহণের কারণে, নারীদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
বিজ্ঞাপন

নারীদের হৃদরোগের ঝুঁকির কারণ
তাড়াতাড়ি মাসিক শুরু হওয়া (১০ বছর বয়সের আগে)
দেরিতে মাসিক শুরু হওয়া (১৭ বছর বয়সের পরে)
মেনোপজের সময় এবং পরে
গর্ভাবস্থা সংক্রান্ত সমস্যা থাকলে
গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ থাকলে
প্রিক্ল্যাম্পসিয়া
জন্মের পর হার্টের সমস্যা
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস
সময়ের আগেই সন্তানের ডেলিভারি
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম (PCOS)

বিজ্ঞাপন
নারীদের মধ্যে যেসব হৃদরোগ বেশি দেখা যায়
মাইক্রোভাসকুলার হৃদরোগ: ছোট রক্তনালীগুলোকে প্রভাবিত করে। এই অবস্থার জন্য নারীরা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন।
স্পনটেনিয়াস করোনারি আর্টারি ডিসেকশন (SCAD): এটি একটি গুরুতর অবস্থা, যেখানে একটি করোনারি ধমনীতে গিয়ে ছিঁড়ে যায়।

স্ট্রেস থেকে হার্ট ফেইলিউর (টাকোটসুবো সিনড্রোম): হার্টের একটি অস্থায়ী অবস্থা এটি। প্রায়ই গুরুতর মানসিক চাপের কারণে এমনটা দেখা যায়।
অটোইমিউন রোগের প্রভাব: এই সমস্যাও নারীদের হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

স্তন ক্যানসারের চিকিৎসা: স্তন ক্যানসারের জন্য যেসব চিকিৎসা নেওয়া হয় সেগুলো হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
অন্যান্য লক্ষণ: এছাড়াও নারীদের মধ্যে, আরও বেশ কিছু হৃদরোগের বিভিন্ন উপসর্গ থাকতে পারে। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় বা হরমোন প্রতিস্থাপন থেরাপি করার সময়।

নারীদের হার্টের রোগ প্রতিরোধের কার্যকর কৌশল
স্বাস্থ্যকর ডায়েট: খাদ্যতালিকায় রাখুন গোটা পুরো শস্য, ফল, শাকসবজি, চর্বিহীন প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর খাবার। চিনিযুক্ত এবং প্রসেসড ফুড খাবেন না। এসব খাবার হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
নিয়মিত ব্যায়াম: সুস্থ থাকতে ব্যায়ামের বিকল্প নেই। প্রতিদিন ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। সম্ভব না হলে সপ্তাহে পাঁচবার অন্তত ৩০ মিনিটের জন্য ব্যায়াম করতে থাকুন।

স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট: স্ট্রেস ম্যানেজ করার চেষ্টা করুন। এটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
নিয়মিত চেকআপ: সম্ভাব্য সমস্যাগুলো তাড়াতাড়ি ধরে ফেলতে নিয়মিত রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এবং ডায়াবেটিস চেকআপ করুন।
সবমিলিয়ে বলা যায়, হৃদরোগের ঝুঁকির সম্মুখীন হওয়ার আগেই সাবধান হন। রোগ শনাক্ত করার চেষ্টা করুন। হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখুন।
এনএম

