প্রকৃতিতে যত প্রজাতির পাখি আছে তার মধ্যে অনিন্দ সুন্দর ময়ূর। বন-বাদারে উড়ে বেড়ানো অন্যান্য পাখির মতো ময়ূরও পোষ মানে। তাই অনেকেই পেখম মেলা ময়ূর নিজের সংগ্রহে রাখতে চান। নিজের আয়ত্বে রেখে পুষতে চান। অনেকেই হয়তো জানেন না চাইলেই ময়ূর পোষা যায় কিনা। এই পাখি পুষতে লাইসেন্স লাগে কি না তাও অনেকের অজানা। বিস্তারিত জানুন এই প্রতিবেদনে।
আরও পড়ুন: ঈদে বাহিরে যাচ্ছেন, পোষা প্রাণীর কী হবে?
বিজ্ঞাপন
ইংরেজিতে পুরুষ ময়ূরকে পিকক এবং স্ত্রীকে পিহেন বলা হয়। পুরুষ ময়ূরের মাথায় থাকে একটি মুকুট, মাথার দুপাশ সাদাটে, পালকবিহীন। ময়ূরের পালক অসাধারণ উজ্জ্বল, ধাতব আভাযুক্ত সবুজ ও নীল রঙের। লেজের উপরিভাগের পালকগুলি অতিশয় লম্বা; পেখম মেললে এর দের্ঘ্য হয় এক মিটারের বেশি। তামাটে-সবুজ ও নীল রঙের সংমিশ্রণে সজ্জিত চওড়া পালকে অলঙ্কৃত থাকে রঙিন চোখের মতো বড় বড় ফোটা দাগ। স্ত্রী ও পুরুষের প্রণয় লীলার সময় মেলানো পেখমের আন্দোলন অতি বৈশিষ্ট্যময়।

এক সময় সাজ-সজ্জা ও অলঙ্করণের কাজে প্রচুর পরিমাণ ময়ূরের পালক এ উপমহাদেশ থেকে বিদেশে রফতানি করা হতো। এছাড়াও বর্তমানে রুচিশীল মানুষ তাদের সংগ্রহশালায় ময়ূরকেও যোগ করছেন। তাদের পাশাপাশি অনেকেই ময়ূর পালন করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।
ময়ূর পালতে লাইসেন্স লাগে
বিজ্ঞাপন
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে সরকারের অনুমিত ছাড়া কিংবা লাইসেন্স ছাড়া ময়ূর পালন করা যাবে? এর উত্তরটা হচ্ছে না। ময়ূর পালতে অবশ্যই বাংলাদেশ সরকারের লাইসেন্স নিতে হবে।

বাংলাদেশে ময়ূর বিলুপ্ত পাখি
বাংলাদেশে সরকারিভাবে ময়ূর বিলুপ্ত একটি পাখি বলে ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে বিদেশ থেকে ময়ূরসহ বিদেশি পোষা জাতের পাখি আমদানি করে লালন-পালন বা বিক্রি করার সুযোগ রয়েছে।
পোষা পাখি ব্যবস্থাপনা বিধিমালা- ২০২০ অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট এলাকার বন কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে ময়ূরসহ এসব পাখির খামারও স্থাপন করা যায়। পোষা পাখির খামার স্থাপনের লাইসেন্স ফি খামারের জন্য ১০ হাজার টাকা।

তবে ময়না, টিয়া, ঘুঘুসহ সকল প্রকার দেশীয় পাখি আটকে রেখে পোষ মানানো, লালন-পালন করা সম্পূর্ণ বেআইনি ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
বিধিমালায় বলা হয়েছে, পোষা পাখির পায়ে রিং পড়াতে হবে। কোনভাবেই প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা যাবে না।

চারটি বন্যপ্রাণী পালন করতে পারেন বাংলাদেশিরা
বাংলাদেশের বন বিভাগের তথ্য মতে, অনুমতি নেয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের বাসিন্দারা কয়েক রকমের বন্যপ্রাণী পালন করতে পারেন।
বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক মোল্যা রেজাউল করিম বলেন, হাতি, হরিণ, কুমির আর ময়ূর- এই চারটি প্রাণী পালন করার জন্য আমরা অনুমতি দিয়ে থাকি। এর বাইরে আর কোন বন্যপ্রাণী খাঁচায় বা আটকে রেখে পালন করলে সেটা পুরোপুরি অবৈধ হবে।'

এর বাইরে অনুমতি নিয়ে পোষা পাখির খামার ও সাপের খামার তৈরির সুযোগ রয়েছে। পোষা পাখির মধ্যে ময়ূরের খামার তৈরির জন্যও উৎসাহিত করছেন কর্মকর্তারা।

এসব প্রাণী বা পাখি লালন-পালন করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের বিধিমালা রয়েছে।
এজেড

