ঘুম মানুষের জন্য জরুরি। ক্লান্তি দূর করার পাশাপাশি শরীরের নানা রোগ থেকেও রেহাই দেয়। শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য এবং মস্তিষ্ক ও দেহের সমস্ত কাজ যাতে সুস্থভাবে সম্পন্ন হয়, তার জন্য ঘুম অপরিহার্য। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাতে ঠিকভাবে কাজ করে এবং শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য যাতে সচল থাকে, তার জন্য ঘুমের বিকল্প নেই। এমনকি দেহে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে, মেটাবলিজম ঠিক রাখতে এবং মানসিক চাপ কমানোর জন্য আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতেই হবে। কিন্তু কত ঘণ্টা ঘুমালে আপনার শরীর ঠিক থাকবে?
আরও পড়ুন: সকালের নাশতায় দুধ খাওয়া কি ভালো?
বিজ্ঞাপন
ঘুম ঠিকমতো না হলে শরীরে নানা রোগ জাঁকিয়ে বসে। অনেক সময় কিছু দীর্ঘস্থায়ী অসুখ দেখা দেয় অনিদ্রার কারণে। দেহে ঘুমের অভাব কার্ডিওভাস্কুলার ও হাইপারটেনশনের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। অনেক ক্ষেত্রে টাইপ-২ ডায়াবেটিস দেখা দেয় ঘুমের অভাবে। তার সঙ্গে হরমোনের ভারসাম্যহীনতাও রয়েছে। তাই রোগের ঝুঁকি এড়াতে গেলে ঘুম জরুরি।

প্রতি মানুষের বয়স, শারীরিক অবস্থা ভিন্ন। এমনকি লাইফস্টাইলও আলাদা হয়। তাই কার শরীরে কতটা পরিমাণ বিশ্রামের প্রয়োজন রয়েছে, তা বলা কঠিন। তবে, বয়সের হিসেবে বলে দেওয়া যায় আপনি দিনে কত ঘণ্টা ঘুমোবেন।
সম্প্রতি আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ স্লিপ মেডিসিন ও স্লিপ রিসার্চ সোসাইটি ভালো ঘুমের সঠিক সময় প্রকাশ করেছে। কোন বয়সে কত ঘণ্টা ঘুম দরকার, সেটাই উল্লেখ রয়েছে সেখানে। বয়স মিলিয়ে দেখে নিন কত ঘণ্টা ঘুমোবেন।
বিজ্ঞাপন

০-৩ মাস: সদ্যজাত শিশুদের ঘুমের পরিমাণ বেশি হয়। এটা তাদের বিকাশের সময়। তাই সদ্যজাত শিশুদের দিনে ১৪-১৭ ঘণ্টা ঘুম জরুরি।
৪-১১ মাস: এই বয়সে শিশুদের শারীরিক বিকাশ ও কার্যকলাপ ঘটতে থাকে। এই সময় তাদের দিনে ১২-১৫ ঘণ্টা ঘুম দরকার হয়।
১-২ বছর: এটা শিশুদের খেলার সময়। এই সময় তাদের মধ্যে এনার্জি লেভেল বেশি থাকে। তবে, মস্তিষ্কের কার্যকলাপের জন্য বিশ্রামও জরুরি। তাই এই বয়সে দিনে ১১-১৪ ঘণ্টা ঘুম দরকার।

৩-৫ বছর: এটা এমন একটি বয়সসীমা যেখানে খুদে স্কুল যেতে শেখে। এই লার্নিং ফেজে খুদের বিশ্রাম দরকার। এই সময় দিনে কমপক্ষে ১০-১৩ ঘণ্টা ঘুম দরকার।
৬-১২ বছর: এই বয়সে বাচ্চাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটে। এই সময় দিনে ৯-১২ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন।
১৩-১৮ বছর: বয়ঃসন্ধিকালে পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা ও আরও অনেক কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়। এমনকি এই বয়সে তাদের প্রজনন অঙ্গও বিশেষ কিছু অগ্রগতির মধ্যে দিয়ে যায়। তাই এই সময় দিনে ৮-১০ ঘণ্টা দরকার পড়ে শরীরের।

১৮-৬০ বছর: যৌবন থেকে বার্ধক্য—এটা এমন একটা বয়সকাল যেখানে জীবনে অনেক কিছু ঘটতে থাকে। এই বয়সসীমাকে প্রাপ্তবয়স্ক ধরা হয়। এই সময় প্রতিদিন কমপক্ষে ৭-৯ ঘণ্টা ঘুম দরকার।
৬১ বছর এবং তার বেশি বয়স: বার্ধক্য হানা দিলে শরীরে নানা রোগও দেখা দেয়। এই বয়সে একটু বেশি বিশ্রামের প্রয়োজন হয়। তাছাড়া এই বয়সে জয়েন্টে ব্যথা ও অনিদ্রার মতো সমস্যা খুব কমন। তাই ৬০ পার করে গেলেই আপনার দিনে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম দরকার।
এজেড

