শনিবার, ১১ মে, ২০২৪, ঢাকা

অবহেলিত ঔষধি গুল্ম ‘চাকুন্দা’ 

লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ অক্টোবর ২০২৩, ০৫:১৬ পিএম

শেয়ার করুন:

chakunda

শৈশবের স্মৃতিচারণ করতে গেলে যে গাছপালাগুলোর কথা মনে পড়ে তার মধ্যে হলুদ রঙা একটি ফুলে আছে নিশ্চিত। সবুজ পাতার আড়ালে উঁকি দেওয়া ফুলটি দিয়ে ছেলেবেলায় খেলেছেন অনেকে। পাতা দিয়ে পটকা ফাটানোর স্মৃতিও হয়তো রয়েছে কারোর। বলছিলাম চাকুন্দার কথা। নামে চেনা হোক বা না হোক, চোখের দেখায় এই গাছ চেনেন সবাই। 

বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের অতি পরিচিত গাছ চাকুন্দা। শহরের পতিত জমিতেও এর উপস্থিতি দেখা যায়। এক ধরনের গুল্ম এটি। আগাছা হিসেবেই বেশি পরিচিত। তবে এর ঔষধি গুনাগুণ জানলে গাছটিকে আর আগাছা বলবেন না নিশ্চয়ই। 


বিজ্ঞাপন


chakunda1

চাকুন্দার হরেক রকম নাম আছে। এর বৈজ্ঞানিক নাম Senna Tora। অন্য নামগুলোর মধ্যে রয়েছে- বনচাকুন্দা, চাইনিজ সেনা, লো সেনা, সিকল সেনা, বন্য সেনা, জাভা বিন, জাভা-বিন, ফেটিড ক্যাসিয়া, চিনাবাদাম আগাছা, সিকলপড, সিকলপড সেন্স, দুর্গন্ধযুক্ত ক্যাসিয়া ইত্যাদি। 

চাকুন্দার পাতার আকৃতি গোল ও চ্যাপ্টা। এর ব্যাস প্রায় এক ইঞ্চি মতো হয়ে থাকে। তবে এক প্রজাতির চাকুন্দার পাতা কিছুটা লম্বাটেও হয়। পাতাগুলো কোমল লোমযুক্ত হয়ে থাকে। কাণ্ডের দুই দিকে পাতাগুলো থাকে। 

হিন্দিভাষী অঞ্চলে একে চক বড় বলে থাকে। উড়িষ্যার অঞ্চলে এটি চামুন্ডা নামে পরিচিত। চাকুন্দা সাধারণত দক্ষিণ এশিয়ার উদ্ভিদ। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ইত্যাদি দেশে এ গাছ দেখা যায়। চাকুন্দার মূল ও বীজ ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। 


বিজ্ঞাপন


chakunda2

এটি বর্ষজীবী উদ্ভিদ। এদের দেহ শত শত লোমে ঢাকা থাকে। চাকুন্দার বীজ বাজারে বিক্রি হয়। এটি কালো ও খুবই উজ্জ্বল ডিম্বাকৃতির হয়। স্বাদ তিতা।

শিশুর তাড়কা নিরাময়ে

শিশুদের তাড়কা রোগ হয়। এই রোগ হলে চাকুন্দা ফলের বীজ গুঁড়া করে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে শিশুকে খাওয়ালে তাড়কা রোগ ভালো হয়। 

chakunda4

বিষাক্ত পোকার কামড়

কোনো বিষাক্ত পোকা কামড়ালে বিষ দূর করে চাকুন্দা ব্যবহার করতে পারেন। চাকুন্দা বীজের গুঁড়া আধ গ্রাম থেকে এক গ্রাম পর্যন্ত মাত্রায় বা ৪ রতি থেকে ৮ রতি সকালে ও বিকালে দুবার পানিসহ খেতে হবে। এতে দুই একদিনের মধ্যে বিষ কেটে যাবে। পোকার কামড়ে যদি কোনো দাগ হয় তবে সেই স্থানে ঐ বীজ বেটে লাগিয়ে দিতে হবে।

হাঁপানি প্রতিরোধ

যাদের একজিমার সঙ্গে হাঁপানি কিংবা অর্শের রক্ত বন্ধ হওয়ায় হাঁপানি প্রবলাকার ধারণ করেছে তারা চাকুন্দা বীজ খেতে পারে। এক্ষেত্রে ১ গ্রাম চাকুন্দা বীজ একটু থেঁতো করে, এক কাপ পানিতে সিদ্ধ করতে হবে। পানি কমে আধা কাপ হলে নামিয়ে ছেঁকে খেতে হবে। প্রয়োজনে সকাল-বিকাল দুই বার খাওয়া যাবে। কিছুদিন পর কয়েকদিন একবার করে খেতে হবে। 

chakunda7

স্নায়ুগত বাত

বাতের সমস্যা থাকলে এক গ্রাম চাকুন্দার বীজ গুঁড়া করে আধা কাপ গরম পানিতে মেশাতে হবে। আধা ঘণ্টা পর ছেঁকে একদিন পর পর সকালে পান করতে হবে। এভাবে মাসখানেক খেলে উপকার মিলবে। 

কৃমি প্রতিরোধে

কৃমি সমস্যা হলে চাকুন্দার বীজ চূর্ণ করে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে সেবন করলে কৃমি বেরিয়ে আসে।

chakunda6

কুষ্ঠরোগ সারাতে

চাকুন্দার পাতা ও মূল ভালো করে সেদ্ধ করে সেই পানি প্রতিদিন সেবন করলে ও এর শিকড় বেটে ঘিয়ের সঙ্গে মিশিয়ে কুষ্ঠ ক্ষতে লাগালে কুষ্ঠ রোগ ভালো হয়।

এছাড়া অতিরিক্ত কফ হলে চাকুন্দা পাতা সেদ্ধ করে পানি হালকা গরম অবস্থায় খেলে উপকার পাওয়া যায়। ফোঁড়া হলে চাকুন্দা পাতা বেটে ফোঁড়ার ওপর প্রলেপ দিলে তা ভালো হয়।

chakunda5

পরিচিত এই গাছটির এই স্বাস্থ্য উপকারিতাগুলো কি জানা ছিল আপনার? 

এনএম 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর