গলব্লাডার বা পিত্তথলিতে পাথর হয়, এ কথা অনেকেই জানেন। তবে এতে হতে পারে ক্যানসারের মতো ভয়ানক রোগ। এই রোগকে কখনোই অবহেলা করা চলবে না। ক্যানসারের সামান্য কিছু লক্ষণ দেখা দিলেও সাবধান হয়ে যেতে হবে।
ক্যানসারযুক্ত কোষগুলো যখন পিত্তথলির অভ্যন্তরে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, তখন পিত্তথলির ক্যানসারের বিকাশ ঘটে। পরবর্তীতে ক্যানসার কোষগুলো দ্বারা তৈরি টিউমারগুলো শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে।
বিজ্ঞাপন

২০১৯ সালের আগস্টে মেডিকেল জার্নালে ‘Epidemiology of gallbladder cancer in India’ নামের একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। এই গবেষণা অনুযায়ী, পিত্তথলির ক্যানসার (জিবিসি) কোষগুলো দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
পিত্তথলির ক্যানসারে আক্রান্ত রোগী বেঁচে থাকবেন কি না তা নির্ভর করে রোগী ও রোগের পর্যায়ের উপর। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা প্রাপ্ত ব্যক্তিদের জন্য ৫ বছরের বেঁচে থাকার হার ৬৬ শতাংশ। মাত্র ২ শতাংশ রোগী যারা দেরিতে রোগ নির্ণয় করেন তারা পাঁচ বছর বা তারও বেশি সময় বেঁচে থাকেন।

বিজ্ঞাপন
গলব্লাডারে ক্যানসারের লক্ষণ ও উপসর্গ
ক্যানসারের প্রাথমিক পর্যায়ে এটি উপসর্গহীন হতে পারে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেখা দেয় নানা উপসর্গ। এর কিছু লক্ষণের মধ্যে রয়েছে- উপরের পেটের ডান দিকে ব্যথা, অনিচ্ছাকৃত ওজন হ্রাস, পেটে ফোলাভাব এবং জন্ডিস।
গলব্লাডারে ক্যানসারের কারণ
- পিত্তথলির উচ্চ প্রাদুর্ভাব
- দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ বা সংক্রমণ
- স্থূলত্ব
- জিনগত অবস্থা বা পিত্তথলির ক্যান্সারের পারিবারিক ইতিহাস
বেশ কিছু ডায়েটরি কারণও এ সমস্যা হতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ফ্যাট বেশি খাওয়া কিংবা ডায়েটে ফাইবার কম থাকা।

বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে পিত্তথলিতে ক্যানসারের সমস্যা বেশি দেখা যায়। ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে এই রোগটি বেশি দেখা যায়। পুরুষদের তুলনায় নারীদের ঝুঁকি বেশি থাকে।
রোগ নির্ণয়
সাধারণভাবে রোগ নির্ণয় করা কঠিন। এমআরআই, সিটি স্ক্যান এবং আল্ট্রাসাউন্ডের মতো ডায়াগনস্টিক ইমেজিং পরীক্ষাগুলোর মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব।

প্রতিরোধের উপায়
পিত্তথলির ক্যানসারের প্রতিটি উদাহরণ এড়ানো সম্ভব নয়। তবে স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং পিত্তথলি গঠনের সম্ভাবনা বাড়ায় এমন অসুস্থতার চিকিৎসা করে ঝুঁকি হ্রাস করা যেতে পারে।
পিত্তথলির ক্যানসার একটি অস্বাভাবিক রোগ। এর প্রকোপ কম, তবে যারা আক্রান্ত তাদের উপর এটি মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। প্রাথমিক সনাক্তকরণ ও চিকিৎসা করানো তাই বেশ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
এনএম

