কর্মব্যস্ত দিন শেষে ফিরলেন ঘরে। সঙ্গী হয়ে মাথা ব্যথা। তবে এই ব্যথা সাধারণ হয়। পুরো মাথা জুড়ে তীব্র ব্যথা। মস্তিষ্ক জুড়ে যেন যন্ত্রণা হচ্ছে। বলছিলাম মাইগ্রেনের কথা। যাদের এই ব্যথা হয় তারাই বোঝেন এর কষ্ট।
সাধারণ মাথা ব্যথা আর মাইগ্রেন কিন্তু এক নয়। মাইগ্রেন মাথার এক পাশ থেকে শুরু হয়। এরপর ধীরে ধীরে যন্ত্রণা ছড়িয়ে পড়ে চোখ, ঘাড় সবখানে। সঙ্গে থাকে বমি বমি ভাব, মাথায় অস্বস্তি হওয়া, আলো ও শব্দ সহ্য করতে না পারা— এমন লক্ষণগুলো।
বিজ্ঞাপন

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আমেরিকার মোট জনসংখ্যার প্রায় ১২ শতাংশেরই মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, পুরুষদের চেয়ে নারীরা এই সমস্যায় বেশি আক্রান্ত হন। এখানেই শেষ নয়। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, পুরুষদের তুলনায় নারীরা এই মাথা ব্যথায় বেশিবার শিকার হন। ব্যথার তীব্রতাও থাকে অনেক বেশি।
এছাড়াও যেসব নারীরা মাইগ্রেনে আক্রান্ত হন, তাদের মধ্যে মানসিক চাপ এবং উদ্বেগজনিত সমস্যা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও বেশি থাকে।

বিজ্ঞাপন
কেন নারীরা মাইগ্রেনে বেশি আক্রান্ত হন?
মাইগ্রেনের সমস্যায় নারীদের আক্রান্ত হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে বিশেষ কিছু হরমোন ও জিন। মাইগ্রেনের সমস্যায় হরমোন এবং জিন কীভাবে প্রভাব ফেলে, তা নিয়েই সমীক্ষা করেন গবেষকেরা।
তাদের দাবি, ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনের মতো হরমোনের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে এর পেছনে। এই হরমোনগুলোই স্নায়ু ও মস্তিষ্কের জটিল সব ক্রিয়াকলাপে অংশ নেওয়া রাসায়নিকের উপর প্রভাব ফেলে। সেখান থেকেই শুরু হয় মাইগ্রেনের যন্ত্রণা।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছনোর আগে পর্যন্ত মেয়েদের এই সংক্রান্ত সমস্যা খুব একটা প্রকট না হলেও ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাইগ্রেন নিজের ছাপ ফেলতে শুরু করে। একারণে প্রথমবার ঋতুস্রাব হওয়ার সময়ে অনেকেই মাইগ্রেনে আক্রান্ত হন। এখানেই শেষ নয়। যতদিন পর্যন্ত নারীরা ঋতুমতী থাকেন এবং তাদের সন্তানধারণের ক্ষমতা থাকে, ততদিন পর্যন্ত মাইগ্রেনের সমস্যা পিছু ছাড়ে না।
অন্য দিকে, পুরুষরা কিশোর বয়সে মাইগ্রেনে আক্রান্ত হন। বয়সের সঙ্গে ধীরে ধীরে যন্ত্রণার দাপট কমতে থাকে। কারও কারও ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমও ঘটে। তবে মাইগ্রেন পুরুষদের উপর কেন এমন প্রভাব ফেলে, তা নিশ্চিত করে জানা যায়নি। জিনের পাশাপাশি পরিবেশ ও আবহাওয়াও মাইগ্রেনের জন্য দায়ী বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।
তথ্যসূত্র: এবিপি
এনএম

