প্রকৃতি মানুষের মনকে আনন্দ দেয়। মন খারাপের সময় বা আনন্দে আমরা প্রকৃতির কাছাকাছি যাই। প্রকৃতি নিয়ে জন মুর বলেন, ‘যখন আমি প্রকৃতির কাছে যাই, মনটাকে হারিয়ে ফেলি, খুঁজে পাই আমার আত্মাকে।’ মানুষ এখন ভ্রমণ পিপাসু। ঘোরাঘুরির স্থান হিসেবে প্রাকৃতিক পরিবেশের গুরুত্ব বেশি।
শীতের মৌসুম শুরু হতে যাচ্ছে। ভ্রমণের জন্য এই সময়টি বেশ উপযোগী। ফলে এই সময়ে মানুষ ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও প্রকৃতির ছোঁয়া নিতে দেশ-বিদেশে ভ্রমণ করে। দেশের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন ও সুন্দরবনে মানুষের আনাগোনা বেড়ে যায়। যদিও মানুষ এখন সারা বছর ২/১ দিনের ছুটি পেলেই এখানে সেখানে ঘুরতে বের হয়। সাম্প্রতিক সময়ে বিদেশে যাওয়ার প্রবণতাও বেড়েছে।
বিজ্ঞাপন

দেশের মধ্যেও ছোট-বড় অনেক সুন্দর যায়গা আছে। যেখানে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে ট্যুরিস্ট স্পট তৈরি করা যায়। আজ এমনই সম্ভাবনাময় জায়গা নিয়ে লিখব। স্থানটির নাম পদ্ম বিল। এটা এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তর কৃষি খামার দত্তনগরের এক পাশে অবস্থিত।
দত্তনগর কৃষি খামারটির আংশিক অংশ চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার মধ্যে পড়েছে। আর বাকি অংশ ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলাতে। জীবননগর অংশে পদ্ম বিলের অবস্থান। জীবননগর-দত্তনগর সড়কের পাশে সবুজ ফসলের মাঠ পার হলেই বিলের দেখা মিলবে।

বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে দেখা যায় বিকেলের শেষ আলোতে বিলের প্রকৃতি অপরুপ সাজে সেজেছে। দুই'শ একর জায়গা জুড়ে বিলের অবস্থান। সারি সারি পদ্মফুল মনে আনন্দের দোলা দিচ্ছে। বিলের পাড়ে অবস্থানের কিছু মুহূর্তে নৌকা চালিয়ে গার্ড এসে জানালেন মাঝে মাঝে আশেপাশের মানুষ এখানে ঘুরতে আসে।
নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশ, পাখির কিচিরমিচির আর চারিদিকে চোখ জুড়ানো সবুজের সমারোহ প্রকৃতি প্রেমীদের আকৃষ্ট করবে। পাশেই দত্তনগর খামারের বটতলা। এখানে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ পিকনিকে আসে। দত্তনগর খামার, বটতলা ও পদ্ম বিলকে ঘিরে সরকারি উদ্যোগে পরিবেশের ক্ষতি না করে ট্যুরিস্ট স্পট তৈরি করা যায়। জীবননগর উপজেলা শহর থেকে ৩/৪ কি. মি. দূরত্বে হওয়ায় সহজেই যাতায়াত করা সম্ভব।

এই কৃষি খামারে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কথা রয়েছে। এখন সরকার এখানে পরিবেশ বান্ধব পার্ক ও কটেজ নির্মাণ করতে পারে। স্বল্প দূরত্বে ইন্ডিয়া বাংলাদেশ বর্ডার, প্রস্তাবিত দৌলতগঞ্জ স্থল বন্দর, দর্শনা স্থল বন্দর ও চিনিকল কারখানা। ফলে এখানে দেশি বিদেশি পর্যটক আসার পরিবেশ সৃষ্টি করা যাবে। অন্যদিকে, আশেপাশের এলাকার মানুষ বিনোদনের যায়গা পাবে। যা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে সহায়তা করবে। সাথে কর্মসংস্থান ও রাজস্ব আদায়ের খাত তৈরি হবে।
লেখক: মো. শাহিন রেজা। প্রাক্তন শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
এনএম

