প্রেম। স্বর্গীয় এক অনুভূতির নাম। কে কখন কার প্রেমে পড়ে বলা মুসকিল। অনেকসময় হঠাৎ করেই কাউকে ভালো লেগে যায়। আবার এমনও হয় যে দুজন মানুষ দীর্ঘদিন কথা বলা, পাশাপাশি হাঁটা, পরস্পরের সম্পর্কে জানার পর মন দেওয়া-নেওয়ার কাজটি করেন।
সহজ কথায় বলতে গেলে, পৃথিবীর রহস্যময় একটি বিষয় প্রেম। প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা প্রেমে পড়ি কেন? ভালোলাগা কীভাবে সৃষ্টি হয়? এর পেছনে কিন্তু রয়েছে বিজ্ঞান। প্রেমে পড়ার বিষয়টি সহজ মনে হলেও এর পেছনে রয়েছে জটিল রসায়ন-
বিজ্ঞাপন
জীবনের অন্যতম সুন্দর অনুভূতি ভালোবাসা। এই অনুভূতি একজন মানুষকে আরেকজন মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ করে তোলে। কিন্তু যেকারোর সঙ্গে কি যেকোনো সময় প্রেম হতে পারে? নাকি প্রেমে পড়ার কোনো বিশেষ কারণ থাকে? বিজ্ঞানীরা কী বলছেন?
কায়রোর আমেরিকান ইউনিভার্সিটির সাইকোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট এ বিষয়ে একটি গবেষণা করেছে। গবেষণা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তির প্রেমে পড়ার পেছনে মূলত কারণ থাকে তিনটি-
বিজ্ঞাপন
নির্দিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে চাওয়ার আকাঙ্ক্ষা
তাকে ঘিরে তৈরি হওয়া আবেগ
তার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার অনুভূতি
যদিও এই তিনটি কারণ ছাড়াও প্রেমে পড়ার পিছনে আরও কারণ থাকে৷
সাধারণত, একজন ব্যক্তি যখন জানতে পারে অপরপক্ষের মানুষটি তাকে পছন্দ করছে, তখন সেটিও অনেকসময় প্রেমে পড়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এক্ষেত্রে ওই দুই ব্যক্তি বাকি পৃথিবী থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন মনে করতে থাকে। তাদের মধ্যে রহস্যময় এক সংযোগের সৃষ্টি হয়।
বৈজ্ঞানিকভাবে বলতে গেলে, একটি রোমান্টিক সম্পর্ক তৈরি হওয়ার পিছনে বিভিন্ন ধরনের রসায়ন কাজ করে। কারো প্রেমে পড়ার জন্য যতটা না বাহ্যিক উদ্দীপনা দায়ী, তার চেয়েও বেশি দায়ী নিউরোকেমিক্যাল প্রক্রিয়া।
অনেকসময় সাধারণ ‘আই কন্টাক্ট’ও প্রেমে পড়ার কারণ হয়ে উঠতে পারে। কেননা, চোখই মানুষের প্রতিচ্ছবি। বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনও মানুষের চোখ দেখেই তার চরিত্র সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। চোখের নিজস্ব পরিভাষা অর্থাৎ, ‘এক্সপ্রেশন’ও আছে। যা অজান্তেই আমাদের অবচেতন পড়ে ফেলতে পারে। সেই মুহূর্ত থেকেই মনে সৃষ্টি হয় নানা অনুভূতি।
কখনও কী এমনটা মনে হয়েছে যে, কাউকে দেখলে আপনার মুখ-গলা শুকিয়ে যাচ্ছে,হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাচ্ছে? এর পেছনেও রয়েছে রসায়ন। কাউকে পছন্দ হলে আমাদের অবচেতন মন তা সবসময় বুঝতে পারে।
এই কারণে পছন্দের ব্যক্তি সামনে এলেই শরীরে উত্তেজনা সৃষ্টিকারী হরমোন অ্যাড্রিনালিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া, প্রভাবিত হয় সেরোটোনিন, ডোপামিনের মাত্রা। বিজ্ঞানীদের মতে, এই প্রভাব অনেকটাই মাদক সেবনের পরে মানবশরীরে তৈরি হওয়া প্রতিক্রিয়ার মতো। এটিই প্রেমে পড়ার লক্ষণ। সুতরাং বলা যায়, প্রেম অনেকটা নেশার মতো।
এনএম