লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমলে ফ্যাটি লিভার নামক স্বাস্থ্য জটিলতা দেখা যেয়। এটি খুব মারাত্মক সমস্যা না হলেও অবহেলা করার মতো নয়। সাধারণত দুই ধরনের ফ্যাটি লিভার হয়- অ্যালকোহলযুক্ত ফ্যাটি লিভার এবং হলো নন-অ্যালকোহলযুক্ত ফ্যাটি লিভার। অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যালকোহল পান করার ফলে অ্যালকোহলযুক্ত ফ্যাটি লিভার হয়। অন্যদিকে, খাদ্যের যত্ন না নেওয়ার কারণে দেখা দেয় নন-অ্যালকোহলযুক্ত ফ্যাটি লিভার।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফ্যাটি লিভারের সমস্যা বাড়লে লিভার ক্যানসারও হতে পারে। যদি কোনো ব্যক্তির লিভার সঠিকভাবে কাজ না করে, তবে শরীরে উপস্থিত চর্বি এবং প্রোটিন কোলেস্টেরল বা LDL (Low Density Lipoprotein)। অর্থাৎ এটি খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে, যা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
বিজ্ঞাপন
লিভার কীভাবে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়?
লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশন বিশেষজ্ঞের মতে, লিভারের সমস্যা হৃদপিণ্ডকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে। এটি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়। লিভার চর্বিকে শক্তিতে রূপান্তর করতে এবং প্রয়োজনীয় প্রোটিন তৈরি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুষম কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেম বজায় রাখার জন্য যা অপরিহার্য।
নন-অ্যালকোহলযুক্ত ফ্যাটি লিভার বা ক্রনিক লিভারের মতো অবস্থার কারণে যদি লিভারের ক্ষতি হয়, এটি লিপিড বিপাককে বাধা দেয়। ফলে কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যায়। লিপিড বিপাকের ভারসাম্যহীনতা এথেরোস্ক্লেরোসিসের জন্ম দেয়। এটি ধমনীতে বাধা সৃষ্টি করে, ফলে হার্ট অ্যাটাক হয়।
বিজ্ঞাপন
সুস্থ থাকতে ফ্যাটি লিভার সমস্যা এড়িয়ে চলা উচিত। এজন্য কিছু বিষয় মেনে চলা উচিত-
ওজনের ভারসাম্য বজায় রাখুন
স্থূলতার কারণে ফ্যাটি লিভার সমস্যা হতে পারে। তাই ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি কমাতে চাইলে ওজন কমাতে চেষ্টা করুন। ওজন কমানোর জন্য ব্যায়ামের বিকল্প নেই। রোজ অল্প সময় হলেও ব্যায়াম করুন। জাঙ্ক ফুড থেকে দূরে থাকুন। স্বাস্থ্যকর ডায়েট মেনে চলুন।
অ্যালকোহল ছাড়ুন
অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবনের ফলে ফ্যাটি লিভার সমস্যা দেখা দেয়। তাই আপনার যদি ফ্যাটি লিভার থাকে, তবে অ্যালকোহল সেবন এড়ানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ডায়াবেটিস, প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখুন
যদি ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরল এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে, তবে সেগুলোর মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, ফ্যাটি লিভার এসব সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে।
স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করুন
লিভার ভালো রাখতে চাইলে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের বিকল্প নেই। পরিশোধিত মিষ্টি এবং চিনি কম খান। খাদ্যতালিকায় ফল, শাকসবজি, গোটা শস্য, চর্বিহীন প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি অন্তর্ভুক্ত করুন।
তথ্যসূত্র: আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েসন
এনএম