ছোট-বড় সবারই মাম্পস হতে পারে। অত্যন্ত ছোঁয়াচে বা সংক্রামক রোগ এটি। আবহাওয়া বদলের এই সময়ে অনেকে মাম্পস দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন। চলুন এই রোগ সম্পর্কে জেনে নিই-
মাম্পস কী?
বিজ্ঞাপন
এটি এমন একটি রোগ যা গালের নিচে চোয়ালের কাছে অবস্থিত প্যারোটিড গ্রন্থিগুলিতে সংক্রমণের বিস্তারের কারণে ঘটে। এই রোগের কারণে মুখ বিকৃত হয়ে যায় এবং গালে ও ঘাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। প্রথম দিকে মাম্পসের লক্ষণ দেখা যায় না। ধীরে ধীরে কানের ঠিক সামনে চোয়ালে ফোলাভাব দেখা দেয়।
সহজেই এটি একজনের শরীর থেকে অন্য ব্যক্তির শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এজন্য একে অত্যন্ত গুরুতর একটি রোগ বলেই উল্লেখ করেন ডাক্তাররা।

মাম্পস হয়েছে কি না বুঝবেন যেভাবে
বিজ্ঞাপন
মাম্পসের কিছু সাধারণ লক্ষণ হলো গলা ও ঘাড় ফুলে যাওয়া, জ্বর, মাথাব্যথা, ক্ষুধামন্দা, চিবানো এবং গিলতে অসুবিধা হওয়া। এই রোগের লক্ষণ অনেকটা টনসিলের মতোই। তাই ডাক্তাররা রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে নেন মাম্পস নাকি টনসিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, মাম্পস নিরাময়ে সাধারণত ১০-১২ দিন সময় লাগে।
মাম্পসের লক্ষণ
১। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের তথ্য অনুযায়ী, গাল এবং চোয়ালে অবস্থিত প্যারোটিড লালা গ্রন্থিগুলির একটি বা উভয় ক্ষেত্রেই মাম্পস সাধারণত ব্যথা, কোমলতা এবং ফোলাভাব হিসাবে প্রকাশ পায়।

২। সাধারণত এক থেকে তিন দিনের মধ্যে ফোলাভাব সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছোয়। পরের সপ্তাহে যা ধীরে ধীরে কমে যায়। ফোলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কানের নীচে চোয়ালের হাড়ের কোণটি অস্পষ্ট হয়ে যেতে পারে। এসময় প্যারোটিড গ্রন্থিটি এমনভাবে ফুলে যেতে পারে যেখানে চোয়ালের হাড়ও অনুভব করা যায় না।
৩। অতিরিক্তভাবে, মুখের নিচে সাবম্যান্ডিবুলার এবং সাবলিঙ্গুয়াল গ্রন্থিগুলির মতো অন্যান্য লালা গ্রন্থিগুলিতে ফোলাভাব ঘন ঘন দেখা যায়।

৪। প্যারোটাইটিস শুরু হওয়ার আগে, আক্রান্ত ব্যক্তির হালকা জ্বর আসতে পারে। তিন থেকে চার দিন যা স্থায়ী হয়। একইসঙ্গে পেশীতে ব্যথা, খিদে কমে যাওয়া, সাধারণ অস্বস্তি এবং মাথাব্যথাও দেখা দেয়।
৫। প্রাথমিকভাবে শ্বাসযন্ত্রের লক্ষণগুলোর মাধ্যমে মাম্পস প্রকাশ পেতে পারে। অনেকক্ষেত্রে এটি উপসর্গবিহীনও হতে পারে।

কাদের মাম্পস হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে?
মাম্পস সাধারণত শিশুদের প্রভাবিত করে। তবে প্রাপ্তবয়স্করাও এই রোগে গুরুতর অসুস্থ হতে পারেন। তাই এই রোগকে কোনোভাবেই হালকা করে নেওয়া উচিত নয়। জ্বর, মাথাব্যথা, শরীরে ব্যথা এবং মুখ ও গলা ফুলে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। অসাবধানতার কারণে এই রোগ দ্রুত ছড়ায়।
মনে রাখা জরুরি, মাম্পসের কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। এই রোগে, প্যারোটিড গ্রন্থি ফুলে যাওয়ার কারণে রোগীর প্রচুর ব্যথা হয়। এই ব্যথা কমাতে ব্যথানাশক ওষুধ দিয়ে থাকেন ডাক্তাররা। এ ছাড়া বরফ দিয়েও ফোমেন্টেশন করা যায়। মাম্পসের ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা প্রচুর পানি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

গরম পানি দিয়ে কুলি করলেও অনেক সময় ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে, সবক্ষেত্রেই ডাক্তারের পরামর্শ জরুরি।
এনএম

