পরিবার, বন্ধু মহল কিংবা কর্মক্ষেত্র— সব জায়গায়ই এমন কেউ না কেউ থাকে যে একটু বেশিই কথা বলে। এমন ব্যক্তিদের আমরা বাচাল বলে ডাকি। এই শব্দটিরই পোশাকি নাম ‘ভার্বাল ডায়রিয়া’। অনেকের ক্ষেত্রে আবার কথা বলাই পেশা। কথার মাধ্যমে মন জয় করা কিংবা মানুষ হাসানোর কাজও করেন অনেকে। তবে কেবল সুবক্তা হলেই চলবে না। তার আগে ভালো শ্রোতাও হওয়া প্রয়োজন।
চিকিৎসকরা বলছেন, অতিরিক্ত কথা বলার অভ্যাস এমনিতে খারাপ নয়। যতক্ষণ পর্যন্ত তা অপর পাশের মানুষের কাছে অসহনীয় হয়ে ওঠে না ততক্ষণ পর্যন্ত এটি নিয়ে সমস্যা নেই। তবে এই অভ্যাস একসময় মস্তিষ্কের স্নায়ুজনিত রোগের লক্ষণ হয়ে দাঁড়ায়। বেশিরভাগ সময় যা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে না।
বিজ্ঞাপন

অল্প বয়সের ‘ভার্বাল ডায়রিয়া’ থেকেই বয়সকালে নানা জটিল সমস্যা সৃষ্টি। কিন্তু কীভাবে বুঝবেন এই সমস্যায় আক্রান্ত? ভার্বাল ডায়রিয়ার কিছু লক্ষণ জেনে নিই-
১। সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এমন ব্যক্তিদের অবাধ যাতায়াত থাকে। তারা নানা বিষয়ে নিজের জ্ঞান জাহির করতে পছন্দ করে। কথা বলা শুরু করার আগে বিন্দুমাত্র ভাবে না। এমনকি অচেনা ব্যক্তির সঙ্গেও এরা অনায়াসে কথা বলা শুরু করে অনায়াসে।

বিজ্ঞাপন
২। কথা বলার মানুষ না পেলে অনেকসময় এরা নিজে নিজেই বকবক করেন। সারা দিনের কাজকর্ম, কী হলো কিংবা কী করতে হবে, সেসব পরিকল্পনা মুখে বলে বলে মনে রাখেন।
৩। অতিরিক্ত কথা বলার অভ্যাস অনেকসময় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। চিকিৎসকদের মতে, বেশি কথা বলার অভ্যাস বাইপোলার ডিজঅর্ডার, স্কিৎজোফ্রেনিয়া, হ্যালুসিনেশন কিংবা অবসাদের মতো রোগের কারণ হতে পারে।

৪। মনোরোগ চিকিৎসকদের মতে, কোনো কারণে ভয় পেলেও অনেকে বেশি কথা বলে ফেলেন। তাদের কাছে ভয় বা উদ্বেগ লুকোনোর পন্থা এটি।
৫। কিছু ক্ষেত্রে অন্যের নজরে পড়ার কৌশল হতে পারে বেশি কথা বলা। আবার পছন্দ বিষয় পেলে কেউ কেউ বেশি কথা বলে ফেলতে পারেন।

ভাল শ্রোতা হবেন যেভাবে
অপরপাশে থাকা মানুষটিকে বুঝতে চাইলে বেশি বাক্যব্যয় করবেন না। মন দিয়ে তার কথা শুনুন।
কোনো সমস্যা সমাধান করতে গেলে আগে অন্যদের কথা শুনতে হয়। তারা যদি মনের কথা খুলে বলতে না পারেন তাহলে নিরপেক্ষ বিচার হবে না।

অন্যের কথার মাঝে ঢুকে পড়ার অভ্যাস থাকলে তা ছাড়তে হয়। আর যদি এমনটা করে থাকেন, তৎক্ষণাৎ নিজের ভুল সংশোধন করতে হবে।
হাতে যথেষ্ট সময় নিয়েই অপরপক্ষের কথা বা সমস্যা শুনুন। কথা শুরুর পর মাঝপথে উঠে গেলে বক্তা মনে আঘাত পান।
এক কথা বার বার বলবেন না। এতে সময় ও শ্রম দুটোই নষ্ট হয়। অপরদিকে থাকা ব্যক্তিটি বিরক্তবোধ করতে পারেন।
এনএম

