বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

ঈদে বখশিস বিড়ম্বনা

আবুল কাশেম
প্রকাশিত: ২৯ এপ্রিল ২০২২, ১২:২৩ পিএম

শেয়ার করুন:

ঈদে বখশিস বিড়ম্বনা

সৈয়দ হক (ছদ্মনাম) রাজধানীতে সাধারণ একটি চাকরি করেন। তার দুই ছেলে মেয়ে। এবারের ঈদ উপলক্ষে তাদের তেমন কিছুই দিতে পারেননি। অফিস থেকেও পাননি ঈদ বোনাস। কিন্তু ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকেই শুরু হয়েছে নতুন বিড়ম্বনা। বাসা থেকে বের হলেই পদে পদে পড়তে হচ্ছে বখশিসের মুখে। না দিয়েও কোনো উপায় নেই। রিকশা ভাড়া থেকে শুরু করে মহল্লার ছেলেদেরও দিতে হচ্ছে বখশিস।

ইমন একজন সাংবাদিক। অফিস থেকে ঈদ উপলক্ষে তেমন কোনো বোনাস না পেলেও তাকে বখশিস দিতে হয়েছে বেশ কয়েকজনকে। বাসায় কাজের মহিলাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দেয়ার পরও বাড়তি একটা বখশিস দিতে হয়েছে। এছাড়া মহল্লার ছেলেরা রমজানে ভোররাতে কাসিদা গেয়েছেন, তাদেরও দিতে হয়েছে বখশিস।


বিজ্ঞাপন


এই সবকিছু মিলিয়ে আকাশের খরচ হয়েছে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। অথচ এখন ঈদের খরচ মেটানোর চিন্তায় তিনি।

রাজধানীতে চাকরি করেন আকাশ। বেতন মোটামুটি হলেও বাসার খরচ আর গ্রামের বাড়ির খরচ মিটিয়ে তাকে খুব হিসেব করে চলতে হয়। ঈদের খরচ নিয়ে এরই মধ্যে চিন্তিত তিনি। তবুও এই বখশিস বিড়ম্বনা থেকে রেহাই নেই। বাসার থেকে যারা ময়লা নিয়ে যায় তাদের শতভাগ বখশিস দিতে হয়েছে। বাসার কাজের মহিলাকে ঈদের বোনাসের পরও দিতে হয়েছে বাড়তি টাকা। বাসার দারোয়ান ও ম্যানেজারও রয়েছেন এই তালিকায়। তাদের দাবির পরিমাণও বেশি। বাসায় অনলাইনে কাজের জন্য রয়েছে ওয়াইফাই। তারাও এক মাসের বিল পরিমাণ বখশিস দাবি করেছে। সবাই এমন দেয় তাই আকাশকেও দিতে হবে। এটি যেন অনেকটা বাধ্যতামূলক। এছাড়া এলাকায় ঈদ উপলক্ষে সাজসজ্জা করা হবে বলে একদল এসে বড় অংকের বখশিস চায়। দাবির পরিমাণ থেকে কিছুটা কমিয়ে তাদেরও দিতে হয়েছে ঈদ বখশিস। এই সবকিছু মিলিয়ে আকাশের খরচ হয়েছে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। অথচ এখন ঈদের খরচ মেটানোর চিন্তায় তিনি।

খালেদ অফিস শেষ করে বাসে ভিড় থাকায় রিকশা নিয়েছেন। ঘটনা বৃহস্পতিবারের। নির্দিষ্ট স্থানে যেতে ভাড়া ৪০ টাকা। কিন্তু রিকশাওয়ালা গন্তব্যে যাওয়ার পর দাবি করেন ১০০ টাকা। ঈদ উপলক্ষে এই দাবি তার। অবশেষে অনেক বাদানুবাদের পর ৫০ টাকায় মিটমাট করতে হয়েছে। 

উপরের ঘটনাগুলো গত দুই তিনদিনের ঘটে যাওয়া বাস্তব ঘটনা। ঈদ আনন্দ নিয়ে এসেছে। এই উপলক্ষে সবার মনই উৎফুল্ল। কাছের এবং আশপাশে থাকা মানুষকে বখশিস দেয়া যেতেই পারে। তবে তা অবশ্যই খুশিমনে এবং ইচ্ছা হলেই দেয়া যেতে পারে। কিন্তু এই বখশিস সংস্কৃতি এখন অনেকটা বাধ্যতামূলক। সবাই দিচ্ছে, আপনাকেও দিতে হবে- ব্যাপারটি এমন। আপনার পকেট গড়ের মাঠ হলেও রেহাই নেই। অনেক সময় পড়তে হয় বিব্রতকর পরিস্থিতিতেও।


বিজ্ঞাপন


বখশিসের এমন বিড়ম্বনার কথা শুনে আকাশের এক সহকর্মী বললেন, অবস্থাটা এমন যে- ‘বোনাস চায় সবাই, আমার বোনাস কই’।

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর